অনলাইন ডেস্ক :
যৌন হয়রানি, সমকামিতা ও প্রতারণার অভিযোগে কথিত পীর আবদুল মুত্তালিব চিশতিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে প্রতারণা ও যৌন হয়রানির দুটি মামলা রয়েছে। গত সোমবার রাজধানীর তুরাগ থানা এলাকার একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান বিভাগের একটি টিম। মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ডিবি গুলশান বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মশিউর রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, যেসব মন্ত্রণালয় সারাদেশে ব্যাপক কর্মকা- পরিচালনা করে, সেই মন্ত্রণালয়গুলোতে আবদুল মুত্তালিব চিশতির আনাগোনা বেশি। মন্ত্রণালয়ে ঘুরে মন্ত্রী ও সিনিয়র কর্মকর্তাদের সঙ্গে ছবি তুলতেন তিনি। একই সঙ্গে তিনি বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় ঘুরে বয়ান করতেন। তার লম্বা বয়ান ও মোনাজাতে মুগ্ধ হয়ে অনেকেই যোগাযোগের জন্য মোবাইল নম্বর নিয়ে রাখতেন। কোনো ভক্ত তাকে ফোন করলে, সুযোগ বুঝে শুরু করতেন প্রতারণা। ডিসি মশিউর রহমান বলেন, ধান্দাবাজি আর প্রতারণায় রাজনীতিকে ব্যবহারের দৌড়েও এগিয়ে কথিত এ পীর। ইতোমধ্যে একটি চক্রকে নিয়ে তিনি আওয়ামী নির্মাণ শ্রমিক লীগ গড়ে তুলেছেন। কথিত এ দলে বাগিয়ে নিয়েছেন সিনিয়র সহ-সভাপতির পদ। দলের নাম ভাঙিয়ে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে সেলফি তুলতেন তিনি এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করতেন। পরবর্তীতে তাদেরকে দিয়ে সুপারিশ করিয়ে সচিবালয়ে তার আনাগোনা শুরু। বিশেষ করে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, ভূমি, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে তার যাতায়াত বেশি ছিল। তিনি আরও বলেন, পীরবাদ ও রাজনৈতিক পদ ব্যবহার করে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে মাস্টাররোলে চাকরি দেওয়া, রাজউকের বিভিন্ন প্রকল্পে নির্মাণাধীন ফ্ল্যাট স্বল্পমূল্যে বরাদ্দ নিয়ে দেওয়া, ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভার চেয়ারম্যান-মেম্বার, ওয়ার্ড কাউন্সিলর অথবা মেয়র প্রার্থীদের নৌকা প্রতীক বরাদ্দ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে ছয় থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিয়েছেন। ডিবির এ কর্মকর্তা জানান, কথিত পীর মুত্তালিব চিশতি সব সময় ধবধবে সাদা পাঞ্জাবি ও পায়জামা পরতেন। তিনি মাথায় সব সময় লম্বা টুপি পরেন। সপ্তাহে একদিন তার বাসায় জিকিরের হিড়িক পড়ে। তখন নারী-পুরুষ ভক্তদের সামনে কাফনের সাদা কাপড় পরে তিনি বয়ান করেন। তিনি কোরআনের মাত্র তিনটি সূরা জানেন। পীরবাদ, চিশতিয়া তরিকা, যৌন হয়রানি তার ব্যবসার একটা কৌশলমাত্র। তিনি আরও জানান, মুত্তালিবের ঘরে দুই স্ত্রী ও অসংখ্য মুরিদ রয়েছে। অথচ তিনি দুটি সমকামিতার ওয়েবপেজ পরিচালনা করেন। ওই পেজের মাধ্যমে শতাধিক ছেলেবন্ধু বানিয়েছেন তিনি। তাদের সঙ্গে অস্বাভাবিক ও বিকৃত যৌনাচারে লিপ্ত হতেন। তার বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে দুটি মামলা হয়েছে। তবে অনেক ভুক্তভোগীরা লজ্জায় অভিযোগ করছেন না। গ্রেপ্তার মুত্তালিবকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড আবেদন করে আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন
এলডিসি গ্রাজুয়েশনে বাংলাদেশের সুষ্ঠু উত্তরণে পূর্ণ সহায়তার আশ্বাস জাতিসংঘের
জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা নিয়ে ইউনূস-আইসিসির আলোচনা
দেশ সংস্কারে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই ও পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনতে সহায়তা দেবে যুক্তরাষ্ট্র