October 14, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Wednesday, February 1st, 2023, 9:58 pm

রমজান ঘিরে বাজারে ভোগ্যপণ্যের কৃত্রিম সঙ্কটের পাঁয়তারা করছে অসাধু চক্র

ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রমজান ঘিরে বাজারে ভোগ্যপণ্যের কৃত্রিম সঙ্কটের পাঁয়তারা করছে অসাধু চক্র। বর্তমানে পুরোপুরি কয়েকটি করপোরেট হাউজের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে ভোগ্যপণ্যের বাজার। এমনিতেই আগে আমদানি করা প্রচুর পণ্য তাদের কাছে রয়েছে। আবার নতুন করেও পণ্য আমদানির এলসি ওই করপোরেট হাউজগুলোই করেছে। বর্তমানে বন্দরের আউটারে ভোগ্যপণ্য নিয়ে প্রায় এক ডজন জাহাজ অপেক্ষা করছে। ওসব জাহাজে চিনি, সয়াবিন, ছোলা ও মশুরের ডালসহ অন্যান্য পণ্য রয়েছে। কিন্তু ধীরগতি চলছে পণ্য খালাস। অভিযোগ রয়েছে বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করতেই পণ্য খালাসে জোর দেয়া হচ্ছে না। ভোগ্যপণ্য নিয়ে অসাধু চক্রের কারসাজি ঠেকাতে সরকারিভাবে কঠোরভাবে বাজার মনিটরিং ছাড়া বিকল্প নেই। ভোগ্যপণ্যের বাজার সংশ্লিষ্টদের সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বিগত কয়েক মাস ধরেই ডলারের সংকটে পণ্য আমদানিতে নেতিবাচক অবস্থা বিরাজ করছে। এমন পরিস্থিতিতে পণ্য আমদানি থেকে ছিটকে পড়েছে মাঝারি আমদানিকারকরা। অথচ দেশের ভোগ্যপণ্যের বাজার আমদানিনির্ভর। আর রমজান মাসে ভোগ্যপণ্যের চাহিদা স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে যায়। বর্তমানে কয়েকটি করপোরেট হাউজ পণ্য আমদানি করছে। মাঝারি পর্যায়ের আমদানিকারকেরা এলসি করতে না পেরে বসে পড়েছে। ফলে ব্যবসায়ীরা এখন করপোরেট হাউজের কাছে পণ্য নিতে ধরনা দিচ্ছে। এ সুযোগে ইতোমধ্যে অত্যাবশ্যকীয় ভোগ্যপণ্যের বাজার নিয়ে শুরু হয়েছে কারসাজি। বাড়তির দিকে পণ্যের দাম। আরো কীভাবে বাড়ানো যায় তা নিয়ে পাঁয়তারা চলছে।
সূত্র জানায়, অনেক জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরের আউটারে আমদানি করা ভোগ্যপণ্য নিয়ে নোঙর করে আছে। ওসব জাহাজে চাল, গম, ছোলা, মশুর ডাল, চিনি, সয়াবিন, খেজুরসহ নানা পণ্য রয়েছে। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে জাহাজ থেকে ধীরগতিতে পণ্য খালাস চলছে। এ সুযোগে পাইকারি বাজারে সবচেয়ে বেশি লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে চিনির দাম। অথচ সরবরাহে কোনো ঘাটতি নেই। বন্দরের আউটারে চিনি নিয়ে ৩টি জাহাজ খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে। আবার পাইপলাইনে রয়েছে জাহাজ। কয়েকটি শিল্প গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে দেশের চিনির পাইকারি বাজার। আর চিনি বাজারজাত করার জন্য তাদের পছন্দের গুটি কয়েক ডিও ব্যবসায়ীকে পরিবেশক নিয়োগ করা হয়েছে। তাছাড়া রমজানের অন্যতম চাহিদাপূর্ণ পণ্য ছোলার বাজারও অস্থির। বর্তমানে খুচরা বাজারে ছোলা কেজি ৯০ টাকার ওপরে বিক্রি হচ্ছে। আর মশুর ডাল বিক্রি হচ্ছে প্রতি মণ ৩ হাজার টাকা। তাছাড়া পাইকারিতে সয়াবিনের দাম না বাড়লেও পাম অয়েলের দাম ঊর্ধ্বমুখী।
সূত্র আরো জানায়, চট্টগ্রামে প্রায় ১ হাজার ২০০ বাণিজ্যিক পণ্য মজুতের গুদাম রয়েছে। ওসব গুদামে জাহাজ থেকে পণ্য খালাসের পর মজুত রাখা হয়। পরবর্তী সময়ে বিক্রি হলে গুদাম থেকে ডেলিভারি দেয়া হয়। বাণিজ্যিক গুদামগুলো অধিকাংশই খালি হয়ে পড়েছে। গুদামে পণ্য নেই। আমদানি কমে যাওয়ায় বাণিজ্যিক গুদাম ব্যবসায়ীরা লোকসান গুনছে। মূলত ওসব গুদামে মাঝারি ছোট ব্যবসায়ীরা পণ্য রাখে। কিন্তু ডলারের সংকটে তারা পণ্য আমদানি করতে পারেনি। আর বড় আমদানিকারকদের নিজস্ব গুদাম রয়েছে এবং তারা সেখানেই পণ্য মজুত রাখে।
এদিকে এ ব্যাপারে দেশের শীর্ষস্থানীয় ভোগ্যপণ্য আমদানিকারক আবুল বশর চৌধুরী জানান, এলসি খোলা নিয়ে নানামুখী জটিলতা হচ্ছে। নানা শর্ত দেয়া হচ্ছে। যাচাই-বাছাই করে এলসির অনুমোদন দেয়া হচ্ছে। ১৮০ দিনের মধ্যে পণ্যের টাকা পরিশোধ করতে হবে। কিন্তু তার মধ্যে পণ্য বিক্রি না হলে টাকা কীভাবে পরিশোধ করবে। ইতোমধ্যে অনেকেই ভোগ্যপণ্য আমদানি করেছে। সামনে বাজারে কী অবস্থা বিরাজ করবে তা বলা যাচ্ছে না। তবে পণ্যের কোনো ঘাটতি হবে না।