December 4, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Tuesday, June 20th, 2023, 8:55 pm

সিসিক নির্বাচন : রাত পোহালেই ভোট, প্রস্তুত প্রশাসন

জেলা প্রতিনিধি, সিলেট :

আগামীকাল বুধবার সকাল ৮টা থেকে শুরু হবে সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। এরইমধ্যে শুরু হয়েছে কেন্দ্রে কেন্দ্রে ইভিএম মেশিনসহ নির্বাচনী সরঞ্জাম পৌঁছানোর কাজ। পাশাপাশি প্রার্থীরা তাদের শেষ মুহূর্তের প্রত্যাশায় চূড়ান্ত নির্বাচনী কার্যক্রম সম্পন্ন করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। সিসিক নির্বাচন উপলক্ষে প্রশাসনের সকল প্রস্তুতি ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। তবে বৈরি আবহাওয়া আসন্ন এই নির্বাচনে ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে উপস্থিতির হার কমিয়ে দিবে বলে অনেকেই মনে করছেন।
মঙ্গলবার (২০ জুন) সকাল ১০টা থেকে সিটি করপোরেশনের ভোট গ্রহণের নির্ধারিত ১৯০ কেন্দ্রে সরঞ্জাম পৌঁছানোর কাজ শুরু হবার কথা থাকলেও বৃষ্টি বাধা হয়ে দাঁড়ায়। তাই সকাল সাড়ে ১১টার দিকে সিলেটের আবুল মাল আব্দুল মুহিত ক্রীড়া কমপ্লেক্সে কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তার কাছে সরঞ্জাম তুলে দেন সিসিক নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ফয়সাল কাদের।

পরে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে শুরু হয় সরঞ্জাম ট্রাকে তোলার কাজ। বিকেলের মধ্যে সব কেন্দ্রে সরঞ্জাম পৌঁছানো হবে বলে জানান রিটার্নিং কর্মকর্তা ফয়সাল কাদের। ফয়সাল কাদের বলেন, ‘আগামীকাল বৃষ্টি হলে ভোটার উপস্থিতি নিয়ে কিছুটা শঙ্কা রয়েছে। তবে নির্বাচনের পরিবেশ সুষ্ঠু করতে কমিশন থেকে সব রকম প্রস্তুতি রাখা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘১৯০টি কেন্দ্রে মোট ১ হাজার ৭৪৭টি সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে ১২ জন করে আনসার সদস্য থাকবেন। একইভাবে পুলিশ থাকবে ৫ জন। তবে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে পুলিশ থাকবেন ৬ জন। এছাড়াও ১০ প্লাটুন বিজিবি থাকবে মাঠে। থাকবে র‌্যাব ও পুলিশের স্ট্রাইকিং ফোর্স। এমনকি প্রতি ওয়ার্ডে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ে ৪২ জন ম্যাজিস্ট্রেট কাজ করবেন। তাছাড়া বিজিবির প্রতি প্লাটুনের সঙ্গে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট টহলে থাকবেন। নির্বাচন সংশ্লিষ্ট যেকোনো অপরাধের তাৎক্ষণিক বিচারের জন্য ১৪ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এরইমধ্যে মাঠে রয়েছেন।
এদিকে সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনের গুরুত্বপূর্ণ বা ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের তালিকা প্রস্তুত করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তালিকা অনুযায়ী, ১৯০টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৩২টি কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ।

রিটার্নিং কর্মকর্তা ফয়সল কাদের জানিয়েছেন, বর্তমানে ভোটার ৪ লাখ ৮৬ হাজার ৬০৫ জন। মেয়র পদে ৮ জন, সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ২৭৩ জন এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ৮৭ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ১৯০টি কেন্দ্রে মোট ভোটকক্ষ রয়েছে ১ হাজার ৩৬৪টি।

সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন পরিচালনার জন্য প্রতিটি কেন্দ্রে পুলিশ, আনসারসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে। সকাল থেকে নির্বাচনে নিরাপত্তার জন্য সিলেট সিটিতে ১০ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২০ জুন) সকালে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইন্সে এক সংবাদ সম্মেলনে এসএমপি কমিশনার মো. ইলিয়াছ শরিফ এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, নির্বাচনের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে ১জন পুলিশ পরিদর্শক, একজন উপ পুলিশ পরিদর্শক ১ জন ও ৫ জন পুলিশ সদস্য এবং কম ঝুঁকিপূর্ণ ওয়ার্ডে একজন পুলিশ পরিদর্শক, একজন উপ পুলিশ পরিদর্শক ও ৪ জন পুলিশ সদস্য এবং ৭জন নারী ও ৭ জন পুরুষসহ মোট ১৪ জন আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন।
তিনি জানান, নির্বাচন উপলক্ষে প্রতি সাধারণ ওয়ার্ডে একটি করে পুলিশের ৪২টি মোবাইল টিম, প্রতি তিনটি সাধারণ ওয়ার্ডে একটি করে ১৪টি ট্রাইকিং টিম এবং প্রতি থানায় একটি করে ৬টি করে ৬টি রিজার্ভ স্ট্রাইকিং টিম থাকবে। পাশাপাশি থাকবে ২টি ওয়ার্ডে ১টি করে র‌্যাবের মোট ২২টি ও ৫টি ওয়ার্ডে এক প্লাটুন করে মোট ১০ প্লাটুন বিজিবির টহল। এসময় পুলিশ কমিশনার নির্বিঘেœ ভোটদানের জন্য ভোটারদের প্রতি আহবান জানান।

প্রসঙ্গত, আগামীকাল ২১ জুন সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। এই স্থানীয় সরকার নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী হাফিজ মাওলানা মাহমুদুল হাসান, জাকের পার্টির মো. জহিরুল আলম, স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ আবদুল হানিফ কুটু, স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. ছালাহ উদ্দিন রিমন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. শাহজাহান মিয়া ও মোশতাক আহমেদ রউফ মোস্তফা।
এদের মধ্যে দলীয় মনোনীত চার প্রার্থীর মধ্যে আওয়ামী লীগের মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী (নৌকা), জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল (লাঙ্গল), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী হাফিজ মাওলানা মাহমুদুল হাসান (হাতপাখা) ও জাকের পার্টির মো. জহিরুল আলম দলীয় প্রতীক (গোলাপফুল) মার্কায় নির্বাচন করবেন। এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ আবদুল হানিফ কুটু (ঘোড়া), মো. ছালাহ উদ্দিন রিমন (ক্রিকেট ব্যাট), মো. শাহ জাহান মিয়া (বাস গাড়ি) ও মোশতাক আহমেদ রউফ মোস্তফা (হরিণ) প্রতীকে নির্বাচন করছেন।

অপরদিকে ৪২টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৭২ জন ও ১৪টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে নারী কাউন্সিলর পদে ৮৭ জন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, নগরে মোট ভোটার ৪ লাখ ৮৬ হাজার ৬০৫ জন। মেয়র পদে ৮ জন, সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ২৭২ জন এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ৮৭ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ১৯০টি কেন্দ্রে মোট ভোটকক্ষ (বুথ) রয়েছে ১ হাজার ৩৬৪টি।