অনলাইন ডেস্ক :
চোটের কারণে ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলা হয়নি তাসকিন আহমেদের। দৃষ্টি সীমানায় আরেকটি বিশ্বকাপ। চোট মুক্ত থাকতে কি আসন্ন ম্যাচগুলোয় একটু গা বাঁচিয়ে খেলবেন গতিময় এই পেসার? চোটের জন্য আপাতত মাঠের বাইরে থাকা তাসকিন উড়িয়ে দিলেন সেই সম্ভাবনা। বললেন, নিবেদন নিয়ে কোনো আপস করবেন না, মাঠে নামলে বরাবরের মতোই উজাড় করে দেবেন নিজের পুরোটা। চট্টগ্রামে গত মার্চে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের পর থেকে শরীরের বাঁ পাশের চোটে মাঠের বাইরে তাসকিন। ওই চোটে আইরিশদের বিপক্ষে একমাত্র টেস্ট ও পরে সতর্কতার অংশ হিসেবে একই দলের বিপক্ষে ইংল্যান্ড সফরে রাখা হয়নি তাকে।
এক মাসের বেশি সময় বাইরে থেকে রোববার বোলিং শুরু করেছেন তিনি। আপাতত স্বাভাবিক সময়ের মতো পুরো রানআপ ও গতিতে বোলিং না করে চোটের ধকল কাটিয়ে উঠতে কিছুটা সময় নিচ্ছেন তিনি। মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের অ্যাকাডেমি মাঠে মঙ্গলবার বোলিং সেশনের পর সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আলাপে তিনি জানিয়েছেন, ধীরে ধীরে পূর্ণ ছন্দে ফেরার পরিকল্পনার কথা। “আল্লাহর রহমতে ফিটনেসের অবস্থা এখন ভালো। চারটা (বোলিং) সেশন করলাম। ওয়ার্কলোড ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। ফিটনেস সেশন, বোলিং সেশনগুলো ভালো যাচ্ছে। সামনে ওয়ার্কলোডের মাত্রা আরও বাড়তে থাকবে। এভাবে যেতে থাকলে সব ভালো হবে।” আগামী অক্টোবর-নভেম্বরে ভারতে বসবে বিশ্বকাপের ত্রয়োদশ আসর।
ক্রিকেটের বড় এই টুর্নামেন্টের আগে দলের সেরা পেসারকে নিয়ে কিছুটা সতর্ক বাংলাদেশ। চোট বা ফিটনেসের ক্ষেত্রে ঝুঁকি এড়াতে তাকে নেওয়া হয়নি আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সবশেষ ওয়ানডে সিরিজে। অবশ্য দলের পক্ষ থেকে সতর্কতার পথ ধরা হলেও ক্রিকেটার হিসেবে সেভাবে ভাবতে চান না তাসকিন। বরং যখনই খেলেন না কেন, ইনজুরির শঙ্কায় নিজেকে দমিয়ে না রেখে শতভাগ উজাড় করে দেওয়ার পক্ষে এই ফাস্ট বোলার। “একটা জিনিস হলো, গা বাঁচিয়ে খেলা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। বল হাতে নিয়ে খেলতে নামলে এটা মাথায় থাকে না যে কীভাবে নিরাপদে খেলা যায়।
তার ওপর আমি তো ফাস্ট বোলার। লাল-সবুজ জার্সি পরে খেলাটা অনেক গর্বের একটা ব্যাপার। শুধু এটা নয়, ক্রিকেট খেলাটাই আসলে। তো যখন খেলতে নামি, মাথায় এটা থাকে না যে সামনে বড় ইভেন্ট আছে না কী আছে। আল্লাহ্ যাতে সুস্থ রাখেন, এটাই সবসময় দোয়া করি।” ২০১৫ সালে নিজের প্রথম বিশ্বকাপে দলের সর্বোচ্চ ৯ উইকেট নেন তাসকিন। চোটের কারণে জায়গা পাননি পরের আসরের স্কোয়াডে। ইংল্যান্ডে হওয়া বিশ্বকাপ খেলতে না পারার আক্ষেপ থাকলেও, ওই ধাক্কা তাকে আরও পোক্ত করেছে জানালেন তারকা পেসার। “ইনজুরির কারণে দলের বাইরে থাকার স্বাদটা কখনও আনন্দদায়ক নয়। ক্রিকেটার হিসেবে খারাপ লাগে। ২০১৯ বিশ্বকাপে যখন বাদ পড়েছিলাম, ওই মুহূর্তটা খুব দুঃখজনক ছিল।
তবে এখন বুঝতে পারি, আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্যই করেন।” “বিশ্বকাপের পর নিজের ওয়ার্ক এথিকস, প্রক্রিয়া কিছুটা বদলেছি। যা ক্রিকেটার হিসেবে খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল আমার জন্য। এখন আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো প্রক্রিয়ায় আছি। একটা আত্মবিশ্বাস থাকে যে, আমি নিজের শতভাগ দিচ্ছি প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে। তাই ভালো কিছু হবে আশা করছি।” সব কিছু ঠিক থাকলে ভারত বিশ্বকাপে তাসকিনের কাঁধে থাকবে বাংলাদেশ দলের পেস বোলিং ইউনিটের গুরুদায়িত্ব। ভারতের উইকেট, কন্ডিশন সবসময়ই বাড়তি সুবিধা দেয় ব্যাটসম্যানদের। পাশাপাশি আইসিসি ইভেন্টের উইকেটে সচরাচর বোলারদের সাহায্য থাকে না তেমন। তাই বিশ্বকাপে নিজেদের কাজ সহজ হবে না জানেন তাসকিন।
সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ মাথায় রেখেই তা জয় করার জন্য নিজেদের প্রস্তুত করার কথা জানালেন তিনি। “প্রত্যেকটা ম্যাচের আগেই আসলে প্রস্তুতি নিতে হয়। নতুন দিন, নতুন ম্যাচ, নতুন প্রস্তুতি। আমরা তো উপমহাদেশেই খেলি। ভারতেরটা তুলনামূলক বেশি ভালো উইকেট হয়, ব্যাটিংয়ের জন্য। এক দিক দিয়ে ভালো, ওখানে ভালো করতে পারলে আত্মবিশ্বাস আরও জন্মাবে। আর হারানোর ভয়টা কম রেখে যদি এগোতে পারি, আমাদের জন্যই ভালো।” “এক-দুই দিন খারাপ দিন যেতে পারে যে কোনো বোলার বা ক্রিকেটারের। সেটা যাবেই। তবে আমার বিশ্বাস, আমরা আমাদের সেরা ছন্দের সর্বোচ্চটা বাস্তবায়ন করতে পারলে ওই কন্ডিশনেও ভালো করা সম্ভব। অবশ্যই চ্যালেঞ্জিং, তবে আমরা ওই চ্যালেঞ্জটা নেব ইনশাআল্লাহ্।”
আরও পড়ুন
কানপুর টেস্টে মুমিনুলের সেঞ্চুরি, বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৩৩ রান
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার বিয়য়ে যা বললেন তামিম
অক্টোবরে বাংলাদেশে সফরে আসছে দক্ষিণ আফ্রিকা