October 9, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Sunday, December 19th, 2021, 1:28 pm

বিয়ানীবাজারের ইউপি ভোটে নৌকাকে ‘চোখ রাঙাচ্ছে’ স্বতন্ত্র প্রার্থীরা

ফাইল ছবি

জেলা প্রতিনিধি, সিলেট:
চতুর্থ ধাপের ইউপি নির্বাচনে আগামী ২৬শে ডিসেম্বর সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন অনুষ্টিত হবে। আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে বিরামহীন প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থীরা। এখানকারকার সবক’টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সদস্য পদে ৪৭১জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। চেয়ারম্যান পদে মোট ৪৭জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতায় রয়েছেন। তবে বিয়ানীবাজারের ইউপি নির্বাচনে চোখ রাঙাচ্ছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। দু’টি ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা নৌকাকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়লেও অন্যক’টিতে বিরোধীমতের প্রার্থীদের কাছে রীতিমত অসহায় সরকারদলীয় প্রার্থী।

সময় গড়ানোর সাথে ইউপি নির্বাচনকে ঘিরে বিয়ানীবাজার উপজেলায় এখন উত্তাপ-উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। গ্রামে-গ্রামে বইছে নির্বাচনী হাওয়া । এখানকার আলীনগর ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী আহবাবুর রহমান খান শিশুকে বেকায়দায় ফেলেছেন বর্তমান চেয়ারম্যান মামুনুর রশীদ (বিএনপি)। ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী মামুন টানা দুই বারের চেয়ারম্যান।

চারখাইয়ে নৌকার প্রার্থী মাহমুদ আলীও কঠিন পরীক্ষায়। বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের উপজেলা পর্যায়ের নেতা হোসেন মুরাদ চৌধুরী স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েও মাঠ কাপাচ্ছেন। আলীনগরের মত চারখাইয়েও কঠিন পরিস্থিতির মুখে নৌকার প্রার্থী।

শেওলায় ভোটাররা মুখ না খুললেও নৌকার প্রার্থী জহুর উদ্দিনের সাথে মূল লড়াইয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী আখতার হোসেন খান জাহেদ (বিএনপি)। এই ইউনিয়নে জেতার পরিসংখ্যানে কেউ এগিয়ে নেই। সমানে-সমানে টক্কর হবে জহুর-আখতারের মধ্যে।

দুবাগে নৌকার প্রার্থী ও টানা দুইবারের চেয়ারম্যান আব্দুস সালামের ঘুম নেই। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্রচারণা ও কৌশলে স্বস্থিতে নেই তিনি। তার সাথে স্বতন্ত্র প্রার্থী মোস্তাক আহমদ (জমিয়ত), কমর উদ্দিন চৌধুরী (আল-ইসলাহ) ও জালাল আহমদ শক্ত প্রতিদ্বন্ধিতায়। শতকরা হিসেবে দুবাগে প্রার্থীরা ২৫ভাগ করে সমানে-সমান।

কুড়ারবাজারে এখনো এগিয়ে বর্তমান চেয়ারম্যান আবু তাহের (বিএনপি-স্বতন্ত্র)। তার সাথে প্রতিদ্বন্ধিতা করা তুতিউর রহমান তোতা (আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী), জাকারিয়া আহমদ (স্বতন্ত্র), নজমুল ইসলাম (স্বতন্ত্র) ও বাহার উদ্দিন (নৌকা) ও ঘর গোছাচ্ছেন। তবে সার্বিক মিলিয়ে কুড়ারবাজারে নৌকার অবস্থা সুবিধাজনক নয়।

মাথিউরায় নৌকার প্রার্থী আমান উদ্দিনের সাথে জোরালো প্রতিদ্বন্ধিতায় আছেন কছির আলী আব্দুর রব (বিএনপি-স্বতন্ত্র)। তাদের মধ্যে নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়া নিয়ে কঠিন হিসাব চলছে। ভোটাররাও দু’জনকে নিয়ে মুখ খুলছেন না।

তিলপাড়ায় নৌকার প্রার্থী এমাদ উদ্দিন প্রতিদ্বন্ধিতায় থাকলেও সুবিধাজনক অবস্থায় নেই। এই ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহবুবুর রহমান (বিএনপি) বেশ ফুরফুরে অবস্থায়। আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী বিবেকানন্দ দাস পিছিয়ে থাকলেও নৌকাকে ছেড়ে দেবেন না। এখানকার নৌকার প্রার্থীকে ভিতরে-ভিতরে অসহযোগীতা করছেন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা। স্থানীয় আওয়ামীলীগের কার্যকরী কমিটির অন্তত: ৩০জন নেতা নৌকার বিপক্ষে বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষ নিয়েছেন বলে সূত্র জানায়।

মুড়িয়ায় নৌকার প্রার্থী হুমায়ুন কবিরের জন্য চ্যালেঞ্জ স্বতন্ত্র প্রার্থী রুহুল ইসলাম ও ফরিদ আল মামুন (জামায়াত)।

মুল্লাপুরে নৌকার প্রার্থী শামীম আহমদের সাথে ঠেক্কায় পিছিয়ে নেই বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুল মন্নান (বিএনপি-স্বতন্ত্র) ও আব্দুল করিম। তিন প্রার্থীই ভোটারদের বিবেচনায়।

লাউতায় নৌকার প্রার্থী এম এ জলিল। তিনিও নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান গৌছ উদ্দিন (আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী দেলোওয়ার হোসেন (জামায়াত)। আসন্ন নির্বাচনে কঠিন লড়াইয়ে অবতীর্ণ হচ্ছেন নৌকার প্রার্থী এম এ জলিল।

বিয়ানীবাজারে নৌকার প্রার্থীদের এমন অবস্থার কারণ নিয়ে রাজনীতি বিশ্লেষক ও জাসদ নেতা মজির উদ্দিন আনসার বলেন, সরকার দলীয় প্রার্থীদের এমন অবস্থার জন্য আওয়ামীলীগ দায়ী। দলীয় কোন্দল, প্রার্থী বাছাইয়ে উদাসীনতা এবং অন্যান্য কারণে নৌকার প্রার্থীদের কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হচ্ছে।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) বিয়ানীবাজারের সভাপতি এডভোকেট আমান উদ্দিন বলেন, লোকমুখে নৌকার প্রার্থীদের নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়া নিয়ে শঙ্কার খবর পাচ্ছি। তিনি বলেন, নিরপেক্ষ নির্বাচন হওয়া দরকার এবং সুষ্টু নির্বাচনে যে কেউ জয়লাভ করুক, এটা সবার চাওয়া।