October 8, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Friday, August 4th, 2023, 7:57 pm

সংঘাতজনিত বৈশ্বিক খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা মোকাবিলায় সম্মিলিত প্রচেষ্টার আহ্বান রাষ্ট্রদূত মুহিতের

জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত বলেছেন, সংঘাত-জনিত বিশ্বব্যাপী খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা মোকাবিলায় ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা যথেষ্ট নয়। এর জন্য প্রয়োজন আন্তর্জাতিক সংহতি।

বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) নিরাপত্তা পরিষদে ‘দুর্ভিক্ষ ও সংঘাতজনিত বৈশ্বিক খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা’ শীর্ষক এক উচ্চ পর্যায়ের বিতর্কে বক্তব্য প্রদানকালে এ কথা বলেন তিনি।

আগস্টে (২০২৩) নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছে যুক্তরাষ্ট্র এবং বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।

বিশ্বব্যাপী খাদ্য নিরাপত্তায় চলমান ইউক্রেন যুদ্ধ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিধ্বংসী প্রভাবের প্রসঙ্গ টেনে রাষ্ট্রদূত মুহিত এ সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশের গৃহীত বিভিন্ন কার্যকরী পদক্ষেপের কথা পরিষদে উপস্থিত সকলের সামনে তুলে ধরেন।

তিনি উল্লেখ করেন, পরিস্থিতি মোকাবিলায় বাংলাদেশ কৃষি-খাদ্য ব্যবস্থায় বিনিয়োগকে অগ্রাধিকার প্রদানসহ বেশ কিছু উদ্যোগ বাস্তবায়ন করেছে।

মুহিত আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের অভ্যন্তরে দেশীয় খাদ্য উৎপাদনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ এবং প্রতিটি বাড়িতে অব্যবহৃত জমি চাষ করার জন্য দেশের সকল জনগণের প্রতি জোর আহ্বান জানিয়েছেন।

খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার বিরুদ্ধে সম্মিলিত পদক্ষেপকে জোরদার করার জন্য স্থায়ী প্রতিনিধি সংঘাতকালীন সময়ে খাদ্যের মূল্য এবং প্রবেশাধিকারকে প্রভাবিত করে এমন অন্তর্নিহিত কারণগুলোকে মোকাবিলার ওপর জোর দেন।

এই বিষয়ে তিনি আন্তর্জাতিক বাজার উন্মুক্ত রাখতে, অপ্রয়োজনীয় রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা অপসারণ করতে এবং খাদ্য মজুদ ছেড়ে দেওয়ার জন্য জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের আহ্বানের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানান।

তিনি সারা বিশ্বে খাদ্য সরবরাহে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে ‘ব্ল্যাক সি গ্রেইন ইনিশিয়েটিভ’ চালু রাখার ওপরও জোর দেন।

রাষ্ট্রদূত খাদ্য নিরাপত্তায় জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব প্রশমনে বাংলাদেশের মতো ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোকে সহায়তা করার জন্য দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতা, জলবায়ু অর্থায়ন এবং প্রযুক্তি হস্তান্তরসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ত্বারোপ করেন।

দুর্ভিক্ষ ও অনাহারকে যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করার তীব্র নিন্দা জানিয়ে রাষ্ট্রদূত মুহিত সকল সদস্য রাষ্ট্রকে যুদ্ধের কৌশল হিসেবে অনাহারকে কাজে লাগানো থেকে বিরত থাকার অনুরোধ করেন এবং বিবাদমান পক্ষগুলোকে সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক আইন ও মানবিক নীতিসমূহ মেনে চলার আহ্বান জানান।

রাষ্ট্রদূত দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা রোহিঙ্গা সংকট এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চলমান সংঘাতের কারণে রোহিঙ্গাদের অনুকূলে বরাদ্দ আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের ঘাটতির প্রতি পরিষদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

তিনি রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবাসন সক্ষম করতে মিয়ানমারে একটি অনুকূল পরিবেশ তৈরিতে সম্মিলিত প্রচেষ্টার আহ্বান জানান।

একই সঙ্গে তিনি বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন না হওয়া পর্যন্ত তাদের অনুকূলে মানবিক সহায়তা প্রদান অব্যাহত রাখার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।

—–ইউএনবি