October 12, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Monday, November 27th, 2023, 7:42 pm

রাজনৈতিক অস্থিরতায় মারাত্মক ক্ষতির মুখে পর্যটন খাত

ফাইল ছবি

জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা দেশের পর্যটন খাতের জন্য বড় ধাক্কা বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। কক্সবাজার, সেন্টমার্টিন, কুয়াকাটাসহ দেশের বেশিরভাগ জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্যে দর্শনার্থীর সংখ্যা ব্যাপক হারে হ্রাস পেয়েছে।

দেশব্যাপী বিএনপি ও সমমনা বিরোধী দলগুলোর চলমান অবরোধ ও হরতালের কারণে ৯০ শতাংশ অগ্রিম বুকিং বাতিল হয়ে যায়। একসময়ের ব্যস্ত হোটেল-মোটেলগুলো নজিরবিহীন শূ্ন্য হয়ে পড়েছে।

পর্যটন শিল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জানুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে হোটেল, মোটেল ও রিসোর্টের অগ্রিম বুকিং বাতিল হওয়ায় গত কয়েক সপ্তাহে দেড় হাজার কোটি টাকার লোকসান গুনতে হয়েছে।

হোটেল-মোটেল মালিকরা জানান, অক্টোবরের আগে কক্সবাজারের পাঁচ শতাধিক হোটেল-মোটেলের ৫০-৬০ শতাংশ কক্ষ প্রতিদিন বুকিং হতো।

এছাড়া, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে পর্যটকদের সংখ্যা ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে। এই সংখ্যা ৫০ হাজার থেকে নেমে মাত্র ৫-১০ হাজারে দাঁড়িয়েছে। দর্শনার্থীদের বেশিরভাগই মূলত স্থানীয়। কুয়াকাটা ও সেন্টমার্টিনেও একই অবস্থা বিরাজ করছে।

হোটেল ও মোটেল মালিকরা তাদের কর্মচারীদের উপর এর প্রভাব সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। কারণ, ব্যবসায়িক মন্দার কারণে কর্মী ছাঁটাই বাধ্য করে এবং বেতন দেওয়ার ক্ষেত্রে সংকট তৈরি করে।

কক্সবাজার, সেন্টমার্টিন, রাঙ্গামাটি ও কুয়াকাটার মতো পর্যটন স্পটগুলোতে এর প্রভাব নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (টোয়াব) সভাপতি শিবলুল আজম কোরেশি।

তিনি বলেন, ‘পর্যটন খাতের জন্য সংকটময় সময় এখন। নভেম্বর, ডিসেম্বর, জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসের বুকিং বাতিল করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, কক্সবাজার, কুয়াকাটা, সুন্দরবন, সিলেট, রাতারগুল, জাফলং-তামাবিল, রাঙ্গামাটি ও পতেঙ্গা সৈকতে এই সময় পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড় হওয়া উচিত ছিল, কিন্তু সেগুলো এখন ফাঁকা।

তিনি আরও বলেন, সেন্টমার্টিনে তার একটি হোটেল থাকলেও এর ৯০ শতাংশ কক্ষ এখন খালি পড়ে আছে।

তিনি বলেন, ‘পর্যটন মৌসুম সাধারণত অক্টোবরে শুরু হয় এবং নভেম্বরে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায়। চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার ফলে এই মাসে প্রায় খালি রয়েছে হোটেল ও মোটেল। অবরোধের কারণে বুকিং বাতিল করা হয়েছে।

কক্সবাজার হোটেল-মোটেল গেস্ট হাউজ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সেলিম নেওয়াজ জানান, লাগাতার অবরোধের কারণে পাঁচ শতাধিক হোটেল-মোটেল এখন খালি পড়ে আছে।

কলাতলী মেরিন ড্রাইভ রোড হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুখিম খান বলেন, দীর্ঘ অবরোধের কারণে ১ হাজার থেকে দেড় হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হবে।

পর্যটন খাতকে বাঁচাতে পর্যটকবাহী যানবাহন হরতাল ও অবরোধের আওতার বাইরে রাখতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

একই সুরে কথা বলেন কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোতালেব শরীফ। তিনি বলেন, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার মধ্যে মানুষ পরিবার-পরিজন নিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভ্রমণে যেতে চায় না। নিরাপত্তাজনিত কারণে বিপুলসংখ্যক বুকিং বাতিল করা হয়েছে।

—-ইউএনবি