October 9, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Tuesday, November 23rd, 2021, 8:55 pm

মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ প্রকল্পের ব্যয় বাড়লো ১৫ হাজার ৮৭০ কোটি টাকা, সময় ৩ বছর

ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

মাতারবাড়ি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের ব্যয় বাড়লো ১৫ হাজার ৮৭০ কোটি টাকা। পাশাপাশি মেয়াদও বাড়ানো হয়েছে সাড়ে তিন বছর। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। মঙ্গলবার (২৩ নভেম্বর) শেরে বাংলানগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক সভা শেষে এই তথ্য জানান পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি অনলাইনের মাধ্যমে সভায় যোগ দেন। পরিকল্পনা কমিশনের শিল্প-শক্তি বিভাগের সদস্য (সচিব) শরিফা খান জানান, মাতারবাড়ি নতুন করে গভীর চ্যানেল তৈরি করা হবে। মূল ব্যয় হবে এই খাতেই। এর আগে ছিল ছোট পরিসর, এখন বড় পরিসরে হবে কাজটি। আমরা জানি গুলশানে হলি আর্টিজান হামলার পরে অনেক জাপানি তাদের নিজের দেশে চলে যায়। প্রকল্পে অনেক জাপানি নাগরিক কাজ করবেন তাদের জন্য একটা নিরাপত্তা বলয়ের আবাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। এই আবাসনের মধ্যে সব কিছু থাকবে। এসব কারণেই মূলত একনেক সভায় প্রকল্পের সময়-ব্যয় বৃদ্ধি করা হয়েছে। ‘মাতারবাড়ি ২দ্ধ৬০০ মে.ও. আলট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কোল ফায়ার্ড পাওয়ার প্রজেক্ট’ সংশোধিত প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রকল্পের উদ্দেশ্য হচ্ছে- দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়িতে ২দ্ধ৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার আলট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কোল ফায়ার্ড পাওয়ার প্লান্ট নির্মাণ, মাতারবাড়ি সমুদ্র বন্দর উন্নয়নে সহায়তা করা। এ ছাড়া ২০২৪ সালের মধ্যে মানসম্পন্ন ও নির্ভরযোগ্য বিদ্যুৎ সরবরাহ, এবং জ্বালানি সাশ্রয়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন করা। কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ি ও ধলঘাটা এলাকায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। মূল অনুমোদিত প্রকল্পটি জুলাই ২০১৪ হতে জুন ২০২৩ মেয়াদে বাস্তবায়ন করা হবে। প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৬ সারের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। মূল প্রকল্প ব্যয় ছিল ৩৫ হাজার ৯৮৪ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। এখন প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে ৫১ হাজার ৮৫৪ লাখ টাকা হয়েছে। ১ হাজার ৬০৮ দশমিক ৪৬ একর ভূমি অধিগ্রহণ, ১৪ দশমিক ৩ কিলোমিটার দীর্ঘ, ৩৫০ মিটার প্রস্থ ও ১৮ দশমিক ৫ মিটার গভীরতার চ্যানেল, সি-ওয়াল সহ আনুষঙ্গিক ফ্যাসিলিটিস নির্মাণ। এ ছাড়া পাওয়ার প্ল্যান্ট এরিয়া ও টাউনশিপের জন্য ভূমি উন্নয়ন, জেটি, কোল ইয়ার্ড ও চিমনি নির্মাণ, ১২’শ মেগাওয়াট ক্ষমতার আলট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল পাওয়ার প্লান্ট ও আনুষঙ্গিক ফ্যাসিলিটিজ নির্মাণ। প্রকল্পের আওতায় পল্লী বিদ্যুতায়নের আওতায় ২৫/৪১ এমভিএ ক্ষমতার ১৩২/৩৩ কেভি সঞ্চালন উপকেন্দ্র, ১৩২ কেভি সঞ্চালন লাইন, ১০ এমভিএ ক্ষমতার ৩৩/১১ কেভি বিতরণ উপকেন্দ্র নির্মাণ, ভূমি অধিগ্রহণের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনের পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হবে। এ ছাড়া প্রকল্পের আওতায় টাউনশিপ নির্মাণ করা হবে। অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় ২০২৫ সালের মধ্যে দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ৩০ হাজার মেগাওয়াটে উন্নতকরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে ২০২৪ সালের মধ্যে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট আলট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হবে। নানা কারণে প্রকল্প সংশোধন করা হয়। চ্যানেল, জেটি, ভূমি উন্নয়ন এবং পাওয়ার প্ল্যান্ট নির্মাণসহ অন্যান্য সিভিল ওয়ার্কস অঙ্গে ব্যয় বৃদ্ধি করা হবে। পরামর্শক সেবা অঙ্গে পরিমাণ ও ব্যয় বৃদ্ধি, ভ্যাট-আইটি ও আমদানি শুল্ক অঙ্গে ব্যয় বৃদ্ধি, পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণ কার্যক্রম অঙ্গে ব্যয় বৃদ্ধি করা হবে। পল্লী বিদ্যুতায়ন ও টাউনশিপ নির্মাণ অঙ্গে ব্যয়, আইডিসি ও কন্টিনজেনসি অঙ্গে ব্যয় হ্রাস এবং ডিটেইল ডিজাইন অনুযায়ী কাজের পরিধি বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রকল্পের বাস্তবায়ন মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে।
মাতারবাড়ী কর্তৃপক্ষ গঠনের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর: এদিকে মাতারবাড়ী ১২শ মেগাওয়াট আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কোল ফায়ার্ড পাওয়ার প্রজেক্টকে কেন্দ্র করে একটি কর্তৃপক্ষ গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, মাতারবাড়ী ও সোনাদিয়া পর্যটনকেন্দ্র পরিচালনার জন্য একটি আলাদা অথরিটি করতে হবে। যাতে সব সংস্থা যার যার মতো করে কাজ করতে পারে। এতে বাধা নেই। তবে সবগুলো সংস্থাকে তদারকির জন্য কর্তৃপক্ষ প্রয়োজন। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে এ নির্দেশ দেন তিনি। বৈঠক শেষে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম। তিনি জানান, মাতারবাড়ী আল্ট্র সুপার ক্রিটিক্যাল কোল ফায়ার্ড বিদ্যুৎ প্রকল্পের সংশোধনী প্রস্তাব অনুমোদন দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী এমন নির্দেশ দিয়েছেন। মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্র এলাকায় গভীর সমুদ্রবন্দরসহ ৩৭টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান জানান, হাওর অঞ্চলে এলিভেটেড রাস্তা করতে গিয়ে এলজিইডি এবং সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের মধ্যে সমন্বয় করে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।