অনলাইন ডেস্ক :
যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি গ্যালন পেট্রোলের দাম গত শনিবার পাঁচ মার্কিন ডলারের বেশি ওঠে। ২০০৮ সালের পর এই প্রথম দেশটিতে পেট্রোলের দাম এতটা বাড়লো। যা দেশের মূল্যস্ফীতি পরিস্থিতিকে আরো নাজুক করে তুলবে। এএএ ডেটার দেয়া তথ্যানুযায়ী যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে গত শনিবার এক গ্যালন পেট্রোল ৫ দশমিক ০০৪ ডলারে বিক্রি হয়েছে। আগের দিনই এই দাম ছিল ৪ দশমিক ৯৮৬ ডলার। গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিদিন গড়ে ৯২ লাখ ব্যারেল পেট্রোলের চাহিদা ছিল বলে জানায় দেশটির এনার্জি ইনফরমেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন। পেট্রোলের এই উচ্চমূল্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং তার দল ডেমোক্রেটিক পার্টির জন্য নতুন মাথাব্যাথার কারণ হয়ে উঠেছে। আসছে নভেম্বরে দেশটিতে মধ্যবর্তী নির্বাচন। এর আগে পেট্রোলের দাম এবং মূল্যস্ফ্রীতি সহনীয় মাত্রায় নামিয়ে আনতে না পারলে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে বর্তমানে যে সামান্য ব্যবধানে ডেমোক্রেটিক পার্টি এগিয়ে আছে তা বজায় রাখা কঠিন হয়ে যাবে। পেট্রোলের দাম কমিয়ে রাখতে নানাভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছেন বাইডেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের তেলের ‘স্ট্রাটেজিক রিজার্ভস’ থেকে রেকর্ড পরিমাণ তেল বাজারে ছেড়েছেন। গ্রীষ্মকালীন তেল উৎপাদনের ক্ষেত্রে যেসব নিয়ম-বিধি রয়েছে সেগুলোতে বিভিন্ন ছাড় দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বৃহৎ আকারে তেল উৎপাদনকারী ওপেক ভুক্ত দেশগুলোকে উৎপাদন বাড়ানোর অনুরোধও করেছেন। শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয় বরং বিশ্বজুড়েই তেলের দাম বেড়েছে। যদিও ভারত সেই তালিকাতে নেই, বরং নরেন্দ্র মোদী সরকার তেলের দাম কমিয়েছেন। তেলের দাম বেড়ে যাওয়ার পেছনে এক নয় বরং একাধিক কারণ কাজ করছে। রাশিয়ার ইউক্রেইনে আগ্রাসনের জেরে পশ্চিমাবিশ্ব রাশিয়ার জ¦ালানির উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। অথচ, রাশিয়া বিশ্বের শীর্ষ তেল রপ্তানিকার দেশের অন্যতম। বিশ্ব বাজারে রাশিয়ার তেলের যোগান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই আতঙ্ক তৈরি হয়েছে, ফলে তেলের চাহিদা বেড়ে গেছে। এর সঙ্গে যোগ করেছে, তেল পরিশোধনের সক্ষমতা হ্রাস পাওয়া। যদি লম্বা সময় ধরে তেলের দাম গ্যালন প্রতি পাঁচ ডলারের উপরে থাকে তবে তেলের চাহিদা কমতে শুরু করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিবীদরা। জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবীদ রিড লানসন বলেন, ‘‘দাম যখন পাঁচ ডলার বা তার বেশি হয় তখন আমরা পেট্রোলের চাহিদা খুব ভারি মাত্রায় হ্রাস পেতে দেখি।” যুক্তরাষ্ট্রের জ¦ালানি মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মুল্যস্ফীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পেট্রোলের দাম এখনো ২০০৮ সালের চেয়ে প্রায় ৮ শতাংশ কম আছে। ২০০৮ সালের জুন মাসে পেট্রোলের দাম ৫ দশমিক ৪১ মার্কিন ডলারে উঠেছিল। যুক্তরাষ্ট্র গত চার দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি দেখছে। যদিও এখনো দেশটিতে ভোক্তাদের ব্যয় স্থিতিশীল রয়েছে। কোভিড-১৯ মহামারীর সময়ের ত্রাণ কর্মসূচি এবং আঁটসাঁট চাকরির বাজারের কারণে বিশেষ করে নিম্ন আয়ের কর্মীদের একটি শক্তিশালী মজুরি লাভের কারণে ভোক্তারা এখনো ব্যয় স্থিতিশীল রাখতে পারছেন।
আরও পড়ুন
বাংলাদেশে চিংড়ির রফতানি পরিমাণ কমছে ধারাবাহিকভাবে
গাজায় গত একদিনে নিহত ৫২
তীব্রতর হচ্ছে ইসরায়েলি হামলায় লেবাননে যুদ্ধ