October 4, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Monday, September 27th, 2021, 9:38 pm

স্কুল খুললেও শিক্ষার্থীর উপস্থিতি বাড়ছে না ক্লাসে

ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

প্রায় দেড় বছর পর গত ১২ সেপ্টেম্বর সারাদেশে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়। এরপর শুরুর দিকে ক্লাসে প্রায় ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থী উপস্থিত থাকলেও দেশের বিভিন্ন জায়গায় শিক্ষার্থীদের করোনা আক্রান্তের খবরে উপস্থিতি কিছুটা কমেছে। জানা গেছে, গত রোববার মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে ৬০ শতাংশ আর প্রাথমিকে ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থী ক্লাসে উপস্থিত ছিল। সীমিত আকারে স্কুল-কলেজ খোলার পর চলতি বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থী এবং পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সপ্তাহে ছয়দিন আর বাকিদের এক বা দুইদিন করে ক্লাস করানো হচ্ছে। ধীরে ধীরে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বাড়বে বলে সংশ্লিষ্টরা আশা করলেও তুলনামূলক সেটি বাড়ছে না। বরং অনেক জেলায় সেটি কমে যাচ্ছে। ক্লাসে এসে দেশের কোথাও কোথাও শিক্ষার্থীরা করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে। বিশেষ করে মানিকগঞ্জের একটি স্কুলের অষ্টম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী করোনায় মারা যাওয়ার পর অনেকের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন শাখা থেকে জানা গেছে, গত রোববার সারাদেশের ১৬ হাজার ৮০০ স্কুল-কলেজে ৬০ শতাংশ শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিল। এর মধ্যে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির ১৩ লাখ ৭৩ হাজার ২৮৪ জন শিক্ষার্থীর ভেতর ৮ লাখ ৭২ হাজার ৩৩২ জন উপস্থিত ছিল, উপস্থিতির হার ৬৪ শতাংশ। ২০২১ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ৬২ শতাংশ, একাদশে ৫২ শতাংশ এবং দ্বাদশ শ্রেণিতে ৪৪ শতাংশ শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিল। এর আগের দিন সারাদেশে উপস্থিতির হার ছিল ৫৬ শতাংশ। অন্যদিকে সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় ও পঞ্চম শ্রেণির ক্লাস ছিল। এদিন দ্বিতীয় শ্রেণির ২৩ লাখ ৬০ হাজার ৫৫৫ জনের মধ্যে ১৭ লাখ ৯২ হাজার ৪৯১ জন উপস্থিত ছিল। পঞ্চম শ্রেণিতে ২১ লাখ ৬৯ হাজার ৬২৩ জনের মধ্যে ১৭ লাখ ১৭ হাজার ৫১৫ জন উপস্থিত ছিল। উভয় ক্লাসে উপস্থিতির হার ৭৭ দশমিক ৪৭ শতাংশ। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সম্প্রতি মানিকগঞ্জের অষ্টম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর সে একদিন ক্লাসে আসে। এর ছয় থেকে সাতদিন পর করোনা পজিটিভ হয়ে সে মারা যায়। আরেকটি জেলায় দশম শ্রেণির এক ছাত্রী করোনায় আক্রান্ত হলে সেই ক্লাসের সব শিক্ষার্থীর করোনা পরীক্ষা করানো হয়। তবে সেখানে আর কেউ পজিটিভ না হলেও সেই ক্লাসটি আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। এদিকে, কুমিল্লার কচুয়া উপজেলায় একটি বেসরকারি কলেজের একজন শিক্ষার্থী করোনায় আক্রান্ত হলে সেই ক্লাসের সবাইকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। বর্তমানে সেই ক্লাসটি বন্ধ রাখা হয়েছে। সিলেট এমসি কলেজের একজন ছাত্র কয়েক দিন কলেজে না আসায় তার সঙ্গে শিক্ষকরা যোগাযোগ করে জানতে পেরেছেন সেই ছাত্রের করোনা পজিটিভ। তাকে বাসায় থাকতে বলা হয়েছে। সেই ক্লাসের অন্যান্যের পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। মাউশির পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন শাখার পরিচালক অধ্যাপক আমির হোসেন সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বলেন, শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি শুরুতে যা ছিল তাই রয়েছে। সেটি কোনো দিন বাড়ছে আবার কমছে। তবে কেউ তিনদিনের বেশি অনুপস্থিত থাকলে শিক্ষকরা তার খোঁজ-খবর নিয়ে না আসার কারণ জানার চেষ্টা করছেন। তিনি বলেন, দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মনিটরিং করা হচ্ছে। কোনো কোনো জেলায় শিক্ষার্থীরা করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে। কেউ অসুস্থ হলে সেই ক্লাস বন্ধ রেখে সব শিক্ষার্থীকে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। অনেক ছাত্রছাত্রী অসুস্থ, পরিবারের সদস্যরা অসুস্থ থাকার কারণে ক্লাসে আসছে না। অনেকে আবার স্থানান্তর, অভিভাবকের আপত্তিসহ নানা কারণে অনুপস্থিত থাকছে বলে জানান তিনি। অন্যদিকে গত শনিবার রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে এক অনুষ্ঠান শেষে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি সাংবাদিকদের বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। এখনো অতিমারি শেষ হয়নি। যে কেউ যেকোনো সময় করোনায় আক্রান্ত হতে পারে। বড় ধরনের মহামারি দেখা দিলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হবে।