সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরে ভ্রমণে গিয়ে বন্যা পরিস্থিতির কারণে জেলা শহরের একটি রেস্তোরাঁয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ২১ জন শিক্ষার্থী আটকা পড়েছেন।
তিনদিন আগে তারা টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণে যান এবং বৃহস্পতিবার সুনামগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হলে তারা ‘পানসী রেস্টুরেন্ট’ নামে জেলা শহরের একটি রেস্তোরাঁয় আশ্রয় নেন।
আটকা পড়া ২১ শিক্ষার্থীর মধ্যে ১৯ জন বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের এবং বাকি দুজন অন্য বিভাগের শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে সাতজন নারী শিক্ষার্থীও রয়েছেন।
শোয়েব আহমেদ নামে বন্যায় আটকা পড়া এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমাদের খাদ্য ও খাবার পানির ভীষণ প্রয়োজন এবং এখানে কোনো টয়লেটের ব্যবস্থা নেই। আমাদের অধিকাংশের ফোনের চার্জ ফুরিয়ে গেছে এবং দুর্বল নেটওয়ার্কের কারণে সঠিকভাবে কাজ করছে না।’
দ্রুত উদ্ধারের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, তারা খুবই খারাপ ও অনিশ্চিত অবস্থায় রয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, ‘আমি স্থানীয় প্রশাসনের বিভিন্ন মহলের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। এ ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতা চেয়েছি। প্রয়োজন হলে প্রশিক্ষিত উদ্ধারকারী দল পাঠিয়ে শিক্ষার্থীদের উদ্ধারের জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘আমি আটকে পড়া শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা এখনো ভালো ও সুস্থ আছে। আমি এসপি, ডিসির সঙ্গে কথা বলেছি এবং তাদের জরুরি সহায়তা, খাবার ও উদ্ধারের জন্য বলেছি।’
এদিকে শুক্রবার সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। নতুন করে প্লাবিত হয়েছে আরও অনেক এলাকা। পূর্ব থেকেই প্লাবিত হওয়া এলাকায় পানি আরও বাড়ছে।
শুক্রবার বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, সিলেট, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোণা জেলায় পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে।
এমন পরিস্থিতিতে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) সকল ক্লাস-পরীক্ষা আগামী ২৫ জুন পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এছাড়া বন্যার কারণে সমগ্র সিলেটে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। কুমারগাঁও ১৩২/৩৩ কেভি গ্রিড উপকেন্দ্র থেকে সারা সিলেটে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়ে থাকে।
এ উপকেন্দ্রের এক্সেন প্রকৌশলী সুরঞ্জিত সিং বলেন, ইতোমধ্যে উপকেন্দ্রের সুইচ ইয়ার্ডে (কন্ট্রোল রুমের বাইরের অংশ) বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। যে হারে বৃষ্টি হচ্ছে এটা চলমান থাকলে কন্ট্রোল রুমে পানি প্রবেশ করতে বেশি সময় লাগবে না। যদি কন্ট্রোল রুমে পানি প্রবেশ করে তাহলে এই গ্রিড উপকেন্দ্র বন্ধ করে দিতে হবে। এই গ্রিড বন্ধ করলে সারা সিলেটের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাবে।
এর আগে গত মাসের বন্যায় দক্ষিণ সুরমা, উপশহরসহ কয়েকটি এলাকার বিদ্যুতের সাব স্টেশন পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়।
—ইউএনবি
আরও পড়ুন
গুলিস্তানে বিস্ফোরণ: চিকিৎসাধীন আরও একজনের মৃত্যু, সংখ্যা বেড়ে ২৫
এক হালি লেবুর দাম ১০০ টাকা!
সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণে আর্থিক তহবিলে টাকা জমলেও প্রদানের উদ্যোগ নেই