October 15, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Friday, March 25th, 2022, 7:56 pm

শ্রীলঙ্কায় চালের কেজি গিয়ে ঠেকলো ৫০০ রুপিতে

শ্রীলঙ্কায় সব পণ্যের দামই হু হু করে বাড়ছে। আকাশ ছুঁয়েছে খাদ্য, ওষুধ, গুঁড়ো দুধ, রান্নার গ্যাস এবং জ্বালানির মতো প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম। পেট্রোল-ডিজেল পেতে লম্বা লাইন পাম্প স্টেশনের বাইরে। সব মিলিয়ে তীব্র হাহাকার ও অরাজকতা চলছে শ্রীলঙ্কায়। প্রতিদিন দীর্ঘ সময় ধরে চলছে বিদ্যুৎ ঘাটতির ফলে লোডশেডিং। সেন্ট্রাল ব্যাংক এ মাসের শুরুতে স্থানীয় মুদ্রাকে ফ্রি ফ্লোট করার অনুমতি দেয়, যার ফলে দামে তীব্র বৃদ্ধি ঘটে। এ অবস্থায় শ্রীলঙ্কার তামিলরা এখন ভারতে আসার চেষ্টা করছেন। এরইমধ্যেই শ্রীলঙ্কার ১৬ জন শরণার্থী হিসেবে ভারতে ঢুকেছেন। দেশটি থেকে ভারতে যাওয়া শরণার্থীরা জানিয়েছেন, সেখানে চাল প্রতি কেজিতে শ্রীলঙ্কার মুদ্রায় ৫০০ টাকা অবধি পৌঁছেছে। ৪০০ গ্রাম পাউডার দুধের দাম ৭৯০ টাকা। এক কেজি চিনির দাম ২৯০ টাকা। ১৯৮৯ সালে গৃহযুদ্ধের সময় যেভাবে মানুষ পালাতো এবারেও সেই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তামিলনাড়ু পুলিশ সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানায়, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আগামী কয়েক সপ্তাহে প্রায় ২০০ শরণার্থী আসার সম্ভাবনা রয়েছে। এক কর্মকর্তা বলেন, প্রথম ধাপে আসা ছয় শরণার্থী পুলিশকে বলেছে, তারা কয়েক সপ্তাহ ধরে খাবারের জন্য সংগ্রাম করার পর পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছেন। খাদ্য ও জ¦ালানির প্রচ- ঘাটতি এবং আয়ের অভাবের কারণে আরও অনেক পরিবার ভারতে পালিয়ে আসার পথ খুঁজছেন। মান্নারের একজন মানবাধিকার কর্মী ভি এস শিবকরণ বলেন, আমার পরিচিত অনেকেই শ্রীলঙ্কা ছেড়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন। তাদের কারও কারও ভারতীয় শিবিরে আত্মীয়স্বজন আছে, আবার কারও তামিলনাড়ুতে যোগাযোগ আছে। আগামীকাল (ভবিষ্যৎ) নিয়ে আতঙ্ক ও উদ্বেগ রয়েছে। তিনি বলেন, এটা প্রায় নিশ্চিত সামনের সপ্তাহে চালের দাম আরো বাড়বে। আজ চিনির কেজি ২৯০ রুপি, ৪০০ গ্রাম গুঁড়ো দুধের দাম ৭৯০ রুপি। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, গুঁড়ো দুধের দাম গত তিন দিনে ২৫০ রুপি বেড়েছে। গত সপ্তাহে কাগজের ঘাটতির কারণে শ্রীলঙ্কা সরকার অনির্দিষ্টকালের জন্য স্কুলের পরীক্ষা স্থগিত করেছে। শ্রীলঙ্কার নগর উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী এবং একজন শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতা নালাকা গোদাহেওয়া বলেন, বিষয়গুলোর ধীরে ধীরে উন্নতি ঘটছে। এটি সত্য যে আমরা ব্যাপকভাবে উচ্চ মূল্যস্ফীতিসহ একটি কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি, যার সবই ডলার সংকটের সঙ্গে সম্পৃক্ত। আমরা ঘুরে দাঁড়াচ্ছি, আশা করছি এক বা দুই সপ্তাহের মধ্যে পরিস্থিতি আরও ভালো হবে। উল্লেখ্য, শ্রীলঙ্কার নিজস্ব বৈদেশিক মুদ্রার ভা-ার শেষ হয়ে গেছে। জরুরি সামগ্রী বাইরে থেকে আনার জন্যও উপযুক্ত টাকা নেই দেশটির কাছে। চলতি বছর কিস্তিতে ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ পরিশোধ করতে হবে শ্রীলঙ্কাকে কিন্তু বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ মাত্র দুই বিলিয়নের কাছাকাছি। বর্তমান এই পরিস্থিতিতে একদিকে যেখানে চীন হাত বাড়িয়েছে, ভারত ১৭ মার্চ এক বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ দেবে বলে শ্রীলঙ্কাকে জানিয়েছে।