October 12, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Sunday, September 24th, 2023, 8:02 pm

ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙন ঝুঁকিতে গুরুত্বপূর্ণ পাগলার বাজার

কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে পাগলার বাজার। জেলার নাগেশ্বরী উপজেলার কচাকাটা থানার দুর্গম নারায়ণপুর ইউনিয়নের পদ্মারচর গ্রামে অবস্থিত এই জমজামট বাজারটি।

চলতি বছরের বন্যায় ব্রহ্মপুত্র নদের করাল গ্রাসে বাজারের দেড়শটি দোকানের মধ্যে ২২টি দোকান নদীগর্ভে চলে গেছে।

ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে- পদ্মারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পদ্মারচর আবাসন প্রকল্প, আবাদি জমি ও শতাধিক বসতবাড়ি।

বাজারটি রক্ষায় এলাকাবাসী, ক্রেতা-বিক্রেতা ও ব্যবসায়ীগণ মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে।

সরজমিনে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের নৌঘাট থেকে প্রায় দেড় ঘণ্টা শ্যালো নৌকায় পৌঁছানো হয় পাগলার বাজার নামক স্থানে।

সেখানে গিয়ে দেখা যায় বাজারটির ভাঙন কবলিত দুর্দশা। বাজারের উত্তর-পশ্চিম ঘেঁষে ২২টি দোকানের স্থানটি নদীতে ধ্বসে পরেছে। ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে আরও বেশ কয়েকটি দোকান।

বাজারের ইজারাদার শাহাজুল হক জানান, ২০১২ সালে বাজারটি স্থাপন করা হয়। প্রথমে এমপির বাজার নামকরণ করা হলেও একজন অচেনা পাগলের আবির্ভাবের পর এর নাম হয়ে যায় পাগলার বাজার। এই বাজারের আশে পাশে কোন বাজার নেই। উত্তরে ৫ কিলোমিটার নৌপথে রয়েছে ভারতীয় সীমান্ত ঘেঁষা নারায়ণপুর বাজার।

তিনি আরও জানান, দক্ষিণে রয়েছে ১০ কিলোমিটার নৌপথে যাত্রাপুর বাজার। এখানকার ১০টি চরের ২০ হাজার মানুষের কেনাকাটার জন্য রয়েছে একমাত্র এই বাজারটি। এটি ভেঙে গেলে বাজারের দেড়শ ব্যবসায়ী পরে যাবে চরম বিপদে। দুর্গম এলাকা জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড এখানে কোন কাজ করতে চায় না। আমরা বাজার, স্কুল ও আবাসনটি রক্ষায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য মানববন্ধন ও সমাবেশ আয়োজন করেছি।

বাজারের ব্যবসায়ী মানিক হোসেন ডাক্তার, জাহেদুল ইসলাম ও রফিকুল মাস্টার জানান, আমাদের পদ্মারচরটি প্রায় ৭০ বছরের পুরনো চর। এখানে প্রায় ২ হাজার ৬০০ পরিবারের বসবাস। এছাড়াও পাশেই রয়েছে ঝুনকারচর, দেবারী খোলা, পয়াস্তি ঝুনকা, অস্টআশির চর, রলাকাটা, বারোবিশ, নারায়ণপুর, মোল্লাপাড়া, ব্যাপারীর চর ও শান্তিয়ার চর। এসব চরের প্রায় ২০ হাজার মানুষ ক্রয়-বিক্রয় করে এই বাজার থেকে। এই বাজার ভেঙে গেলে ব্যবসায়ীসহ ক্রেতা-বিক্রেতা ভীষণ বিপদে পরে যাবে।

এই বাজারের অরছব আলী, দুলাল, বুলু ও আলী হোসেন জানান, কুড়িগ্রাম জেলায় ১৬টি নদ-নদীর মধ্যে রয়েছে প্রায় সাড়ে ৪ শতাধিক চর ও দ্বীপচর। চরবাসীদের জীবন-জীবিকার সাথে হাট-বাজারগুলোর অস্তিত্ব জড়িয়ে আছে ওতপ্রোতভাবে। জেলার দুর্গম ব্রহ্মপুত্র নদের ভেতরে স্থানীয়দের উদ্যোগে গড়ে ওঠা পাগলার বাজারটি আশপাশের ১০টি চরের মানুষের একমাত্র ক্রয়-বিক্রয় ও সময় কাটানোর জায়গা। বিকাল হলেই লোকজন এক কাপ চা আর গল্প করার জন্য এখানে ছুটে আসেন। এছাড়াও সপ্তাহে হাট বসে শুক্রবার ও সোমবার। হাটটি বিলিন হলে বিপদে পড়বে ২০ হাজার মানুষ।

এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, আমরা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও প্রতিষ্ঠান রক্ষায় সর্বোচ্চ প্রতিরোধমুলক ব্যবস্থা নেয়ার চেষ্টা করি। পাগলার বাজারে ভাঙনের কথা আমরা জানতে পারলাম। বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছি এবং ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

—-ইউএনবি