অনলাইন ডেস্ক :
ভারতের হরিয়ানায় একটি ধর্মীয় শোভাযাত্রাকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের সংঘর্ষে দুই নিরাপত্তারক্ষীসহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়েছেন অন্তত ৪৫ জন। হরিয়ানার গুরুগ্রাম সংলগ্ন নূহ এলাকায় গত সোমবার এই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয় বলে এনডিটিভি জানিয়েছে। পুলিশ বলছে, নূহ এলাকার খেদলা মড এলাকায় ওই শোভাযাত্রায় একদল জনতা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। এর জেরেই পাথর নিক্ষেপ ও গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। সেসময় গুলিতে ওই দুই নিরাপত্তারক্ষী নিহত হন। এরপর রাতভর চলা সহিংসতার মধ্যে আরও দুজনের প্রাণ যায়। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি) ‘ব্রিজ ম-ল জলভিষেক যাত্রা’ নামে ওই শোভাযাত্রা আয়োজন করলে একদল যুবক গুরুগ্রাম-আলওয়ার জাতীয় মহাসড়কের কাছে তাদের বাধা দেয়। এর জেরে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়লে সরকারি ও ব্যক্তিগত যানবাহন লক্ষ করে আক্রমণ চালায় উচ্ছৃঙ্খল জনতা।
এনডিটিভি জানিয়েছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বজরঙ দল কর্মীর এক ভিডিও প্রকাশের জেরে এই সংঘাতের সূত্রপাত হয়। কয়েকদিন আগে বজরঙ দল সদস্য মনু মানেশর ও তার সহযোগীরা ওই ভিডিও পোস্ট করেছিল। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের শোভাযাত্রায় বাধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে সোমবার সন্ধ্যায় গুরুগ্রাম-সোহনা মহাসড়কে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। বেশকিছু গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় এবং পুলিশের দিকে ঢিল ছোঁড়া হয়। এনডিটিভি জানিয়েছে, ওই শোভাযাত্রায় অংশ নিতে নূহ এলাকায় প্রায় আড়াই হাজার মানুষ সমবেত হয়েছিল। কিন্তু সহিংসতার সূত্রপাত হলে তারা একটি মন্দিরে আশ্রয় নেয় এবং সন্ধ্যায় পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে। পালওয়াল ও গুরুগ্রামের বিভিন্ন এলাকা থেকেও ঢিল ছোড়াছুড়ি ও অগ্নিসংযোগের খবর এসেছে। সহিংসতা ঠেকাতে নূহ জেলায় কারফিউ জারি করেছে প্রশাসন।
গুরুগ্রাম, পালওয়াল এবং ফরিদাবাদ এলাকায় বড় জনসমাগম নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সাম্প্রদায়িক এই সহিংসতার ঘটনায় পুলিশ ২০টির মত মামলা দায়ের করেছে। পাশাপাশি অনেককে আটকও করেছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্তে সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করছে পুলিশ। তীব্র সাম্প্রদায়িক সংঘাত এড়াতে এবং গুজব প্রতিরোধে নূহ এলাকায় বুধবার পর্যন্ত ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। গুরুগ্রাম ও ফরিদাবাদ জেলার স্কুল-কলেজসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো মঙ্গলবার (১ লা আগষ্ট) পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয়েছে। হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খাট্টারসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা জনগণকে শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আজকের এই ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক। রাজ্যে শান্তি বজায় রাখতে আমি সকলের প্রতি অনুরোধ জানাই। অপরাধীরা কোনোভাবেই ছাড় পাবে না। জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” সংঘাতপূর্ণ জেলাগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে পুলিশ। ওই এলাকায় শান্তি ফেরাতে দুই সম্প্রদায়ের নেতাদের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে পুলিশের তরফ থেকে। চলমান অস্থিরতার মধ্যে দুই সম্প্রদায়ের সদস্যদের নিয়ে মঙ্গলবার (১ লা আগষ্ট) একটি বৈঠকও হওয়ার কথা রয়েছে।
আরও পড়ুন
গাজায় গত একদিনে নিহত ৫২
তীব্রতর হচ্ছে ইসরায়েলি হামলায় লেবাননে যুদ্ধ
হারিকেন হেলেনে যুক্তরাষ্ট্রে অন্তত ৯০ জনের মৃত্যু