November 5, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Friday, July 8th, 2022, 8:35 pm

লাখের বেশি অভিবাসনপ্রত্যাশীর জার্মানি থাকার সুযোগ

অনলাইন ডেস্ক :

নিয়ম শিথিল করে এক লাখেরও বেশি অভিবাসনপ্রত্যাশীকে স্থায়ীভাবে জার্মানিতে থাকার সুযোগ দিতে চলেছে ওলাফ শলৎস সরকার। তবে অভিবাসীদের অধিকার সংস্থাগুলো মনে করছে নিয়ম আরো শিথিল করা উচিত।নির্বাচন-পূর্ব অঙ্গীকার অনুযায়ী আরো বেশি অভিবাসনপ্রত্যাশীর জার্মানিতে থাকার সুযোগ সৃষ্টির প্রক্রিয়া শুরু করেছে ওলাফ শলৎস সরকার। গত বুধবার ‘ডুলডুং’, অর্থাৎ ‘পর্যাপ্ত’ সহনশীলতা বজায় রেখে পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে জার্মানিতে থাকছেন, এমন মানুষদের জন্য স্থায়ীভাবে থাকার সুযোগ দেয়া এক প্যাকেজ অনুমোদন করেছে সরকার।‘ডুলডুং’ হচ্ছে আশ্রয়ের আবেদন খারিজ হয়েছে, অথচ বড় কোনো সমস্যার কারণে দেশে ফিরতে পারছেন না, এমন অভিবাসনপ্রত্যাশীদের সাময়িকভাবে থাকার অনুমতিপত্র। নিজের দেশে যুদ্ধ চলছে বা সেখানে ফিরলে মৃত্যু-ঝুঁকি অথবা গ্রেপ্তার হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, অথবা জার্মানিতে পড়াশোনা করছেন বা কোনো প্রশিক্ষণে অংশ নিচ্ছেন- এমন ব্যক্তিদের, অথবা অন্তসত্ত্বা বা জটিল রোগে আক্রান্তদের সাধারণত এ ধরনের অনুমতিপত্র দেয়া হয়। এ অনুমতির মেয়াদ বিশেষ ক্ষেত্রে বারবার বাড়ানো গেলেও এতে চাকরি করার স্বীকৃত কোনো অধিকার থাকে না। চাইলে যেকোনো সময় দেশে ফেরানো যায় ডুলডুংধারীদের।নতুন প্যাকেজ কার্যকর হলে এক লাখ ৩০ হাজারেরও বেশি ডুলডুংধারী অভিবাসনপ্রত্যাশীর জার্মানিতে স্থায়ী হওয়ার সুযোগ হবে। এ সুখবর জানিয়ে জার্মানির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ন্যান্সি ফেজার টুইটারে লিখেছেন, ‘আমরা বৈচিত্র্যময় অভিবাসনের দেশ। এখন আমরা অন্তর্ভুক্তিকরণেও আারো ভালো হতে চাই।’তিনি জানান, নতুন প্যাকেজ অনুযায়ী, (অন্তত ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি পর্যন্ত) যাদের পাঁচ বছরের ডুলডুং রয়েছে, তাদেরকে প্রাথমিকভাবে জার্মানিতে এক বছর থাকার অনুমতিপত্র (রেসিডেন্স পারমিট) দেয়া হবে। ওই এক বছরের মধ্যে জার্মান ভাষা শিখে এবং চাকরি জোগাড় করে নিজের এবং পরিবারের (যদি থাকে) খরচ বহনের সক্ষমতা অর্জনের মাধ্যমে জার্মানিতে থাকার সদিচ্ছার প্রমাণ রাখতে পারলে তাদের স্থায়ীভাবে থাকার অনুমতি দেয়া হবে।তবে বড় ধরনের অপরাধে জড়িত ব্যক্তি, ভুল পরিচয়ে আবেদন করা ব্যক্তি বা একাই অনেক আবেদন করেছেন এমন ব্যক্তিদের এ সুযোগ দেয়া হবে না। ক্ষমতাসীন জোট সরকারের শরিক দলগুলোর নেতারা প্যাকেজটির প্রশংসা করলেও সিডিইউ দলের মুখপাত্র আলেক্সান্দার থ্রম- এর সমলোচনা করে বলেছেন, ‘এর মাধ্যমে জোট সরকার অভিবাসন আইনকে খাটো করছে।’ তবে গ্রিন পার্টির ওমিদ নুরিপুর ফুংকে নেটওয়ার্ককে বলেন, এর মাধ্যমে জার্মানিতে দক্ষ কর্মীর যে অভাব রয়েছে, তা অনেকখানি পূরণ হবে। অভিবাসন সংস্থার প্রত্যাশা শলৎস সরকারের উদ্যোগকে শরণার্থীদের অধিকার সংক্রান্ত সংস্থা প্রো আজিল স্বাগত জানিয়েছে। তবে সংস্থার ইউরোপীয় সম্পর্ক বিষয়ক পরিচালক কার্ল কপ মনে করেন, নতুন প্রস্তাবনায় এক বছরের জন্য ‘রেসিডেন্স পারমিট’ দিয়ে ওই সময়ের মধ্যে জার্মানিতে থাকা এবং একীভূত হওয়ার সদিচ্ছা প্রমাণের যে শর্ত দেয়া হয়েছে, তা খুব কঠিন। বিশেষ করে ওই সময়ের মধ্যে চাকরি জোগাড় করে নির্দিষ্ট আয়ের সক্ষমতা দেখানোর শর্তটির সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘বর্তমানের যে অর্থনৈতিক সংকট চলছে, কেউ তো এ কারণেও চাকরি পেতে ব্যর্থ হতে পারে!’ এছাড়া জার্মানিতে থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে এমন সব মানুষের ওপর থেকে যখন-তখন দেশে ফিরিয়ে দেয়ার নিয়ম প্রত্যাহার করার বিষয়টিও বিবেচনা করে দেখা উচিত মনে করেন কপ। তবে ইন্টিগ্রেশন কমিশনার আলাবালি-রাদোভান বলেছেন, বর্তমান প্যাকেজটি ‘প্রথম মাইলস্টোন’, চলতি বছরের শেষ নাগাদ অভিবাসীদের জন্য চাকরির সুযোগ অধিকতর উন্মুক্ত করাসহ আরো কিছু নতুন নিয়েম কার্যকর হতে পারে।
সূত্র : ডয়চে ভেলে