October 9, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Friday, October 14th, 2022, 7:50 pm

রাশিয়া ইউক্রেইনে মারলেও পাল্টা পারমাণবিক অস্ত্র ‘মারবে না ফ্রান্স’

অনলাইন ডেস্ক :

ইউক্রেইনে রাশিয়া পারমাণবিক অস্ত্রের হামলা চালালেও প্যারিস তার জবাব পারমাণবিক অস্ত্র দিয়ে দেবে না বলে মন্তব্য করেছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম ফ্রান্স ২ কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বুধবার তিনি এ মন্তব্য করেন বলে জানিয়েছে রুশ গণমাধ্যম আরটি। তার এ মন্তব্য তাৎক্ষণিকভাবে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে। এ মন্তব্যর মাধ্যমে ফরাসী প্রেসিডেন্ট অনেক বেশি তথ্য প্রকাশ করে দিয়েছেন বলে ভাষ্য সমালোচকদের। ম্যাক্রোঁ বলেছেন, পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের ক্ষেত্রে ফ্রান্সের সুস্পষ্ট নীতি রয়েছে, যার ভিত্তি হচ্ছে ‘দেশের মৌলিক স্বার্থ’।“এটা সুস্পষ্টভাবে বলা আছে, যে কারণে উদাহরণ হিসেবে যদি বলিও রাশিয়া ইউক্রেইনে ব্যালিস্টিক পারমাণবিক হামলা চালায়ও, তাহলে সরাসরিভাবে আমাদের জাতীয় স্বার্থের ওপর প্রভাব পড়বে না,” বলেছেন ফরাসী প্রেসিডেন্ট। বুধবার এক টুইটেও তিনি লিখেছেন, “ফ্রান্স বিশ্বযুদ্ধ চায় না।” ম্যাক্রোঁর এ অবস্থানের কড়া সমালোচনা করেছেন ফ্রান্সের সাবেক প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাদ। ফ্রান্সইনফো রেডিওকে তিনি বলেছেন, পারমাণবিক প্রতিরোধের বিশ্বাসযোগ্যতা নির্ভর করে নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে দেশ কী করতে পারে সে সম্বন্ধে ‘কিছুই না বলা’। রক্ষণশীল ফরাসী এমপি জঁ-লুই থিয়েরির সুরও একই। তিনি পলিটিকোকে বলেছেন, ম্যাক্রোঁর কথা শুনে তার ‘চেয়ার থেকে পড়ে যাওয়ার’ অবস্থা হয়েছিল। “কোনটা যে জাতীয় স্বার্থ হিসেবে বিবেচিত হবে, তা নিয়ে সবসময় ধোঁয়াশা থাকা উচিত,” বলেছেন তিনি। গত বৃহস্পতিবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের বৈদেশিক নীতি বিষয়ক প্রধান জোসেফ বোরেল বলেছেন, ইউক্রেইনের বিরুদ্ধে যে কোনো পারমাণবিক হামলার পাল্টায় রাশিয়ার সেনাবাহিনীকে ‘নিশ্চিহ্ন করে দিতে’ চাওয়া পশ্চিমা দেশগুলো শক্ত প্রতিক্রিয়া দেখাবে। তবে সেটা ‘পারমাণবিক অস্ত্র দিয়ে জবাব’ হবে না বলে স্বীকারও করে নিয়েছেন তিনি। রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন গত মাসে বলেছিলেন, রাশিয়ার আঞ্চলিক অখ-তা হুমকির মুখে পড়লে মস্কো তার সুরক্ষায় ‘যে কোনো উপায়’ কাজে লাগাতে পারে। পশ্চিমা দেশগুলো এ ভাষ্যকে পুতিনের ‘পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের’ হুমকি হিসেবেই দেখছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র বলছে, তারা এখন পর্যন্ত ইউক্রেইনে রাশিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের প্রস্তুতির কোনো আলামত পায়নি। মস্কো যদি পারমাণবিক হামলা চালায়, সেক্ষেত্রে ওয়াশিংটন কী ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখাবে এমন প্রশ্নের জবাবে কয়েকদিন আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছিলেন, তিনি কী করবেন বা করবেন না, সে বিষয়ে আলোচনা করাটা ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ হবে। বুধবারের সাক্ষাৎকারে ম্যাক্রোঁ আরও বলেছেন, রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র থেকে সুরক্ষায় ইউক্রেইনকে আরও রাডার ও ক্ষেপণাস্ত্র দেবে ফ্রান্স। প্যারিস এরইমধ্যে তার মিত্রের জন্য হাউৎজার, সহজে বহনযোগ্য আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাপনা ও সাঁজোয়া যান পাঠিয়েছে। ইউক্রেইনকে তাদের চাহিদা অনুযায়ী বিপুল পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র পাঠানো যাচ্ছে না বলে ফরাসী প্রেসিডেন্ট স্বীকারও করে নিয়েছেন। বলেছেন, নিজেদের এবং নেটোর পূর্বাঞ্চলীয় বহরকে সুরক্ষিত রাখতে তাদেরও অস্ত্রশস্ত্র দরকার। ম্যাক্রোঁ পুতিনকে ‘যুদ্ধ বন্ধ’ করে আলোচনার টেবিলে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। মস্কোর সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনা হবে না বলে কিইভ সোজাসাপ্টা বললেও ফরাসী এ প্রেসিডেন্ট বলছেন, একপর্যায়ে ‘আলোচনাই জরুরি হয়ে পড়বে’।