পাঁচ সদস্যের পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী বেলাল হোসেন একজন সফল সবজি চাষি। এ বছর তিনি নতুন সবজি লাল বাঁধাকপি রোপন করেছেন। উত্তর জেলা গাইবান্ধায় এই প্রথম লাল বাঁধাকপি চাষ হয়েছে এবং এটা বেশ লাভজনকও।
নতুন ও স্বাদের কারণে লাল বাঁধাকপি অনেক জনপ্রিয়। এটি সালাদ ও অন্যান্য তরকারির সঙ্গে ব্যবহার হয়ে থাকে।
সারা বছর অন্যান্য সবজি চাষের পাশাপাশি এবার নতুন বীজ রোপন করেছেন বেলাল। ফলনও ভালো, দামেও ভালো। প্রতি কপি পিস ৩০ থেকে ৪০ টাকা হিসাবে পাইকারী বিক্রি করেন। এর মধ্য থেকে অন্তত দুই লাখ টাকা লাভের আশা করেন তিনি।
গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের ভাষারপাড়ায় বাড়ি কৃষক বেলাল হোসেনের। দুই মেয়ে আর স্ত্রীসহ পাঁচ জনের সংসার। নিজের জমি বলতে সামান্য। অন্যের জমি নিয়ে চাষাবাদ করেন।
পুরো পরিবার মাঠে কাজ করায় কামলা খরচটা কম হয়। বেলাল বলেন, ‘আমি জমিতে কাজ করি,আমার স্ত্রী শিল্পী বেগম, মেয়ে সিনথি আখতার, বন্যা বেগম, ছেলে সিহাব আলীসহ সবাই কাজ করে।’
তিনি বছরের অন্য সময় ফুলকপি, বাঁধাকপি, বেগুন, মরিচ, আলু, টমেটো, লাউ, শিম, ক্যাপসিকাম, মিষ্টি কুমড়াসহ সবজি চাষ করে বছরে অন্তত দুই লাখ টাকা আয় করেন। লাভের টাকায় তিনি বাড়িঘর করেছেন এবং মেয়েদের কলেজে পড়ালেখা শেখাচ্ছেন।
কৃষক বেলাল সব সময়ই নতুন ও ভিন্ন কিছু চাষ করতে চান। তাই যখনই ঢাকায় যান তখন তিনি বিভিন্ন বীজ ভান্ডারে খোঁজ করে ভিন্ন কিছু চাষ করার। আর এভাবেই তিনি জাপান থেকে আসা লালিমা বা লাল বাঁধাকপির একটি জাত খুঁজে পান। তাই তিনি আরও অর্থ উপার্জনের আশায় তার সবজি বাগানে সুন্দর ফসল চাষ করেছেন।
বেলালের এই উদ্যোগী মনোভাব গ্রামবাসীর বেশ প্রশংসা পেয়েছেন।
কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আকবর হোসেন জানান, গাইবান্ধায় এর আগে কখনো লাল বাঁধাকপি দেখা যায়নি। বেলালই প্রথম বীজ বপন করেন তার জমিতে। জমি থেকে চারা বড় হলে ১০ হাজার চারা বপন করেন তার দুটি জমিতে। অল্প সময়ে লাল বাঁধাকপি তরতাজা হয়ে সারিসারি লাল বাঁধাকপি জমি জুড়ে ছেয়ে যায়। সবুজের ভেতরে লাল কপি গাইবান্ধায় এই প্রথম। লাল বাঁধাকপি দেখতে দুরদুরন্ত থেকে লোকজন আসেন।
ভাষারপাড়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রহমান জানান, কৃষক বেলাল ১২ মাসে ১৩ ফসলের আবাদ করেন। তিনি প্রায় প্রতিদিন জমি থেকে লাল বাঁধাকপি তুলে বিক্রি করে অন্তত ২ হাজার টাকা আয় করেন।
এই বাঁধাকপি বিক্রি করে উৎপাদন খরচের চেয়ে দুই লাখ টাকা আয় হবে বলে আশা করছেন বেলাল। এছাড়া তার স্ত্রী ও তিনি তাদের বড় মেয়ের বিয়ের জন্য অর্থ সঞ্চয় করার পরিকল্পনা করেছেন।
—-ইউএনবি
আরও পড়ুন
চলতি অর্থবছরে রপ্তানির আয়ের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ১২.৪০%: বাণিজ্য উপদেষ্টা
চাঁদপুরের ৬ উপজেলায় ৪৪টি কালভার্টসহ ১৯২ গ্রামীণ সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত
আগস্টে মূল্যস্ফীতি কমেছে ১.১৭ শতাংশ: বিবিএস