October 13, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Wednesday, July 26th, 2023, 9:58 pm

রোগীতে পূর্ণ মুগদা হাসপাতাল, নতুন রোগী না যাওয়ার পরামর্শ

ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীতে পা ফেলার জায়গা নেই রাজধানীর মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এই অবস্থায় হাসপাতালটিতে নতুন কোন ডেঙ্গু রোগীকে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

সংস্থাটি বলছে, ডেঙ্গু রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে মুগদা হাসপাতাল। এমন পরিস্থিতিতে রাজধানীর মুগদা হাসপাতালে আপাতত আর রোগী ভর্তি করা সম্ভব নয়।

বুধবার (২৬ জুলাই) ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আয়োজিত ভার্চুয়াল ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) আহমেদুল কবীর।

তিনি বলেন, মুগদা হাসপাতালে ম্যাক্সিমাম লিমিটও ক্রস হয়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় রোগীরা যেন মুগদা হাসপাতাল মুক্তি না হয়, ওখানে ডেঙ্গু রোগীর জন্য কোন শয্যা নেই। সবাই যদি এক জায়গাতেই যেতে থাকে, তাহলে তারা কিভাবে চিকিৎসা দিবে?

আহমেদুল কবির বলেন, আমরা আজকে ডিএনসিসি হাসপাতালে ঘুরেছি, রোগীদের সঙ্গে কথা বলেছি, তাদেরকে প্রয়োজনীয় সাপোর্ট দেওয়ার চেষ্টা করছি। ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের জন্য আরও ২৫০০টি শয্যা প্রস্তুত করে রাখা আছে। বর্তমানে প্রতিদিন ১২০০ মতো রোগী ভর্তি হচ্ছে, সেইসঙ্গে ছুটিও হচ্ছে ৯০০ থেকে ১০০০ মতো। তার মানে স্থিতিশীল থাকছে দুইশ’ থেকে তিনশ’ শয্যা।

তিনি আরও বলেন, সবগুলো হাসপাতালের সঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী গতকাল কথা বলেছেন, সবাইকে তিনি বলেছেন রোগীদের জন্য নতুন করে আরও ২০০ থেকে ৩০০ শয্যা বৃদ্ধি করতে হবে। মুগদা হাসপাতালকে আমরা নতুন করে সজ্জা বৃদ্ধির জন্য বলিনি, কারণে ওইখানে ৬ শতাধিক রোগী ভর্তি আছে। এছাড়া ডিএনসিসিকে বলেছি ৮০০টির মতো সজ্জা ওখানে প্রস্তুত করা যাবে।

কুর্মিটোলা হাসপাতালে আমরা আরও ১০০ বেড প্রস্তুত করার জন্য বলেছি, হাসপাতালটিতে ৬০টি ব্যাড এখনো ফাঁকা আছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে আরও ১৫০টি শয্যা বাড়ানোর জন্য বলেছি। কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে আরও ১০০টি শয্যা বাড়ানোর জন্য বলা হয়েছে।

ডেঙ্গু সংক্রমণের এমন ঊর্ধ্বগতিতে শঙ্কা প্রকাশ করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এই কর্মকর্তা বলেন, রোগী যদি অতিমাত্রায় এভাবেই বাড়তে থাকে, তাহলে সেটি সামাল দেওয়া কষ্টকর হবে। আমার চিকিৎসকরা ঠিকমতো ঘুমাতে পারছে না। এখানে একজন চিকিৎসকের ১০ জন রোগী ম্যানেজ করার কথা, তাদেরকে ২০ থেকে ৩০ জন রোগী ম্যানেজ করতে হচ্ছে। ডাক্তার তো এখন চাইলেই রাতারাতি বৃদ্ধি করা যাবে না। আমাদের সবচেয়ে জরুরি হলো, যেকোনো মূল্যে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা কমানো।

এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা খুব কঠিন হবে উল্লেখ করে অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির বলেন, শুধু ঢাকা নয়, সারা দেশেই বর্তমানে ডেঙ্গু ছড়িয়েছে। এখন ঢাকা সিটির পাশাপাশি ঢাকার বাইরে রোগীর সংখ্যা বেশি। এডিস মশা যদি আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারি, ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা খুব কঠিন হবে।

তিনি আরও বলেন, ডেঙ্গু যতটা মেডিকেল প্রবলেম, তার থেকে বেশি ইউনিভার্নমেন্টাল প্রবলেম। যে জায়গায় পাবলিক হেলথ ইঞ্জিনিয়ারিং বেশি জরুরি। প্রাইমারি হেলথ এবং পাবলিক হেলথ এক নয়। পাবলিক হেলথ হচ্ছে জনগণকে সম্পৃক্ত করে মশা নিয়ন্ত্রণ করা।

এগুলো যদি আমরা বৃদ্ধি করতে না পারি, ডেঙ্গু রোগী যদি এভাবে বৃদ্ধি পেতে থাকে, আমাদের জন্য ডিফিকালট হয়ে যাবে। জরুরি ভিত্তিতে মশা নিয়ন্ত্রণে একটি ক্রাশ প্রোগ্রাম, যারা এই সমস্ত কাজ (মশা নিয়ন্ত্রণ) করছেন, তারা যদি এই কাজগুলো আরও বেশি বৃদ্ধি করেন, যেভাবে রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে সেটা কমানো যাবে এবং ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসাও যথাযথভাবে দেওয়া যাবে বলেও অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর জানান।

—-ইউএনবি