নিজস্ব প্রতিবেদক:
সীমান জটিলতার মামলার কারণে দেশের বেশ কিছু পৌরসভায় নির্বাচন হচ্ছে না। ফলে আইনের বিধান না মেনে ওসব পৌরসভার কার্যক্রম বারবার প্রশাসক বদল করে অনির্বাচিত ব্যক্তিদের দ্বারা চালানো হচ্ছে। আইনে পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষে নির্বাচিত প্রতিনিধির দায়িত্বের অবসান ঘটানো হচ্ছে। কিন্তু একজন প্রশাসকের মেয়াদ ১৮০ দিন হলেও পরে আরেক জনকে নিয়োগ দিয়ে চলছে পৌরসভা। এ নিয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিচ্ছে। স্থানীয় সরকার বিভাগ সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, পৌরসভায় একজন প্রশাসক আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ ১৮০ দিন থাকতে পারেন। ওই সময়ের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু মামলা-মোকদ্দমার দোহাই দিয়ে অন্তত ১৫টি পৌরসভায় প্রশাসক নির্ধারিত সময়ের থেকে বেশি সময় ক্ষমতা ভোগ করছেন। নির্বাচিত ব্যক্তিরা যেখানে সময়ের চেয়ে বেশিদিন থাকতে পারেন না, সেখানে অনির্বাচিত ব্যক্তির নির্ধারিত সময়ের চেয়ে বেশিদিন ক্ষমতায় থাকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। বিশেষজ্ঞরা এটিকে আইনের বরখেলাপ বলছেন।
সূত্র জানায়, মেয়াদ শেষ হলেও বেশকিছু পৌরসভার নির্বাচন কেন দেয়া যাচ্ছে না সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশন স্থানীয় সরকার বিভাগের সঙ্গে বৈঠকে বসতে আগ্রহী। স্থানীয় সরকার বিভাগের নির্দেশনা ছাড়া কমিশন একক সিদ্ধান্তে স্থানীয় সরকার নির্বাচন তপশিল দিতে পারে না মর্মে আইনে বাধা আছে। স্থানীয় সরকার (পৌরসভা আইন) অনুযায়ী পাঁচ বছরের মেয়াদান্তে সরকারি কর্মচারীসহ সরকার যে কোনো ব্যক্তিকে প্রশাসক নিয়োগ করতে পারবেন মর্মে বিধান রেখে আইন সংশোধন করে। আইন সংশোধন করার মূল উদ্দেশ্য ছিল কেউ যেন মেয়াদ শেষে পদে থাকতে না পারেন। অতীতে একবার নির্বাচিত হলেই পরবর্তীতে ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য মামলা মোকদ্দমা করে দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকতে পারতেন কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, নির্বাচিত প্রতিনিধি থাকতে না পারলেও প্রশাসক হিসেবে অনেকেই আইনের সীমার বাইরে বেশি সময় ধরে প্রশাসক হিসেবে পৌরসভা দখলে রাখছেন। অবশ্য এ ক্ষেত্রে একই ব্যক্তিকে না রেখে ১৮০ দিন পরপর প্রশাসক পালটে নতুন নিয়োগ দেয়া হচ্ছে।
সূত্র আরো জানায়, বেনাপোল স্থলবন্দরের পৌরসভার প্রথম নির্বাচন ২০১১ সালের ১২ জানুয়ারি হয়েছিল। ২০১৬ সালে জানুয়ারিতে মেয়াদ শেষ হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ১৮০ দিনের জন্য পৌর প্রশাসক নিয়োগ দেয়া হয়। এখন ওই মেয়াদ শেষে আবার সহকারী কমিশনার (ভূমি)কে নিয়োগ করা হয়েছে। এভাবে নির্বাচন না হওয়া অন্তত ১৫টি পৌরসভা চলছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব ইব্রাহীম হোসেন জানান, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ইউনিয়ন ও উপজেলা পরিষদের সীমানার সঙ্গে পৌর সীমানা নিয়ে জটিলতা থাকায় তা নিয়ে মামলা চলছে। ফলে এগুলোর নির্বাচন করা যাচ্ছে না। এ বিষয়ে কী করণীয় তা নিয়ে শিগিগর কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করে একটি ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি