নিজস্ব প্রতিবেদক:
রেলপথে ভারত থেকে পণ্য আমদানি হলেও একই পথে রফতানির সুযোগ নেই। আমদানি পণ্য খালাস করে রেল ভারতে খালি ফিরে যায়। অথচ রেলে বাংলাদেশ তেকে পণ্য রফতানি করা হলে সময় ও খরচ কমা ও নিরাপদে পণ্য পরিবহন সুবিধা পেতো দেশের ব্যবসায়ীরা। বর্তমানে দেশের রফতানি বৃদ্ধিতে দেশী পণ্যের কদর বেড়েছে। তাতে কর্মসংস্থান সৃষ্টির ফলে বেকারত্বও কমছে। কিন্তু অবৈধ পণ্য যাতে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বিএসএফ রফতানি পণ্যবাহী ট্রাকে দীর্ঘসময় ধরে তল্লাশি চালায়। ফলে রফতানিকারকদের হয়রানি বাড়ছে। এমন অবস্থায় দিনের পর দিন দেশীয় সব পণ্য ট্রাকে রফতানি সম্ভব হচ্ছে না। যদি হয়রানিমূলক তল্লাশি কমে তাহলে রফতানি আরো বাড়বে। সেক্ষেত্রে রেলপথে রফতানি করা গেলে তা হবে ব্যবসায়ীদের জন্য ভালো সুযোগ। বেনাপোল স্থলবন্দর সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, এক দশক আগেও বেনাপোল বন্দর দিয়ে কেবল আমদানি বাণিজ্যে গুরুত্ব ছিল। কিন্তু এখন ওই বন্দর রফতানিতেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ক্রমাগত দেশ থেকে বিভিন্ন পণ্য ভারতে রফতানি বাড়ছে। গত ২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশী পণ্য ভারতে রফতানি ১ লাখ ৫৪ হাজার ৩৪৪ টন বেড়েছে। করোনাকালেও বন্দর ও কাস্টমস বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনা করায় এই বিপুল পরিমাণ পণ্য রফতানি সম্ভব হয়েছে। তবে রেলে রফতানি বাণিজ্য চালু আর ভারত সীমান্তে হয়রানি কমলে আরো বেশি পণ্য রফতানি সম্ভব হবে।
সূত্র জানায়, বাংলাদেশী পণ্যের গুণগত মান ভালো হওয়ায় ভারতে চাহিদা বাড়ছে। আগে আমদানি হতো এমন অনেক পণ্যই এখন রফতানি তালিকায় যুক্ত হয়েছে। রফতানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে পাটজাত পণ্য, তৈরি পোশাক, কেমিক্যাল, অ্যাসিড, কাগজ, লোহা, টিস্যু, মেলামাইন, রাইস ব্র্যান্ড, মেহগনি ফলসহ শতাধিক ধরনের পণ্য। পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হয়েছে। এখন রফতানি বাণিজ্য আরো বাড়বে। তবে বাণিজ্য গতিশীল করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা দ্রুত গ্রহণ করা প্রয়োজন।
এদিকে বেনাপোল বন্দরের উপ-পরিচালক (প্রশাসন) আবদুল জলিল জানান, দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখতে করোনাকালেও কাস্টমসের পাশাপাশি বন্দরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ২৪ ঘণ্টা বাণিজ্য সেবা চালু রাখায় বিপুল পরিমাণে রফতানি বৃদ্ধি পেয়েছে। আরো দ্রুত যাতে পণ্যবাহী ট্রাক ওপারে প্রবেশ করতে পারে সে বিষয়ে ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
অন্যদিকে বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার মো. আজিজুর রহমান জানান, বেনাপোল বন্দর দিয়ে ২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশী পণ্য ভারতে রফতানি হয়েছে ৪ লাখ ৫১ হাজার ৩৯৫ টন। আর ২০২০-২১ অর্থবছরে ওই রফতানির পরিমাণ ছিল ২ লাখ ৯৭ হাজার ৪৯ টন। রফতানি বেড়েছে ১ লাখ ৫৪ হাজার ৩৪৪ টন। সড়কপথের পাশাপাশি ভারত থেকে রেলে পণ্য আমদানি হচ্ছে। কিন্তু রেল খালি ফেরত যায়। যদি রেলে রফতানি চালু করা যায় তবে কম সময় ও খরচে পণ্য রফতানি বাড়বে। ইতোমধ্যে ভারত এ বিষয়ে পরমর্শ দিয়েছে। বিষয়টি কর্তৃপক্ষ বিবেচনা করছেন।
আরও পড়ুন
বাংলাদেশে চিংড়ির রফতানি পরিমাণ কমছে ধারাবাহিকভাবে
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ