নিজস্ব প্রতিবেদক:
টেস্ট ক্রিকেট থেকে মাহমুদউল্লাহর অবসর এখন যেন পরিণত হয়েছে রহস্যময় এক অধ্যায়ে, যেটির জট খুলছে না কোনোভাবেই। এটি নিয়ে ধোঁয়াশা আরও গাঢ় হয়েছে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসানের নতুন বক্তব্যের পর। তিনি বলছেন, মাহমুদউল্লাহর টেস্ট অবসরের ব্যাপারটি এখনও ‘পেন্ডিং’ আছে। গত জুলাইয়ে জিম্বাবুয়ে সফর দিয়ে প্রায় দেড় বছর পর টেস্ট দলে ফেরেন মাহমুদউল্লাহ। ফেরার ম্যাচে দলের চরম বিপর্যয়ে নেমে ১৫০ রানের অসাধারণ এক ইনিংস উপহার দেন হারারে টেস্টে। ওই ম্যাচের মধ্যপথেই গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে, টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় বলে দিচ্ছেন তিনি। পরে বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করে, টেস্টের তৃতীয় দিন শেষে তিনি ড্রেসিং রুমে জানিয়ে দেন, এটিই তার শেষ টেস্ট। টেস্টের শেষ দিন মাঠে নামার সময় গোটা দল তাকে ‘গার্ড অব অনার’ দেয়। তাতে অবসরের ব্যাপারটি স্পষ্ট হয় অনেকটা। টিভি ধারাভাষ্যকাররাও বলেন, টেস্ট থেকে বিদায়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ৩৫ বছর বয়সী ক্রিকেটার। তবে ওই ম্যাচে ম্যান অব দা ম্যাচের পুরস্কার নেওয়ার পর অবসর নিয়ে কোনো কথা তিনি বলেননি। নিজে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও জানাননি এই সিদ্ধান্তের কথা। ওই ম্যাচের পর বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হকও ব্যাপারটি নিয়ে পরিষ্কার করে বলতে পারেননি, বরং বিভ্রান্তির অবকাশ রেখে দেন। পরে গত মাসে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের আগে টেস্টের অবসর নিয়ে জিজ্ঞেস করা হলে মাহমুদউল্লাহ বলেন, “এ বিষয়ে ইনশাল্লাহ আপনাদেরকে আমি অতি শিগগিরই বিস্তারিত জানাতে পারব।” মাহমুদউল্লাহ এখনও কিছুই জানাননি। বরং নতুন বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে বিসিবি সভাপতির কথায়। বুধবার বোর্ড সভা শেষে তিনি জানান, অবসরের প্রসঙ্গ নিয়ে মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে তিনি কথা বলবেন। “জানি নাৃ(মাহমুদউল্লাহর অবসর)ৃ একটার পর একটা সিরিজ চলছে। বায়ো-বাবল থাকে…বসতে হবে। সবার সামনে হয় না। এটা এখনও পেন্ডিং আছে।” জিম্বাবুয়ে সফরে যাওয়ার আগেও টেস্ট ক্রিকেট খেলতে মাহমুদউল্লাহ খুবই আগ্রহী ছিলেন বলে দাবি বিসিবি সভাপতির। হুট করে তার এই অবসর তাই মানতেই পারছেন না বাংলাদেশ ক্রিকেটের নিয়ন্তা সংস্থার প্রধান। “মাহমুদউল্লাহ কিন্তু টেস্ট দলে ছিল না। ওকে আমার বাসায় নিয়ে বসেছিলাম। জিজ্ঞেস করেছি বারবার, টেস্টে সে আগ্রহী কী না। আমার জানা মতে, সে সবচেয়ে উপযুক্ত টেস্টে, তিন সংস্করণের মধ্যে। সে আমাকে প্রতি বার বলেছে, খুব আগ্রহী টেস্ট খেলতে। সে লিখে দিয়েছে, টেস্ট খেলবে, যদি দলে নেওয়া হয়।” “এত কিছুর পর তাকে যখন পাঠানো হলো, সে কিন্তু লেট ইনক্লুশন ছিলৃ সে যখন ঘোষণাটা দিল (অবসরের) এটা একেবারে অপ্রত্যাশিত। এভাবে উচিত নয়। এভাবে আকস্মিক কোনো প্লেয়ার ঘোষণা দিতে পারে না।” এই ঘটনায় মাহমুদউল্লাহর পেশাদারীত্ব নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বিসিবি সভাপতি। “রিয়াদের এটা অপ্রত্যাশিত ছিল। এমন হওয়া উচিত না। একটা সিরিজ চলার মাঝখানে, কারও সঙ্গে কোনো আলোচনা না করে, এমন ঘোষণা কোনো পেশাদার খেলোয়াড় দিতে পারে না।” বুধবার ঘোষিত বিসিবির তিন ফরম্যাটের ভিন্ন চুক্তিতে অবশ্য মাহমুদউল্লাহকে রাখা হয়নি। আগের বছরও লাল বলের চুক্তির বাইরে রাখা হয়েছিল তাকে।
আরও পড়ুন
ঢাকা ছেড়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল
হাথুরুসিংহেকে অব্যাহতি ও তামিমকে দলে নিতে নোটিশ
দেখে নিন বিশ্বকাপের ১০ দলের স্কোয়াড