November 5, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Wednesday, April 17th, 2024, 8:00 pm

যে কারণে আইপিএলে যাওয়ার অনুমতি পাননি তাসকিন

অনলাইন ডেস্ক :

চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে যখন আইপিএলে খেলছেন মুস্তাফিজুর রহমান, তখন ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে দারুণ বোলিং করে চলেছেন তাসকিন আহমেদ। অথচ দুজন হয়তো এখন থাকতে পারতেন এক মঞ্চেই, যদি বিসিবি থেকে ছাড়পত্র পেতেন তাসকিন। আইপিএল থেকে আগে ডাক পেলেও তাকে যেতে দেয়নি দেয় বোর্ড। এবার তো নিলাম থেকেই প্রত্যাহার করে নিতে হয় তার নাম। বারবার তাকে আইপিএল থেকে দূরে রাখার প্রেক্ষাপট বিস্তারিত তুলে ধরলেন বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান জালাল ইউনুস। গত কয়েক বছর ধরে তিন সংস্করণ মিলিয়ে বাংলাদেশের সেরা পেসার বলা যায় তাসকিনকে।

দেশের ক্রিকেটে তিনি আলো ছড়ালেও বাইরের কোনো লিগে এখনও খেলা হয়নি তার। গত ডিসেম্বরে আইপিএল নিলামের চূড়ান্ত তালিকায় জায়গা পান বাংলাদেশের তিন পেসার তাসকিন, মুস্তাফিজ ও শরিফুল ইসলাম। পরে সপ্তাহখানেকের মধ্যে তাসকিনের সঙ্গে সরিয়ে নেওয়া হয় শরিফুলের নামও। বিসিবির অনাপত্তিপত্র না থাকায় নিলামে তোলা হয়নি এই দুই পেসারকে। তখন তাসকিন ও শরিফুলের নাম প্রত্যাহারের ব্যাপারে বিসিবির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি।

এখন আইপিএল চলাকালে বুধবার (১৭ এপ্রিল) বিসিবিতে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে এটা নিয়ে বোর্ডের অবস্থান পরিষ্কার করেন জালাল। “তাসকিনের তখন (নিলামের সময়) কাঁধে ৪৫ শতাংশ টিয়ার ছিল। আইপিএলে কিন্তু তারা শতভাগ পারফরম্যান্স বের করে নেবে। সে জায়গায় যদি মুস্তাফিজের মতো… মুস্তাফিজের যখন ইনজুরি হয়েছিল, এখান (আইপিএল) থেকে খেলে কাউন্টি ক্রিকেটে গিয়েছিল, এই ধকলটা নিতে গিয়ে কিন্তু মুস্তাফিজকে আমরা দেড় বছর পাইনি। সেই প্রভাবটা মুস্তাফিজের মধ্যে রয়ে গেছে। আমরা চাইনি, তাসকিনেরও একই অবস্থা হোক।

তাই শুধু খেলালেই হবে না যে, তাকে পাঠিয়ে দিলাম, আইপিএল… তার চাপের ব্যাপারটাও দেখতে হবে।” গত বছরের বিশ্বকাপ চলাকালে তাসকিন জানান, কাঁধের চোটের সঙ্গে লড়াই করে খেলছেন তিনি। চোটের কারণে বিশ্বকাপে তার কাছ থেকে সেরাটা পয়ায়নি দল। বিশ্বকাপ শেষে ওই চোটের কারণে প্রায় দুই মাসের জন্য মাঠের বাইরে ছিটকে যান অভিজ্ঞ এই পেসার। আইপিএলের নিলাম হয়েছিল ওই সময়টাতেই। যার চোটের উদাহরণ তুলে ধরলেন জালাল ইউনুস, সেই মুস্তাফিজ প্রথমবার আইপিএল খেলেন ২০১৬ সালে। দুর্দান্ত বোলিংয়ে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের শিরোপা জয়ে তিনি রাখেন বড় অবদান। সেবার উদীয়মান ক্রিকেটারের পুরস্কার জেতেন তিনি। বিদেশি ক্রিকেটারদের মধ্যে তিনিই এখনও একমাত্র এখানে। ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টটি শেষ করে মুস্তাফিজ যোগ দেন কাউন্টির দল সাসেক্সে।

তখন কাঁধের চোটে লম্বা সময়ের জন্য ছিটকে যান বাঁহাতি পেসার। সেই নেতিবাচক অভিজ্ঞতা থেকে তাসকিনের ব্যাপারে আগেভাগেই সতর্কতা নিয়েছে বিসিবি। অবশ্য শুধু তাসকিন নয়, বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের আইপিএল বা অন্যান্য ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ খেলার অনুমতি নিয়ে জল ঘোলা হয় প্রায়ই। ২০২২ সালে একটি আইপিএল দলের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়েছিল তাসকিনের সঙ্গে। পরের বছর তাকে নিতে আগ্রহ প্রকাশ করে ইয়র্কশায়ার কাউন্টি ক্লাব। কোনোটিরই অনুমতি পাননি তাসকিন। এ ছাড়া সাকিব আল হাসানের অনাপত্তিপত্রের ব্যাপারেও বেশ কয়েক বার দেখা গেছে বিসিবির অনাগ্রহ। বাংলাদেশের উল্টো চিত্র নিউ জিল্যান্ডে। প্রতিবারই তাদের একগাদা ক্রিকেটার আইপিএল খেলার অনুমোদন পায়। এবার তাদের ৯ ক্রিকেটার আইপিএলে ব্যস্ত বলে পাকিস্তান সফরে তারা পাঠিয়েছে নতুন অধিনায়কের নেতৃত্বে দ্বিতীয় সারির দল।

কিন্তু সেই উদাহরণ বাংলাদেশের বাস্তবতায় কার্যকর হবে না বলেই বিশ্বাস জালাল ইউনুসের। “তাসকিন যদি ফিট থাকত, আমরা তো তাসকিনকে (আইপিএল খেলতে) দিতামই। যেমন মুস্তাফিজকে তো আমরা দিয়েছি। আমরা দেইনি, কথাটা তো ঠিক না। আর বারবার এটা বলেন কেন, আইপিএলে তাদের খেলা উচিত? ওদের (নিউ জিল্যান্ড ক্রিকেটার) ফিটনেসের তো সমস্যা নেই। তাদের হয়তো ধারাটা ভিন্ন।” “আমাদের তো কিছু সমস্যা আছে। আমাদের ক্রিকেটারদের মধ্যে কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। সেটা তো আমাদের দেখতে হবে। তাদের ওয়ার্কলোড যেন ওভাবে দিতে পারি, সেটাও তো চিন্তা করতে হবে।

নিউ জিল্যান্ড দিয়েছে বলে আমাদেরও যে সব পাঠিয়ে দিতে হবে, এটা কি বাধ্যতামূলক? আমাদের তো নিজেদের ক্রিকেটারদের দেখভাল করতে হবে।” তবে নিলাম থেকে শরিফুলের নাম প্রত্যাহারের পেছনের কারণ ভিন্ন বলে জানালেন বিসিবির এই পরিচালক। “শরিফুলের ব্যাপারটা (নিলাম থেকে নাম সরানো) কিন্তু তখন আসেনি। শরিফুলকে আমরা ছাড়ার জন্য পরিকল্পনা করেছিলাম। শরিফুলকে আমরা বলেছিলাম, একটা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য অনাপত্তিপত্র দিতে বোর্ড রাজি ছিল। কিন্তু নির্দিষ্ট ওই সময়ের জন্য সে ব্যবস্থা করতে পারেনি।”