October 15, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Sunday, February 18th, 2024, 8:36 pm

‘সাডেন ডেথ সিনড্রোম’ নাভালনির মৃত্যুর কারণ

অনলাইন ডেস্ক :

আলেক্সি নাভালনি ‘সাডেন ডেথ সিনড্রোমে’ মারা গেছেন এবং এই মৃত্যু ঘিরে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তার মৃতদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে না। রুশ কর্তৃপক্ষ নাভালনির মা কে এমনটাই জানিয়েছে বলে শনিবার জানিয়েছেন নাভালনির মুখপাত্র। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের কট্টর সমালোচক নাভালনি দেশে এবং দেশের বাইরে পুতিনের অন্যতম প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বিবেচিত হতেন। যদিও গত দুই দশকের বেশি সময় ধরে প্রায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রাশিয়া শাসন করে যাচ্ছেন পুতিন। ৪৭ বছর বয়সী নাভালনি গত শুক্রবার রাশিয়ার কুখ্যাত ‘পোলার উলফ’ পেনাল কলোনি কারাগারে মারা যান। ভয়ানক অপরাধীদের এই কারাগারে রাখা হলেও রাশিয়ার বিরোধী দলীয় নেতা আলেক্সি নাভালনিকে সেখানে রাখা হয়েছিল উগ্রপন্থায় উস্কানি এবং ওই সংক্রান্ত একটি সংগঠন চালানোর মত অভিযোগে। গত ডিসেম্বরে তাকে ওই কারাগারে আনা হয়। শুক্রবার ওই কারাগারেই নাভালনির মৃত্যু হয়েছে বলে খবর দেয় রুশ কর্তৃপক্ষ।

নাভালনির এমন মৃত্যু নিয়ে গোটা বিশ্বেই হচ্ছে আলোচনা। যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্র দেশগুলো নাভালনির মৃত্যুর পেছনে পুতিনকেই দায়ী করছে। তাকে খুন করা হয়েছে বলেও দাবি তুলেছে নাভালনির পরিবার ও বিরোধী শিবির। ক্রেমলিন থেকে নাভালনির মৃত্যুতে পশ্চিমাদের প্রতিক্রিয়াকে অগ্রহণযোগ্য এবং ‘একেবারে উন্মাদের মতো’ বলে বর্ণনা করেছে। নাভালনির মা ৬৯ বছরের লুডমিলা মাইনাস ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ছেলের লাশের খোঁজে মস্কো থেকে ১,৯০০ কিলোমিটার উত্তরপূর্বে খার্প এর পেনাল কলোনিতে গিয়েছিলেন। তাকে কারা কর্তৃপক্ষ একটি আনুষ্ঠানিক চিঠি দিয়েছে। যে চিঠিতে শুরুতেই নাভালনির মৃত্যুর সময় ১৬ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ১৭ মিনিটে উল্লেখ করা আছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন নাভালনি শিবিরের মুখপাত্র কিরা ইয়ারমিশ।

নাভালনির দুর্নীতি বিরোধী ফাউন্ডেশনের পরিচালক ইভান ঝদানোভ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স এ এক পোস্টে লেখেন, “যখন আলেক্সির আইনজীবী এবং তার মা শনিবার সকালে পেনাল কলোনিতে পৌঁছান তখন কারা কর্তৃপক্ষ তাদের বলেছেন, নাভালনি ‘সাডেন ডেথ সিনড্রোম’ এ মারা গেছেন।” ‘সাডেন ডেথ সিনড্রোম’ হৃদযন্ত্রের বিভিন্ন ধরণের সিনড্রোমের মধ্যে একটি অস্পষ্ট অবস্থা। যেটির কারণে হঠাৎই হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে রোগীর মৃত্যু হয়। নাভালনির মৃতদেহ কোথায় রাখা হয়েছে তা কেউ জানে না। কারা কর্তৃপক্ষ নাভালনির মা ও তার আইনজীবীকে বলেছিল, নাভালনির মৃতদেহ পেনাল কলোনি থেকে কাছের শহর সালেখার্দের মর্গে রাখা হয়েছে। কিন্তু তারা সেখানে গিয়ে ওই মর্গ বন্ধ দেখতে পান। পরে মর্গের দরজায় ঝোলানো নম্বরে ফোন করা হলে তারা জানান, নাভালনির মৃতদেহ তাদের মর্গে নেই। এমনটাই জানিয়েছেন নাভালনি শিবিরের মুখপাত্র ইয়ারমিশ।

সালেখার্দ মর্গের একজন কর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে রয়টার্সকেও বলেছেন, নাভালনির মৃতদেহ সেখানে নেওয়া হয়নি। এ নিয়ে খবর প্রচারের পর রুশ কর্তৃপক্ষ তাদের জানান, তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত নাভালনির মৃতদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে না। অথচ, শনিবার সকালে তারা বলেছিলেন, তদন্ত শেষে তারা নাভালনির মৃত্যুর পেছনে কোনো অপরাধমূলক কারণ তারা খুঁজে পায়নি।

সংবাদ মাধ্যমে এক সাক্ষাৎকারে ইয়ারমিশ বলেন, “এই মুহূর্তে আমাদের মৃতদেহের কাছে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। আমরা জানি না সেটি ঠিক কোথায় আছে। আমরা রাশিয়ার কর্তৃপক্ষের কাছে এখনই আলেক্সির মৃতদেহ তার পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।” এদিকে, নাভালনির আকস্মিক মৃত্যু তার সমর্থকদের হতাশ ও ক্ষুব্ধ করেছে। রুশ কর্তৃপক্ষ বিরোধীদলের এই নেতার মৃত্যুর খবর প্রকাশ করার পর শুক্রবারই তার সমর্থকরা রাশিয়ার বিভিন্ন বড় বড় শহরে বিক্ষোভ করেছে। শনিবারও রাশিয়ার অন্তত ৩০টি শহরে বিক্ষোভ হয়। দুই দিনের বিক্ষোভ থেকে প্রায় সাড়ে তিনশ বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।