অনলাইন ডেস্ক :
গত ২৪ ঘণ্টায় সংঘর্ষ-বিধ্বস্ত মণিপুরে ৬ জন নিহত হয়েছেন। বিষ্ণুপুর-চুরাচাঁদপুর সীমান্ত এলাকায় গত শনিবার দিনব্যাপী সংঘর্ষে আহত হয়েছে ১৬ জন। সংঘর্ষের পর সেনাবাহিনীর চিরুনি অভিযানে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় গ্রেপ্তার হয়েছেন একজন। পুলিশ জানায়, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির পরিপ্রেক্ষিতে রোববার (৬ আগষ্ট) ইমফল পূর্ব এবং পশ্চিম জেলাগুলোতে কারফিউ শিথিল করা হবে না। শনিবার ভয়ংকর এক দিন পার করেছে মণিপুর। এদিন বিষ্ণুপুর-চুরাচাঁদপুর সীমান্তের বেশ কয়েকটি জায়গায় দিনব্যাপী মর্টার এবং গ্রেনেড হামলার খবর পাওয়া গেছে। দুই পক্ষের মধ্যে গুলি বিনিময়ও হয়। গত শনিবার ভোরে বিষ্ণুপুর জেলার কোয়াকতা এলাকার একটি গ্রামে হামলায় বাবা-ছেলেসহ তিন নিরস্ত্র গ্রামবাসী নিহত হয়। আতঙ্কে নিহতরা তাদের পরিবার নিয়ে আশ্রয় শিবিরে অবস্থান করছিলেন।
শুক্রবার গ্রাম পাহারা দিতে ফিরে এসেছিলেন তারা। নিরাপত্তা বাহিনীর সূত্র জানায়, দুজন পুরুষকে বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়েছিল। এর আগে তাদের শরীরের বিভিন্ন অংশে খুব কাছ থেকে গুলি করা হয়। এতে সকাল থেকেই উত্তাল হয়ে ওঠে গোটা এলাকা। কোয়াকতার পাশের দুই গ্রাম ফুজাং এবং সোংডোতে মর্টার শেল এবং গ্রেনেড ছোড়ে একদল জনতা। কয়েকটি গ্রেনেড চুরাচাঁদপুর জেলায় পড়লে দুজন নিহত এবং কয়েকজন আহত হয়। বিষ্ণুপুর জেলার তেরখাংসাংবিতে হামলায় একজন নিহত হয়েছেন। এক পুলিশ কমান্ডোসহ বন্দুকের গুলিতে আহত হয়েছেন তিনজন। ইমফল পূর্ব জেলার সানসাবি এবং থামনাপোকপি গ্রামে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের গুলি করার খবরও পাওয়া গেছে। এ ঘটনা কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। অজ্ঞাতপরিচয় জনতা ইমফল পশ্চিম জেলার ল্যাংগোলে বাড়িঘরে আগুন দিয়েছে। এর পরপর হত্যাকান্ডের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ হয় ইমফলে।
মণিপুরের বিজেপি বিধায়ক রাজকুমার ইমো সিং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের জামাতাও। কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন তিনি। তার দাবি, বিষ্ণুপুর জেলায় তিনজন নিহত হওয়া হামলায় বড় ধরনের নিরাপত্তা ত্রুটি ছিল। দায়িত্বে অবহেলার দায়ে আধাসামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন রাজকুমার। মণিপুর পুলিশ শুক্রবার জানায়, সংঘর্ষ-বিধ্বস্ত রাজ্যের ঝুঁকিপূর্ণ এবং প্রান্তিক এলাকায় অভিযান চালাচ্ছে যৌথ বাহিনী। বিভিন্ন জেলায় নতুন সহিংসতা শুরু হওয়ার পর সাতটি অবৈধ বাঙ্কার ধ্বংস করেছে তারা। তফসিলি উপজাতি (এসটি) মর্যাদা প্রশ্নে ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্যটির মেইতি ও কুকি সম্প্রদায়ের মধ্যে তিন মাসের বেশি সময় ধরে সংঘর্ষ চলছে। এতে কয়েকশ’ মানুষ নিহত হয়েছেন, বাস্তুচ্যুত হয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। সূত্র: এনডিটিভি
আরও পড়ুন
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
গাজায় গত একদিনে নিহত ৫২