October 10, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Friday, July 29th, 2022, 9:23 pm

মায়ের পেট ফেটে সড়কে জন্ম নেওয়া নবজাতকটি শিশু নিবাসে

ফাইল ছবি

অনলাইন ডেস্ক :

ময়মনসিংহের ত্রিশালে ট্রাকচাপায় মায়ের পেট ফেটে সড়কে জন্ম নেওয়া নবজাতক ফাতেমাকে আজিমপুর ছোট মনি শিশু নিবাসে পাঠানো হয়েছে। শুক্রবার (২৯ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে গাড়িযোগে শিশুটিকে ঢাকা আজিমপুর শিশু নিবাসে পাঠানো হয়। এরআগে সকাল ১০টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ওয়ায়েজ উদ্দিন ফরাজি ওই শিশুকে জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. ওয়ালীউল্লাহ ও নবজাতকের দাদা মোস্তাফিজুর রহমান বাবলুর কাছে হস্তান্তর করেন। পরে ত্রিশাল সমাজসেবা কার্যালয়ের কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান, জেলা সরকারি শিশু পরিবার (বালিকা) খালাম্মা তাহমিনা আক্তার স্বপ্না, দাদা মোস্তাফিজুর রহমান বাবলু এবং পুলিশ অফিসারসহ দুজন পুলিশ সদস্য নবজাতককে নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হন। এ সময় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ওয়ায়েজ উদ্দিন ফরাজি, হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক (শিশু ও নবজাতক) ডা. নজরুল ইসলাম, জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. ওয়ালীউল্লাহ ও নবজাতকের দাদা মোস্তাফিজুর রহমান বাবলুসহ হাসপাতালের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. ওয়ালীউল্লাহ বলেন, সুবিধাবঞ্চিত শিশু হিসেবে শিশু কল্যাণ বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নবজাতককে ঢাকা আজিমপুর ছোট মনি শিশু নিবাসে পাঠানো হয়েছে। তবে, কারোর তত্ত্বাবধানে নয়, সম্পূর্ণ সরকারি তত্ত্বাবধানে নবজাতককে দেখাশোনা করা হবে। নবজাতক শিশুটির দাদা মোস্তাফিজুর রহমান বাবলু বলেন, পরিবারের সবার ইচ্ছে ছিল শিশুটির নাম ‘ফাতেমা’ রাখা হবে। জেলা প্রশাসক এবং কমিটির সদস্যরা সবাই মিলে ‘ফাতেমা’ নাম রাখায় আমরা খুশি। আমার সম্মতিতে প্রশাসন নাতি ফাতেমাকে আজিমপুর ছোট মনি শিশু নিবাসে পাঠিয়েছে। নাতিকে দেখার ইচ্ছে হলে আমি যে কোনো সময় তাকে দেখতে যেতে পারবো। তিনি আরও বলেন, প্রশাসন থেকে আমাকে আশ্বস্ত করা হয়েছে যে আমাদের থাকার জন্য দুই রুমবিশিষ্ট একটি হাফ বিল্ডিং এবং অপর দুই শিশু জান্নাত ও এবাদতের লেখাপড়াসহ সার্বিক সহায়তা করা হবে। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক (শিশু ও নবজাতক) ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, মেডিকেল বোর্ড গঠন করে আমরা ১২ দিন ওই নবজাতককে চিকিৎসা দিয়েছি। শিশুটির জন্ডিস ও শ্বাসকষ্ট পুরোপুরি ভালো হলেও ঘাড়ে এবং ডান হাতে ফ্র্যাকচার ভালো হতে দুই সপ্তাহের মতো সময় লাগতে পারে। তিনি বলেন, ১২ দিন ওই নবজাতককে চিকিৎসা দেওয়ায় তার প্রতি ভালোবাসা কাজ করছে। তার চলে যাওয়া আমাদের কাছে কষ্টের। তবে, সে ভালো থাকুক, এটাই আমাদের কাম্য। গত ১৬ জুলাই দুপুরের পরে উপজেলার রাইমনি গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম (৪০) তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রতœা আক্তারকে (৩০) আল্ট্রাসনোগ্রাফি করাতে ত্রিশালে আসেন। এ সময় তাদের সঙ্গে মেয়ে সানজিদা আক্তারও (৬) ছিল। তারা পৌর শহরের খান ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সামনে রাস্তা পারাপারের সময় ময়মনসিংহগামী একটি ট্রাক তাদের চাপা দেয়। এতে জাহাঙ্গীর আলম, স্ত্রী রতœা এবং মেয়ে তিনজনেরই মৃত্যু হয়। এ সময় ট্রাকচাপায় রতœার পেট ফেটে কন্যাশিশুটির জন্ম হয়। পরে ওই নবজাতক নগরীর লাবিব হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে গত ১৮ জুলাই রাতে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হলে তার জন্ডিস, ঘাড়ে এবং ডান হাতে ফ্র্যাকচার ধরা পড়ে। এ ঘটনার পরদিন ১৯ জুলাই পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট মেডিকেল বোর্ড গঠন করে শিশুটিকে হাসপাতালের এনআইসিইউ বিভাগে ভর্তি করা হয়।