October 18, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Sunday, March 3rd, 2024, 8:54 pm

মহাসড়কে যানবাহন চলাচলে গুনতে হবে টোল

নিজস্ব প্রতিবেদক:

মহাসড়কে যানবাহন চলাচলে গুনতে হবে টোল। মহাসড়কে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বর্তমানে দেশে চারটি অধিদপ্তর যানবাহন থেকে টোল আদায় করছে। এর সঙ্গে সংস্থাটি নতুন করে আরো সাত সড়ককে টোলের আওতায় নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সড়কগুলো হলো ঢাকা-রংপুর, ঢাকা-সিলেট, সিলেট-তামাবিল, ঢাকা-চট্টগ্রাম, ভাঙ্গা-বেনাপোল, ভাঙ্গা-বরিশাল ও ঢাকা বাইপাস। এর মধ্যে সবার আগে টোল আদায় করা শুরু হতে পারে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ এবং সওজ অধিদপ্তর সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বর্তমানে ঢাকা-সিলেট, সিলেট-তামাবিল ও ঢাকা বাইপাস মহাসড়কের উন্নয়নকাজ চলমান। কাজটি শেষ হলেই এ পথে চলাচল করা যানবাহন থেকে টোল আদায় শুরু হবে। ঢাকা-চট্টগ্রামে টোল আদায় শুরু হবে মহাসড়কটিকে এক্সপ্রেসওয়ে মানে উন্নীতের পর। একইভাবে চার লেনে উন্নীতের পর টোল আদায় শুরু হবে ভাঙ্গা-বেনাপোল ও ভাঙ্গা-বরিশাল মহাসড়কে। টোল আদায়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা সাত মহাসড়কই পড়েছে ‘গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়ক’ শ্রেণিতে। ২০১৪ সালের টোল নীতিমালা অনুযায়ী এসব সড়কে যানবাহনের ভিত্তি টোল কিলোমিটারপ্রতি ২ টাকা। বর্তমানে এ নীতিমালা সংশোধন করা হচ্ছে। সংশোধিত খসড়া নীতিমালা চূড়ান্ত অনুমোদন পেলে ভিত্তি টোলের সঙ্গে প্রতি বছর সমন্বয় করা হবে ভোক্তা মূল্য সূচক (পরিবহন)। অর্থাৎ ভোক্তা মূল্য সূচক বাড়লে প্রতি বছর টোলের হার বৃদ্ধি পাবে।

সূত্র জানায়, নীতিমালায় টোল আদায়ের জন্য যানবাহনের ১৩টি শ্রেণি নির্ধারণ করা হয়েছে। যানবাহনভেদে টোল হারে রয়েছে ভিন্নতা। সবচেয়ে বেশি টোল নির্ধারণ করা আছে ‘ট্রেইলার’ শ্রেণির মোটরযানের। আর সবচেয়ে কম টোল নির্ধারণ করা আছে রিকশা, ভ্যান, বাইসাইকেল, ঠেলাগাড়ির মতো যানবাহনের; যেগুলো মোটরচালিত নয়। নতুন সড়কগুলোর মধ্যে সবার আগে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে টোল আদায় শুরু হতে পারে। এরই মধ্যে মহাসড়কটির জয়দেবপুর-এলেঙ্গা অংশ চার লেনে উন্নীত করা হয়েছে। দুই পাশে রয়েছে দুটি আলাদা সার্ভিস লেন। এলেঙ্গা থেকে রংপুর পর্যন্ত মহাসড়কটি একইভাবে উন্নয়ন করা হচ্ছে। নির্ধারিত মেয়াদ অনুযায়ী মহাসড়কটির উন্নয়নকাজ শেষ হবে চলতি বছরের ডিসেম্বরে।

এলেঙ্গা-রংপুর অংশের কাজ সম্পন্নের পর পুরো ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে টোল আদায় শুরু করা হতে পারে। অন্যদিকে আলাদা সার্ভিস লেনসহ ঢাকা-সিলেট ও সিলেট-তামাবিল মহাসড়কও চার লেনে উন্নীত করা হচ্ছে। এর মধ্যে সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক ২০২৫ সালের জুনে ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ২০২৬ সালের ডিসেম্বরে সম্পন্ন করার জন্য নির্ধারিত আছে। সূত্র আরো জানায়, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্ব (পিপিপি) পদ্ধতিতে ঢাকা বাইপাস মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করা হচ্ছে। নির্মাণাধীন ৪৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে সড়কটি জয়দেবপুর থেকে শুরু হয়ে দেবগ্রাম, ভুলতা হয়ে নারায়ণগঞ্জের মদনপুর পর্যন্ত বিস্তৃত। চার লেনের এক্সপ্রেসওয়ে ও দুইপাশে ধীরগতির যান চলাচলের জন্য পৃথক লেন নির্মাণ করা হচ্ছে, যার কাজ চলতি বছরের জুনে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

পিপিপি চুক্তি অনুযায়ী, নির্মাণ-পরবর্তী ২৫ বছর সড়কটি থেকে টোল আদায় করবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তাছাড়া ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে যশোর হয়ে বেনাপোল এবং ভাঙ্গা থেকে বরিশাল হয়ে কুয়াকাটা পর্যন্ত সড়কটি পৃথক প্রকল্পের মাধ্যমে উন্নয়নের উদ্যোগ নিয়েছে সওজ অধিদপ্তর। চার লেনে উন্নীতের পর এ দুই সড়ক থেকেও টোল আদায় হবে। আর চার লেনের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক এক্সপ্রেসওয়ে মানে উন্নীতের পরিকল্পনা করছে সওজ অধিদপ্তর।

এ লক্ষ্যে বর্তমানে একটি সমীক্ষার কাজ চলমান, যা আগামী মার্চে সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে। সমীক্ষা শেষে দ্রুতই মহাসড়কটির উন্নয়নকাজ শুরু হতে পারে। এক্সপ্রেসওয়ে মানে উন্নীতের পর এ সড়ক থেকেও টোল আদায় শুরু হবে।

এদিকে বর্তমানে ৫৫ কিলোমিটার দীর্ঘ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহাসড়ক (ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে), ৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ হাটিকুমরুল-বনপাড়া মহাসড়ক, প্রায় ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ চট্টগ্রাম বন্দর সংযোগ সড়ক এবং ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের জগদীশপুর থেকে শেরপুর পর্যন্ত ৭৪ কিলোমিটার অংশে টোল আদায় করছে সওজ অধিদপ্তর। সর্বশেষ ২০২২-২৩ অর্থবছর এ চার মহাসড়ক থেকে টোল আদায় হয়েছে ২১৩ কোটি টাকা।

অন্যদিকে সাত মহাসড়কে টোল আদায়ের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে সওজ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মঈনুল হাসান জানান, সড়কগুলো থেকে এখনই টোল আদায় শুরু করা হচ্ছে না। আগে সড়কগুলোতে প্রয়োজনীয় সুবিধাগুলোর উন্নয়ন করা হবে। সড়কগুলোয় প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রিত হিসেবে গড়ে তোলা, সার্ভিস লেনের মতো বিকল্প সড়কের ব্যবস্থা রাখা, টোল প্লাজার মতো অবকাঠামো নির্মাণের পরই টোল আদায়ের কাজ শুরু করা হবে।