July 27, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Tuesday, October 19th, 2021, 8:07 pm

‘র‌্যাবের প্রযুক্তিগত আধুনিকায়ন’ কার্যক্রমের উদ্বোধন

নিজস্ব প্রতিবেদক:

‘বাংলাদেশ আমার অহংকার’ এ স্লোগানে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরনের অপরাধী গ্রেপ্তারে জোরালো ভূমিকা পালন করে আসছে। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিপুল পরিমাণ মাদক, অবৈধ অস্ত্র, চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী ও প্রতারকসহ বিভিন্ন সময়ে সংঘটিত বিভিন্ন চাঞ্চল্যকর অপরাধে জড়িতদের গ্রেপ্তার করে জনগণের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে র‌্যাব। পাশাপাশি আভিযানিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রমে তথ্যপ্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করার মাধ্যমে অপরাধীদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারসহ অন্যান্য কার্যক্রমে গতিশীলতা ও প্রশংসনীয় ভূমিকা রেখেছে র‌্যাব। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে র‌্যাব ফোর্সেস সদরদপ্তরে প্রযুক্তিগত আধুনিকায়ন শীর্ষক কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে র‌্যাব। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দীন, বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (প্রশাসন ও ইন্সপেকশন) ড. মইনুর রহমান চৌধুরী, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জিয়াউল আহসান। অনুষ্ঠানে সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন র‌্যাব মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন। র‌্যাব ফোর্সেসের প্রযুক্তিগত আধুনিকায়ন ও সুবিধাদি সম্প্রসারণ উপলক্ষে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে র‌্যাব ডাটা হাব ওপেন সোর্স ইন্টেলিজেন্স (ওএসআইএনটি), র‌্যাব ডিজিটাল অব ম্যানেজমেন্টে সিস্টেম ও র‌্যাব প্রাইভেট ক্লাউডের উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের উদ্ভাবিত ‘ডাটা হাব’র সঙ্গে সংযুক্ত হওয়ার মাধ্যমে র‌্যাব ফোর্সেস আরও দ্রুততম সময়ে অপরাধী প্রোফাইলিং, অপরাধী শনাক্তকরণ ও গ্রেপ্তারে সক্ষমতা অর্জন করেছে। এ ছাড়া ওএসআইএনটি কার্যক্রমে যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে গুজব তৈরি ও বিভিন্ন বিষয়ে উস্কানিদাতা ও অন্যান্য অপরাধীদের সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যাবে। ফলশ্রুতিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাসহ সব ধরনের অপরাধ মোকাবিলায় র‌্যাব ফোর্সেসের আভিযানিক কার্যক্রম আরও বেগবান হবে। এ প্রযুক্তিগত উন্নয়নে সার্বিক সহযোগিতা করেছে ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন সেন্টার। র‌্যাব ফোর্সেসের প্রশাসনিক সক্ষমতা বাড়াতে উদ্বোধন করা ডিজিটাল অফিস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ও র‌্যাব প্রাইভেট ক্লাউড গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। র‌্যাবে কর্মরত সব সদস্যের চাকরি, যোগদান, পদায়ন, ছুটি, প্রশিক্ষণসহ র‌্যাবের ক্রয় করা সব মালামাল, গাড়ি, রেশন ও মেডিকেল সার্ভিসের বিস্তারিত ডিজিটালি সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে দাপ্তরিক কাজে র‌্যাবের সক্ষমতা আরও বাড়বে এবং পেপারলেস অফিস বাস্তবায়নের মাধ্যমে অর্থ ও সময় সাশ্রয় হবে। র‌্যাব প্রাইভেট ক্লাউডে আভিযানিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম সংক্রান্ত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ নথি ডিজিটালি সংরক্ষণের মাধ্যমে র‌্যাবের সার্বিক সক্ষমতা বাড়বে। প্রধানমন্ত্রীর ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ বাস্তবায়নের মাধ্যমে তথ্য ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নে বাংলাদেশ বিশ্বের মাঝে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। প্রধানমন্ত্রীর দিক নির্দেশনায় ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে র‌্যাব ফোর্সেসের তথ্যপ্রযুক্তিগত উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। সময়ের সঙ্গে র‌্যাব ফোর্সেস প্রযুক্তিগত আধুনিকায়নের মাধ্যমে ভার্চুয়াল জগতে আরও বেশি সক্রিয়। সাইবার অপরাধসহ সব ধরনের অপরাধ নির্মূলের মাধ্যমে অপরাধমুক্ত শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা র‌্যাব অঙ্গীকারাবদ্ধ। অনুষ্ঠানে তিনি সংস্থাটির অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (এডিজি) কর্নেল কে এম আজাদ বলেন, অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে অপরাধী শনাক্ত ও গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র‌্যাব) আগের চেয়ে আরও সক্ষমতা অর্জন করেছে। কর্নেল কে এম আজাদ বলেন, যে দেশ প্রযুক্তিতে যত উন্নত, অপরাধ দমনে সেই দেশ তত এগিয়েছে। অতীতের চেয়ে আরও সক্ষমতার সঙ্গে যে কোনো বিষয়ে র‌্যাব অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সোনার বাংলা ও সুখী দেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। তার স্বপ্ন বাস্তবায়নে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, বিশেষ করে ডিজিটাল সেক্টরে উন্নতি করেছেন এবং এই অগ্রগতি এগিয়ে চলছে। র‌্যাব বাংলাদেশ সরকারের একটি বিশেষ বাহিনী। সৃষ্টির শুরু থেকে র‌্যাব প্রযুক্তি ব্যবহার করে অপরাধ দমন, জঙ্গি, চরমপন্থিদের মূল উৎপাটন এবং দুর্নীতিবিরোধী বিভিন্ন কার্যক্রম সফলতার সঙ্গে পালন করেছে। র‌্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে র‌্যাবের উদ্ভাবিত ‘জেল ডাটাবেজ’, ‘ক্রিমিনাল ডাটাবেজ’ ইত্যাদি প্রযুক্তির মাধ্যমে সফলভাবে অনেক গুরুত্বপূর্ণ অপরাধ দমন করেছে এবং অপরাধীকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছে। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে এসব প্রযুক্তির প্লাটফর্ম হচ্ছে ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার বা এনটিএমসি। বর্তমানে বিশ্বে যত ধরনের উন্নত প্রযুক্তি বা যন্ত্রপাতি আছে তার সবই এখানে আছে। এই এনটিএমসি থেকে বিভিন্ন আভিযানিক এবং অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অনেক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এখন অতীতের চেয়ে সহজে অপরাধ দমন, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ এবং অপরাধীকে আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হচ্ছে। কর্নেল আজাদ বলেন, র‌্যাব সদরদপ্তর এনটিএমসি থেকে ডাটা হাবসহ অনেক সহযোগিতা পাচ্ছে। এই সহযোগিতা শুধু সদরদপ্তর না, এখন থেকে র‌্যাবের ১৫টি ব্যাটেলিয়ন এই সুবিধা পাবে। এ ছাড়া দুর্গম এলাকায় থাকা ক্যাম্পগুলোও ব্যাটেলিয়ন থেকে সুবিধা পাবে।