অনলাইন ডেস্ক :
জার্মানিতে শরণার্থী আসার সংখ্যা বাড়ছে। কিন্তু ২০১৫-১৬ সালে আসা শরণার্থীদের অনেকে এখনো নিজস্ব থাকার জায়গা খুঁজে পাননি। জার্মানির হেসে রাজ্যের ফুলডা জেলা প্রশাসন সম্প্রতি রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠি লিখে জানিয়েছে যে, তাদের ওখানে নতুন আশ্রয়প্রার্থীদের রাখার আর কোনো জায়গা নেই। ফুলডার প্রশাসক ব্যার্নড ভয়ডে জানান, শুধু যে বাসস্থানের অভাব আছে, তা নয়। শিশু ও চিকিৎসা সেবা, স্কুলসহ অন্যান্য ক্ষেত্রেও অনেক চাপ রয়েছে বলে জানান তিনি। ফুলডার মতো আরও অনেক শহরও একই অবস্থায় পৌঁছে যাওয়ার কথা জানিয়েছে। জার্মানির অভিবাসন ও শরণার্থী সংস্থা বিএএমএফ জানিয়েছে, এ বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত এক লাখ ৬২ হাজারের বেশি আশ্রয় আবেদন জমা পড়েছে। এর মধ্যে ৪৪ হাজার আবেদন করেছেন সিরিয়ার নাগরিকরা।
এরপরে আছে আফগানিস্তান (প্রায় ২৮ হাজার) ও তুরস্ক (প্রায় ১৯ হাজার)। এ ছাড়া আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের প্রায় ২০ হাজার মানুষ আশ্রয়ের আবেদন করেছেন। বিএএমএফ জানিয়েছে, এক লাখ ৩৩ হাজার আবেদন বিবেচনা করা হয়েছে। এর মধ্যে ৪৮ শতাংশ আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। অর্থাৎ আবেদনকারী প্রতি দুইজনের মধ্যে একজনের জার্মানিতে থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। হিল্ডেসহাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিবাসন নীতি বিষয়ক বিশেষজ্ঞ বরিস ক্যুনের ধারণা, এ বছর জার্মানিতে প্রায় তিন লাখ মানুষ আশ্রয়ের আবেদন করতে পারেন। একজন শরণার্থী জার্মানিতে পৌঁছার পর তাকে প্রথমে একটি অস্থায়ী জায়গায় রাখা হয়। তার আবেদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত তাকে সেখানেই থাকতে হয়।
কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, এসব অস্থায়ী কেন্দ্রের বেশিরভাগগুলোতেই এখন নতুন করে আশ্রয়প্রার্থীদের পাঠানোর সুযোগ নেই। কারণ সেগুলোতে থাকার জায়গা নেই। এর একটি কারণ খুঁজে পেয়েছেন বরিস ক্যুন ও জার্মানির ট্যুবিঙ্গেন শহরের শরণার্থী বিষয়ক কর্মকর্তা ইউলিয়ান শ্লিশ্ট। তারা যৌথভাবে একটি তদন্ত করে দেখতে পেয়েছেন, ২০১৫-১৬ সালের শরণার্থী সংকটের সময় জার্মানিতে যে শরণার্থী ও অভিবাসনপ্রত্যাশীরা এসেছিলেন তাদের প্রায় ২৫ শতাংশ এখনও অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে আছেন। অনেকে আশ্রয়ের অনুমতি পেলেও আবাসন সংকটের কারণে নিজস্ব বাসা পাচ্ছেন না।
ক্যুন আর শ্লিশ্ট বলছেন, ২০১৫-১৬ সালের পর জার্মানির যেসব এলাকার কর্তৃপক্ষ শরণার্থী বিষয়ে গুরুত্ব কমিয়ে দিয়েছে সেসব এলাকায় এই সমস্যা বেশি দেখা যাচ্ছে। আর যেসব এলাকার কর্তৃপক্ষ শরণার্থীদের বিষয়ে গুরুত্ব দিয়েছে সেখানে সমস্যা কম হয়েছে। যেমন ডুসেলডর্ফ শহর কর্তৃপক্ষ নিজ দায়িত্বে স্বীকৃত আশ্রয়প্রার্থীদের বাসা খুঁজে দিতে সহায়তা করেছে। তারা শরণার্থীদের বাসা ভাড়া দিতে বাড়ির মালিকদের সঙ্গে কথা বলেছে। এছাড়া বাডেন-ভ্যুর্টেমব্যার্গ রাজ্যের কয়েকটি শহর কর্তৃপক্ষ একসঙ্গে মিলে স্বীকৃত শরণার্থীদের জন্য বাসা খুঁজেছে। পরিত্যক্ত সম্পত্তি সংস্কার করে ব্যবহার উপযোগী করার জন্য টাকাও দিয়েছে অনেক শহর কর্তৃপক্ষ। শরণার্থীদের বাসা ভাড়া দিতে বাড়ির মালিকদের সঙ্গে প্রথম কয়েক বছরের জন্য চুক্তিও করেছে কিছু শহর কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন
গাজায় গত একদিনে নিহত ৫২
তীব্রতর হচ্ছে ইসরায়েলি হামলায় লেবাননে যুদ্ধ
হারিকেন হেলেনে যুক্তরাষ্ট্রে অন্তত ৯০ জনের মৃত্যু