October 6, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Wednesday, August 23rd, 2023, 3:03 pm

সিলেট-বিয়ানীবাজার ভাঙাচোরা সড়ক, সীমাহীন দুর্ভোগে ১৫ লক্ষাধিক মানুষ

জেলা প্রতিনিধি, সিলেট:

সিলেটের পাঁচ উপজেলার মানুষের প্রধান যোগাযোগ মাধ্যম সিলেট-গোলাপগঞ্জ-জকিগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার সড়ক। এ সড়কটি দিয়ে সিলেট বিভাগের চার উপজেলার ১৫ লক্ষাধিক মানুষ চলাচল করেন।

পাশাপাশি সুতারকান্দি (শেওলা) স্থলবন্দর দিয়ে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে আমদানি রফতানির বিভিন্ন জিনিসপত্র পরিবহন করা হয় এ সড়ক দিয়ে। কিন্তু বড় বড় গর্তের কারণে হেলেদুলে চলছে যানবাহন। কখনও কখনও এসব গর্তে মালবাহী গাড়ি আটকা পড়ে দীর্ঘ যানজটে নাকাল হন যাত্রীরা। দীর্ঘ কয়েক বছর থেকে এ অবস্থা চলতে থাকলেও সড়কটি সংস্কার না করায় সীমাহীন দুর্ভোগ নিয়ে পাঁচটি উপজেলার প্রায় ১৫ লক্ষাধিক মানুষকে চলাচল করতে হয়।

জানা গেছে, সিলেট জেলার গোলাপগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, জকিগঞ্জ, কানাইঘাট ও মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার লাখ লাখ মানুষের যাতায়াতের জন্য সিলেট-জকিগঞ্জ-বিয়ানীবাজার সড়ক গুরুত্বপূর্ণ।

দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে সংস্কারের অভাবে পিচ উঠে গিয়ে বড় বড় গর্ত আর খানাখন্দের সৃষ্টি হওয়ায় যানবাহন এমনকি পথচারীদের চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের কারণে গাড়ি চলাচলের সময় ধুলাবালুতে মানুষের দমবন্ধ হওয়ার উপক্রম হচ্ছে। এক সঙ্গে কয়েকটি গাড়ি এলে ধুলায় ধুসর হয়ে ওঠে পুরো সড়ক। একদিকে সড়কের গর্তে যানবাহন পড়ে প্রতিদিন ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা অপরদিকে যানবাহন গর্তে আটকা পড়ে সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজটের।

সাধারণ মানুষকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে পড়ে থাকতে হয়। প্রয়োজনের তাগিদে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিনিয়ত হাজার হাজার যানবাহন ও লাখো মানুষকে প্রতিদিন এ সড়ক দিয়ে চলাচল করতে হয়। সড়কটির এ বেহাল অবস্থা হওয়ায় পাঁচ উপজেলার কয়েক লক্ষাধিক মানুষকে দুর্ভোগ নিয়ে গন্তব্যে যেতে হয়। একান্ত বাধ্য হয়ে যাতায়াত করলেও সাধারণ মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই।

হাসপাতালগামী রোগী, স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীসহ সর্বস্তরের জনসাধারণকে চলাচলে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ধীরগতিতে যান চলাচলের কারণে গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে সময় লাগছে দ্বিগুণ।

দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে সড়কের এমন দশা থাকলেও কর্তৃপক্ষকে সড়কটি মেরামত করতে উদ্যোগী হতে দেখা যায়নি। যে কারণে সাধারণ লোকজনের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।

চারখাই এলাকার বারইগ্রামের বাসিন্দা জাহিদ আহমদ বলেন, এই সড়ক দিয়ে স্কুল ও কলেজপড়ুয়া শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী এবং নানা শ্রেণি-পেশার হাজার হাজার মানুষ শহরে আসা-যাওয়া করেন। শহরে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা সড়কে যাতায়াত করতে মারাত্মক সমস্যার সম্মুখীন হন।

ব্যবসায়ী কাদির আহমদ বলেন, ব্যবসায়িক কারণে নিয়মিত সিলেটে যেতে হয়। কিন্তু সড়কের বেহালদশার কারণে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয়। রাস্তার করুণ অবস্থা দেখলে মনে হয় না এই এলাকায় কোনো জনপ্রতিনিধি নেই।

বিয়ানীবাজার চেম্বার অব কমার্সের সহ-সভাপতি এনাম উদ্দিন বলেন, এটি অত্যন্ত জনগুরুত্বপূর্ণ রাস্তা। এই সড়ক দিয়ে পাঁচ থানার মানুষ যাতায়াত করেন। কিন্তু সংস্কারের অভাবে সাধারণ মানুষকে চরম দুর্ভোগ নিয়ে যাতায়াত করতে হয়। অতি দ্রুত সড়কটি সংস্কারের জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।

বিয়ানীবাজার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম পল্লব বলেন, আমি এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে জোর দাবি জানাচ্ছি, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ গুরুত্বের সহিত বিবেচনা করে যেন সড়কটি সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। অবিলম্বে সড়কটি সংস্কার করা হোক এবং জনগণকে ভোগান্তির হাত থেকে রেহাই দেয়া হোক।

এ ব্যাপারে সড়ক ও জনপথ বিভাগ সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সড়কের এই অংশের কার্পেটিং উঠে কিছু গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।

একই অবস্থা বিয়ানীবাজার-চন্দরপুর-সিলেট, বিয়ানীবাজার-কালিজুরি-সিলেট সড়কেও। এলজিইডির তত্বাবধানে থাকা এই রাস্তা দু’টি বিভাগীয় শহরের সাথে বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করেন এতদঞ্চলের মানুষ। কিন্তু গত কয়েক বছর থেকে রাস্তাগুলোও ভেঙ্গেচুরে বিপদজনক হয়ে ওঠেছে।