November 14, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Thursday, August 19th, 2021, 7:38 pm

লোকজনকে কাবুল বিমানবন্দরে যেতে বাধা দিচ্ছে তালেবান

অনলাইন ডেস্ক :

আফগানিস্তান ছাড়তে মরিয়া লোকজনকে সশস্ত্র তালেবান সদস্যরা কাবুল বিমানবন্দরে পৌঁছতে বাধা দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। অপরদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সব নাগরিক আফগানিস্তান না ছাড়া পর্যন্ত দেশটিতে মার্কিন সেনা অবস্থান করবে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।  রোববার তালেবান কাবুলে প্রবেশ করার পর থেকেই ২০ বছর আগে শেষ হওয়ার তালেবান শাসনে জারি থাকা কঠোর শরিয়া আইন আবার ফিরে আসতে পারে এই আশঙ্কায় হাজার হাজার লোক দেশটি ছাড়ার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে, একসঙ্গে এত লোক জড়ো হওয়ার কাবুল বিমানবন্দরে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়। জার্মানিতে পৌঁছানো একটি আফগান পরিবারের এক সদস্য বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, “সবাই বের হতে চায়। প্রত্যেকটা দিন আগের দিনের চেয়ে খারাপ। আমরা আমাদের রক্ষা করেছি কিন্তু আমাদের পরিবারগুলোকে উদ্ধার করতে পারিনি।”   প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, তালেবান সদস্যরা লোকজনকে বিমানবন্দরের ভেতরে যেতে বাধা দিচ্ছে, যাদের ভ্রমণ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আছে তাদেরও বাধা দেওয়া হচ্ছে। তালেবান সদস্যদের বাধা পার হওয়ার চেষ্টা করা এক ব্যক্তি বলেন, “এটি পুরোপুরি একটি বিপর্যয়। তালেবানরা শূন্যে গুলি ছুড়ছে, লোকজনকে ধাক্কা দিয়ে, একে-৪৭ রাইফেল দিয়ে পেটাচ্ছে।” এক তালেবান কর্মকর্তা জানান, কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে কমান্ডার ও সৈন্যরা জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে শূন্যে গুলি ছুড়েছে; রয়টার্সকে তিনি বলেন, “কাউকে আহত করার কোনো উদ্দেশ্য নেই আমাদের।” এসবের মধ্যেই বিমানবন্দরটি থেকে পশ্চিমা দেশগুলোর নাগরিক ও বিদেশি সরকারগুলোর পক্ষ হয়ে কাজ করাআফগানদের বিমানে তুলে সরিয়ে নেওয়া অব্যাহত আছে। মার্কিন নাগরিকদের সরানো শেষ না হওয়া পর্যন্ত বিমানবন্দরটিতে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা থাকবে বলে জানিয়েছেন বাইডেন। এতে আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সব সেনা প্রত্যাহারের চূড়ান্ত তারিখ ৩১ অগাস্ট পার হয়ে গেলেও তারা অবস্থান করবে বলে পরিষ্কার করেছেন তিনি। আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের এভাবে সরে যাওয়া নিয়ে সমালোচনার মুখে থাকা বাইডেন বলেছেন, বিশৃঙ্খলা অনিবার্য ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্যদের আরও ভালোভাবে সরিয়ে আনা সম্ভব ছিল কিনা, এবিসি নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেছেন, “না। ধারণাটি হচ্ছে, বিশৃঙ্খলা ছাড়াই বের হয়ে আসার একটি উপায় আছে, সেটি কীভাবে হয় আমি জানিনা।” ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়েন্ডি শেরম্যান সাংবাদিকদের জানান যে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা তালেবানকে বলেছেন, “আমরা আশা করছি তারা সব মার্কিন নাগরিক, অন্যান্য দেশগুলোর সব নাগরিক ও আফগানদের মধ্যে যারা দেশ ছাড়তে ইচ্ছুক সবাইকে নিরাপদে ও কোনো হয়রানি ছাড়াই চলে যেতে দেবে।” ওয়াশিংটনে এক সংবাদ সম্মেলনে দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন জানান, কাবুলে যুক্তরাষ্ট্রের যে সাড়ে চার হাজার সেনা আছে তারা লোকজনদের বিমানবন্দরে নিয়ে আসতে সাহায্য করতে পারবে না কারণ তারা বিমানক্ষেত্রের নিরাপত্তা রক্ষার বিষয়টি দেখছে। তবে লোকজনকে সরিয়ে আনার কাজ এখনও লক্ষ্যে পৌঁছেনি বলে স্বীকার করেছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের চেয়ারম্যান জেনারেল মার্ক মিলি জানিয়েছেন, কাবুল বিমানবন্দরের নিরাপত্তা পরিস্থিতি স্থিতিশীল আছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর অভিযানে তালেবান হস্তক্ষেপ করছে না।