অনলাইন ডেস্ক :
বিশ্বের অন্যান্য সিনে ইন্ডাস্ট্রির মতো এতোটা প্রভাবশালী না হলেও ভালো সিনেমা তৈরির তালিকায় উঠে আসে নলিউডের নামও। নাইজেরিয়ার চলচ্চিত্র শিল্প নলিউড নামে পরিচিত। নাইজেরিয়ার নলিউড সিনেমার ভক্ত শুধু আফ্রিকা জুড়েই নয়, ইউরোপ, অ্যামেরিকা, যেখানেই আফ্রিকা থেকে আগত অভিবাসীরা আছেন, সেখানেই নলিউড সিনেমার দর্শক পাওয়া যাবে। বিশ্বজুড়ে সেভাবে প্রভাব না থাকলেও নলিউড ইন্ডাস্ট্রি বছরে এক হাজার থেকে দুই হাজার সিনেমা তৈরি করে। অপরদিকে মনে রাখা দরকার, নাইজেরিয়ান ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির বাৎসরিক রোজগার মোট ২৫ কোটি ডলার, যা একটিমাত্র হ্যারি পটার কিংবা স্পাইডারম্যান সিনেমার বাজেটের কাছাকাছি। মুলত নলিউডে সিনেমা নির্মাণ অনেক বেশি খরচ সাপেক্ষ।
তবে এবার নলিউডে সিনেমা নির্মাণে তরুণদের স্বপ্ন পূরণে নির্মাতা জায়েওলা মুইওয়া ডোনাল্ড একটি চমৎকার বিকল্প খুঁজে পেয়েছেন। আর সেটি হলো মোবাইল শুট। মোবাইল দিয়েই সিনেমা বানানোর দিকে ঝুঁকছেন এই নির্মাতা। মুইওয়া বলেন, ‘‘আমি অনেককেই চিনি যারা এটি করতে চায়৷ কিন্তু তাদের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা নেই। এ কারণেই আমি মোবাইল ফোন দিয়ে সিনেমা বানাচ্ছি। আপনার পকেটে যা আছে আপনার লক্ষ্যে পৌঁছাতে যাত্রা শুরু করার জন্য তাই যথেষ্ট। বুঝলেন, সবকিছুই ঠিকমতো হচ্ছে।” তবে এই মোবাইল চলচ্চিত্র নির্মাতা জানান, মোবাইলে সিনেমা বানানো আসলে তার মূল লক্ষ্য ছিল না৷ তিনি বলেন, ‘‘লক্ষ্য ছিল বড় ক্যামেরা ব্যবহার করে বড় পর্দার জন্য কিছু বানানো।
মজার বিষয় হলো, ব্ল্যাকম্যাজিক দিয়ে আমি একটি শর্ট ফিল্ম বানিয়েছি। তারপর আমি এর প্রেমে পড়ে গেলাম এবং এ ধরনের কাজ আরো করতে চাইলাম। আর তাই ব্ল্যাকম্যাজিকটির মালিক আমার বন্ধুর কাছে গেলাম। সে বলল, ‘আমরা এখন ব্যস্ত।’ তারপর আমি ইউটিউবে বিভিন্ন ধরনের শর্ট ভিডিও দেখতে লাগলাম। দেখলাম, বেশিরভাগ লোকই তাদের মোবাইল ফোন দিয়ে এই ধরনের ভিডিও শ্যুট করছে।” এরপর মুইওয়া মোবাইল ফিল্মের উপর অনলাইনে বিভিন্ন ধরনের কোর্স করতে লাগলেন। এর ফলে মোবাইল ক্যামেরা দিয়ে কীভাবে ফিল্ম বানানো যায়, সেই বিষয়ে তার দক্ষতা বাড়তে লাগলো। মুইওয়া বলেন, ‘‘এটি এমন একটি বিষয় যা নলিউডের উপর প্রভাব ফেলেছে। এটি কাজের ধরন পরিবর্তন করে ফেলেছে। যাদের এমন সুযোগ ছিল না বা ট্রেনিং করে মোটা অংকের টাকা খরচ করে যাদের সিনেমা বানানোর সামর্থ্য ছিল না, তাদের জীবনে আমি প্রভাব ফেলতে পেরেছি। আমার একটি অনলাইন কোর্স আছে, যেখানে আপনি সিনেমাটোগ্রাফি এবং এডিটিং শিখতে পারবেন।
বর্তমানে নলিওডে মোবাইলে বানানো সিনেমার বিষয়টি অনেক গুরুত্বপুর্ণ হয়ে উঠেছে। আমি এমন ভøগার এবং ইউটিউবারদেরকে চিনি, যারা মোবাইল ফোন দিয়ে তাদের চ্যানেলের জন্য ভিডিও বানাচ্ছে। আপনার মনে হবে এগুলো ক্যামেরা, কিন্তু আসলে তারা যা ব্যবহার করছে তা হলো মোবাইল ফোন।” তিনি মনে করেন, ‘‘ভবিষ্যতে মোবাইল দিয়ে বানানো সিনেমা নিশ্চিতভাবেই নলিউডে প্রভাব ফেলবে৷ মোবাইল ফোন দিয়ে আপনি চমৎকার সব গল্প বলতে পারবেন। আসলে যন্ত্র গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়, বরং, যন্ত্রের পেছনে কে দাঁড়ানো সেটি গুরুত্বপূর্ণ।
হলিউডের পর্দায় আমরা যেসব ইমপ্রেসিভ ফিল্ম দেখি, সেগুলোর মতো বানানোর বাজেট হয়ত আপনার নেই, কিন্তু মোবাইল ফোন দিয়ে আপনি গল্পটি বলতে পারবেন এবং নলিউডে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারবেন।” এই মোবাইল চলচ্চিত্র নির্মাতা জানান, ‘‘এটি দিয়ে ৪কে কোয়ালিটির ভিডিও শ্যুট করা যায়। মোবাইল ক্যামেরা দিয়ে ভিডিও শ্যুট করলে তার মান ভালো হয় না, তেমনটা আমার মনে হয় না। কারণ, কিছুকিছু সাধারণ ক্যামেরায় আপনি ৪কে কোয়ালিটির ভিডিও শ্যুট করতে পারবেন না। কিন্তু কিছু মোবাইলে ৪কে থেকে ৮কে কোয়ালিটির ভিডিও শ্যুট করা যায়। অদূর ভবিষ্যতে আপনাদের অনেকেই হয়ত সাধারণ ক্যামেরা ব্যবহার করবেন না। ভিডিও শ্যুটের জন্য আপনি মোবাইল ফোন ব্যবহার করবেন।” ইতিমধ্যেই মোবাইল দিয়ে বানানো মুইওয়ার কন্টেন্ট আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে স্বীকৃতি পেয়েছে এবং দুই একটি পুরস্কারও জিতেছে।
আরও পড়ুন
তীব্রতর হচ্ছে ইসরায়েলি হামলায় লেবাননে যুদ্ধ
হারিকেন হেলেনে যুক্তরাষ্ট্রে অন্তত ৯০ জনের মৃত্যু
নেপালে ভয়াবহ বন্যা, ভূমিধসে মৃত্যু বেড়ে ১৯২