জেলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে আগামীকাল থেকে শুরু হচ্ছে ইলিশ শিকার। ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসম ৪ অক্টোবর থেকে আজ ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশ শিকার বন্ধ থাকার পর রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে ইলিশ শিকার শুরু হবে। তাই নদীতে যাওয়ার জন্য জেলার প্রায় ৩ লাখ জেলে শেষ সময়ে জাল বুনন, ট্রলার মেরামত ও পুরাতন জাল রিপু করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। দীর্ঘ ২২ দিনের অলস সময় পার শেষে নিষেধাজ্ঞার শেষ হওয়ায় আনন্দিত জেলে পল্লীর জেলেরা । যদিও ইলিশের মৌসুম শেষ হয়েছে। তারপরেও গত কয়েকবছর শীতের সময় প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ায় এবার আগ্রহ অনেক বেড়ে গেছে জেলেদের।
অন্যদিকে জেলার ৭ উপজেলায় মা ইলিশ শিকার নিষেধাজ্ঞার ২২ দিন ১ লাখ ৩২ হাজার জেলে পরিবারের জন্য ২০ কেজি করে মোট ২ হাজার ৬৪০ মেট্রিকটন চাল ভিজিএফ,র বিতরণ করা হয়েছে। যার ফলে অধিকাংশ জেলেই আইন মান্য করে মাছ ধরা থেকে বিরত রেখেছে নিজেদের। তারপরেও যারা আইন ভঙ্গ করছে স্থানীয় প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে ।
ভোলা সদরের ইলিশা ফেরিঘাট , তুলাতলী, ভোলার খাল, ইলিশা বিশ্বরোডসহ মেঘনা পাড়ের বেশকিছু এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, জেলেদের ব্যস্ততা চোখে পড়ার মতো। নদীর কুল ঘেষে বাঁধের উপর রাখা হয়েছে সারি সারি নৌকা ও ইঞ্জিন চালিত ট্রলার। কেউ পুরনো জালকে নতুন করে রিপু করছে। কেউবা নতুন জাল বুনতে ব্যস্ত। আবার কেউ নৌকা-ট্রলার মেরামত করছে। কেউ নৌ-যানের নিচের অংশে পুডিং ও আলকাতরা লাগাচ্ছেন। সব মিলিয়ে একটা কাজের সময় বিরাজ করছে পল্লীগুলোতে। শিশু থেকে শুরু করে কেউ বসে নেই। সম্মিলিতভাবে পরিবারের সবাই কাজে হাত লাগাচ্ছে। এসব পরিবারগুলো স্বপ্ন দেখছে ইলিশের প্রাচুর্যতায় তাদের অভাব দূর হবে।
জেলে রহিম ও রুবেল জানায়, এখন নদীতে মাছ ধরা বন্ধ, নৌকা-ট্রলার নিয়ে নদীতে যাওয়া হচ্ছেনা। ধার দেনা করে দিন পার করছি। সামনে আসছে মাছ ধরার সময়, তাই নৌকা মেরামত করছি। আগে থেকে নৌকা তৈরী করতে না পারলে তখন সময় পাবো না। মাছ শিকারে যাওয়ার জন্য নৌকা মেরামত ও রং দেয়ার কাজ নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছিলেন জেলে মনির ও মিজান। তারা জানান, এ বছর ভরা মৌসুমে তেমন মাছ ধরা পড়েনি। আশা করি নিষেধাজ্ঞার পর ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়বে। তখন মাছ ধরেই ঋণ পরিশোধ করতে পারবো। কাল থেকে মাছ শিকারে সব জেলে নদীতে নেমে পড়বেন বলে জানান তারা।
জেলা ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী জেলে সমিতির সভাপতি মো: নুরুল ইসলাম মেম্বার জানান, সরকারের মা ইলিশ রক্ষা কার্যক্রমের ফলে নদীতে ইলিশের উৎপাদন অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই এবছর অধিকাংশ জেলেই আইন মান্য করেছে। বর্তমানে জেলেদের নৌকা-ট্রলার-জালসহ অনান্য সরাঞ্জম ইলিশ শিকারের জন্য প্রস্তুতির শেষ পর্যায়ে। আশা করছেন সামনের দিনলোতে ব্যাপক ইলিশ পাবেন।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম আজাহারুল ইসলাম বলেন, আগামীকাল থেকে ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা উঠে যাচ্ছে। আশা করা হচ্ছে এবছর নির্বিঘ্নে মা ইলিশ তাদের ডিম ছাড়তে সক্ষম হয়েছে। সরকারের ব্যাপক প্রচার প্রচারণার ফলে অধিকাংশ জেলেই ইলিশ শিকার থেকে বিরত ছিলো। তারপরেও অসাধু যারা আইন ভঙ্গ করছে তাদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
—বাসস
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি