November 9, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Wednesday, August 18th, 2021, 9:28 pm

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী

বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সচিব সভায় সভাপতিত্ব করেন। ছবি: পিআইডি

নিউজ ডেস্ক :

করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার (১৮ আগষ্ট) বিকেলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে ব্রিফিংকালে এ কথা জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন যত দ্রুত একটা কমফোরটেবল সিনারি এলে স্কুল-কলেজ খুলে দেয়া যায়। পাশাপাশি সরকারি স্কুল-কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম ডিজিটাল সিস্টেমেও যেন চলে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএতে পুরোপুরি শিক্ষা কার্যক্রম ডিজিটালি চলছে এবং গ্রাজুয়েশনও হচ্ছে। সেজন্য প্রধানমন্ত্রীও নির্দেশনা দিয়েছেন শিক্ষা কার্যক্রম ভার্চুয়ালি হোক বা অনলাইনে হোক চলুক। পাশাপাশি একটা কমফোরটেবল সিনারিওতে এলেই যেন সেটা (শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান) খুলে দেয়া হয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও বলেন, সেটা (শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে) শিক্ষা সচিবও বলেছেন। তারা একটা প্ল্যান করছেন। গত মঙ্গলবার তারা বৈঠকও করেছেন আইসিটির সঙ্গে। দ্রুতই তারা পাবলিকলি বিষয়টি জানাবেন। যত দ্রুত সম্ভব যাতে খুলে দেয়া যায়। ছাত্রদের মধ্যে ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে যারা আছেন তাদের কুইকলি যাতে ভ্যাকসিনেটেড করা হয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, যত দ্রুত সম্ভব। কারণ খুব দ্রুতই তো আমরা ৬ কোটি ভ্যাকসিন পেয়ে যাচ্ছি। বিভিন্ন গ্রুপ করে করে ছাত্রদের মধ্যে যারা বয়সের মধ্যে আসবে তাদের প্রিভিলেজ ওয়েতে ভ্যাকসিন দেব। সেপ্টেম্বরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেজন্যই আমি প্রিসাইজলি কোনো ডেটের কথা বলছি না, ডেটের কথা আমরা জিজ্ঞাসাও করিনি। বাট ইন্সট্রাকশন ছিল দুইটা জিনিস দেখতে হবে জেনারেল সিনারিও যদি কমফোরটেবল অবস্থায় চলে আসে, ভাইরাসটা যদি নিয়ন্ত্রণে আসে এবং দুই নম্বর হলো ভ্যাকসিনেশন। দুইটা জিনিস বিবেচনা করে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে বলেছেন। সব সচিবরা এবং উনি (প্রধানমন্ত্রী) নিজেও বলেছেন ছেলে-মেয়েরা বাসায় বসে থাকতে থাকতে একটা অস্বস্তিকর অবস্থার মধ্যে আছে। সুতরাং তাদের তো বাইরে নিয়ে আসা দরকার।
রুট অনুসরণ না করায় পদ্মা সেতুর পিলারে ফেরির ধাক্কা: নির্ধারিত রুট অনুসরণ না করায় পদ্মা সেতুর পিলারে ফেরির ধাক্কার ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। তিনি বলেন, পদ্মায় হঠাৎ করে এমন ¯্রােত সৃষ্টি হয়, যে ¯্রােতের সময় কারও পক্ষে কন্ট্রোল করা সম্ভব নয়। অনেক সময় মাস্টাররা রুট ফলো করেন না। তিনটি ঘটনা ঘটেছে রুট ফলো না করায়। তিনটি ফেরিই উজানে না গিয়ে ক্রস এসেছিল। তিনি বলেন, বিআইডব্লিউটিএ’র সারেংরা বাংলাদেশের সব থেকে এক্সপার্ট সারেং। দুটি জিনিস থাকে কনফিডেন্স ও নেগলেজেন্সি। এ ক্ষেত্রে নেগলিজেন্স থেকে এসব দুর্ঘটনা ঘটছে। পিলারের মাঝে ১৫০ মিটার ফাঁকা রয়েছে, ফেরি ১৫ মিটার, ফেরির ১০ গুণ। ২৫ ফুট করে পাইল ক্যাপ বাদ দিয়ে ২০ মিটার বাদ দেওয়া হলেও ১৩০ মিটার থাকে। ফেরি হলো ১৫ মিটার। ৬-৭টা ফেরি গেলেও ধাক্কা খাওয়ার কোনো কারণ নেই। এজন্য আমরা সবাই বসে রুট ঠিক করে দিয়েছি। এরপরও দুর্ঘটনা দুর্ঘটনাই। তিনি বলেন, এরপরও তিনটিতে আমরা দেখলাম নেগলেজেন্সি ছিল, যার কারণে তাদের বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেওয়া হয়েছে। পিলারের সাথে ধাক্কা খাওয়ার কোনো সুযোগ নেই, ক্যাপে ধাক্কা লাগবে। ৬১ মিটার মাটি একসময় সরে যেতে পারে সেটা মাথায় রেখেই ব্রিজ তৈরি করা হয়েছে। এসব ধাক্কায় কিছুই হবে না। সচিব আরও বলেন, তীব্র ¯্রােতের কারণে মাঝে মধ্যে দু-তিনদিন করে ফেরি পারাপার বন্ধ থাকে। অন্য কোনো কারণে নয়। উজানে খুব বেশি বৃষ্টি হলে ফেরি বন্ধ থাকে, কিছুই করার থাকে না। ছোট গাড়ি নিয়ে ফেরি যাচ্ছে। ১৮টি ফেরির মধ্যে ৭টি ফেরি চলতে পারছে।
২১ কোটি ডোজ টিকার প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে: কোভ্যাক্সসহ বিভিন্ন উৎস থেকে করোনাভাইরাস প্রতিষেধক ২১ কোটি ডোজ টিকা পাওয়ার প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সভায় স্বাস্থ্যসেবা ও করোনা ব্যবস্থাপনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। করোনা সম্পর্কিত যে বিষয়টি আলোচনা হয়েছে, তা হলো টিকা পাওয়া নিয়ে ভালোভাবে আশ্বস্ত করা। তিনি বলেন, সর্বশেষ ক্রয় সংক্রান্ত সভায় ছয় কোটি ডোজ টিকা ক্রয়ের জন্য অনুমোদন দেয়া হয়। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ আমাদের জানিয়েছে, বিভিন্ন উৎস থেকে ২১ কোটি চার লাখ ডোজের প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে। এরইমধ্যে তিন কোটি ১০ লাখ ডোজ টিকা আমরা ক্রয় করেছি। দেশের মানুষকে দুই কোটি পাঁচ লাখ টিকা দেয়া হয়েছে। এখন এক কোটি চার লাখ হাতে আছে। ধাপে ধাপে সেগুলো দেয়া হচ্ছে। খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, সভায় খাদ্য সচিব প্রথমে খাদ্যের অবস্থা প্রধানমন্ত্রীর সামনে তুলে ধরেন। খাদ্য এবং কৃষির সমন্বয় প্রয়োজন। যাতে কোনোভাবেই দেশে খাদ্য ঘাটতি না হয়। সেটি কৃষি বিভাগ যাতে স্পষ্ট করে, চাহিদা অনুযায়ী আমাদের উৎপাদন কতটুকু। সেক্ষেত্রে প্রয়োজন পড়লে আমদানি করবে, আর উদ্বৃত্ত থাকলে তো তা প্রয়োজন নেই। সেজন্য তিনি (প্রধানমন্ত্রী) নির্দেশনা দিয়েছেন, এখন থেকে বসে সেটি ঠিক করে ফেলতে হবে। যেহেতু অলরেডি বোরো ধান উঠে গেছে, গত বছর তিনবার বন্যা হয়েছে। যে কারণে গতবার আমন ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এবার এখনো তেমন কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। এখনো পানির স্তর গতবারের চেয়ে অনেক নিচে। সেকারণে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, খাদ্য এবং কৃষি দু’জনে বসে একসঙ্গে কাজ করবে। ইরি থেকে দুই থেকে তিনটি ভ্যারাইটি আসছে, সেগুলো প্রোডাকটিভিটি হাইব্রিডের কাছাকাছি’ বলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
খাদ্য ঘাটতি ঠেকাতে প্রয়োজনে চাল আমদানির নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর: দেশে ‘কোনোভাবেই খাদ্য ঘাটতি রাখা যাবে না’ সতর্ক করে প্রয়োজনে চাল আমদানির নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সচিবদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশনা দিয়েছেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। তিনি বলেন, সচিবদের সভায় দেশের বিদ্যমান খাদ্য পরিস্থিতি প্রধানমন্ত্রীর সামনে উপস্থাপন করেন খাদ্য সচিব। এর পরেই প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে যাতে খাদ্য ঘাটতি না হয় হয় সেজন্য খাদ্য মন্ত্রণালয় এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমন্বয় করে কাজ করা প্রয়োজন। যাতে কোনোভাবেই দেশে খাদ্য ঘাটতি না হয়। দেশে খাদ্য উৎপাদনের পরিমাণ কত সেটি যেন কৃষি বিভাগ স্পষ্ট করে। চাহিদা অনুযায়ী আমাদের উৎপাদন কতটুকু সে তথ্যও যেন জানায়। সে ক্ষেত্রে প্রয়োজন পড়লে আমদানি করবে, আর উদ্বৃত্ত থাকলে তো আর আমদানির প্রয়োজন হবে না বলে অভিমত ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সেজন্য তিনি (প্রধানমন্ত্রী) নির্দেশনা দিয়েছেন, এখন থেকে বসে (বৈঠক করে) সেটি ঠিক করে ফেলতে হবে। যেহেতু অলরেডি বোরো ধান উঠে গেছে, গত বছর তিনবার বন্যা হয়েছে; যে কারণে গতবার আমনে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এবার এখনো বন্যার তেমন কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। এখনও পানির স্তর গতবারের চেয়ে অনেক নিচে। সেকারণে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, খাদ্য এবং কৃষি; দু’জনে (দুই মন্ত্রণালয়) বসে একসঙ্গে কাজ করবে। ইরি থেকে দুই-তিনটি ভ্যারাইটি আসছে, সেগুলো প্রোডাক্টিভিটি হাইব্রিডের কাছাকাছি’ বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। বুধবার (১৮ আগষ্ট) সকালে রাজধানীর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ-এনইসির সম্মেলন কক্ষে সচিবদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সভায় প্রধানমন্ত্রী গণভবন প্রান্ত থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন তিনি। উল্লেখ্য, সরকার প্রধানের উপস্থিতিতে ২০১৭ সালের জুলাইয়ে সর্বশেষ সচিব সভা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর গত ৪ জুলাই চার বছর পর সচিব সভা করার উদ্যোগ নেওয়া হলেও করোনার কারণে তা স্থগিত করা হয়।