গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেটের নদীগুলো এখন পানিতে টুইটম্বুর। সুরমা-কুশিয়ারায় পানি প্রবাহিত হচ্ছে বিপদসীমার ওপর দিয়ে। সদর উপজেলার পাশাপাশি সীমান্তবর্তী গোয়াইঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, কানাইঘাট, জৈন্তাপুর ও জকিগঞ্জের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে আছে। এসব এলাকায় পানিবন্দি রয়েছে কয়েক লক্ষাধিক মানুষ।
মঙ্গলবার (১৭ মে) দিনে ও রাতে সিলেট জেলায় বৃষ্টি হয়নি। তবে ভারতের আসাম ও মেঘালয়ের পাহাড়ি এলাকায় বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় সিলেটের বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হওয়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বুধবার (১৮ মে) সকাল পর্যন্ত বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় বেড়েছে দুর্ভোগ। বিপর্যস্ত হয়ে আছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। বিভিন্ন উপজেলায় প্লাবিত এলাকায় বাঁধ ও পাকা রাস্তাসহ বিভিন্ন জায়গায় আশ্রয় নেয়া লোকজন বিশুদ্ধ পানি, খাদ্য ও শৌচাগার সংকটে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস, ওষুধ ও জ্বালানি তেলের দোকান পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় মানবিক বিপর্যয়ের শংকা দেখা দিয়েছে। বন্যাকবলিত এলাকায় বাঁধ ও পাকা রাস্তা ভেঙে যাওয়ায় মানুষজনকে চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
বিভিন্ন উপজেলা ছাড়াও সিলেট নগরীর কয়েকটি এলাকার হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে আছেন। বেশ কয়েকটি আবাসিক এলাকার রাস্তাঘাট এখনও পানির নিচে। বাসাবাড়ি ও সরকারি বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানেও প্রবেশ করেছে পানি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সিলেটের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী এ কে এম নিলয় পাশা জানান, সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির কোন উন্নতি হয়নি। নতুন করে বিভিন্ন উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বাঁধ ভাঙনের খবর সংগ্রহ করছেন তারা।
সিলেট নগরীর জলাবদ্ধতার ব্যাপারে তিনি জানান, নগরীর জলাবদ্ধতার মূল কারণ হচ্ছে ড্রেনেজ সমস্যা। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে বন্যা পরিস্থিতিতে নগরীর দুর্ভোগ আরও বাড়তে পারে।
এদিকে, আবহাওয়া অধিদপ্তর সিলেটের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী জানিয়েছেন, ভারতের আসাম ও মেঘালয়ের পাহাড়ি এলাকায় বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। সিলেটে আগামী ২০-২১ জুন পর্যন্ত বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে। যে কারণে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে।
সিলেট জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম জানান, জেলা প্রশাসনের পক্ষে প্রয়োজনীয় সংখ্যক আশ্রয়কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। এছাড়াও চাল ও শুকনো খাবার বিভিন্ন উপজেলার বন্যার্তদের জন্য বরাদ্দ রয়েছে।
—-ইউএনবি
আরও পড়ুন
চলতি অর্থবছরে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ও দেশগুলোর রেকর্ড পরিমাণ অর্থ ছাড়
সরকারবিরোধীতা বন্ধে এদেশে কর্মরত এনজিও’র ওপর নজরদারির উদ্যোগ
দুই বছর পর দেখা মিললো ‘রাতের রানির’