October 8, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Tuesday, June 20th, 2023, 7:42 pm

হাঁটু পানিতে বসেই চলছে পরীক্ষা!

পানিতে ভাসছে টেবিল, বেঞ্চ ও জুতা। পরনের জামাকাপড় ভিজছে। হাঁটুপানিতে বসে আছেন পরীক্ষার্থীরা। এই পানিতে হেঁটেই শিক্ষকরা এনে দিলেন পরীক্ষার খাতা ও প্রশ্নপত্র।

শিক্ষার্থীদের হাতে চলতে শুরু করে কলম। এটি কোনও নদী বা সাগর পাড়ের রোমান্টিক পরীক্ষা আয়োজনের চিত্র নয়। রবিবার (১৮ জুন) দুপুরে কুমিল্লা সরকারি মহিলা কলেজ কেন্দ্রে স্নাতক চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষার দৃশ্য ছিল এমনই!

শিক্ষার্থী, কলেজ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বৃষ্টির কারণে জলাবদ্ধতায় টইটম্বুর কুমিল্লা নগরী। পুরো শহরেই জলাবদ্ধতায় হাঁটু পানি জমে যায়।

তবে নগরীর মনোহরপুর এলাকার সরকারি মহিলা কলেজের পরিস্থিতি পুরোপুরি বেহাল। তুলনামূলক নিচু এলাকা হওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতেই ডুবে যায় মহিলা কলেজ। রবিবার দুপুরের বৃষ্টিতে তলিয়ে যায় কলেজ ক্যাম্পাস।

এসময় পরীক্ষা চলছিল স্নাতক চতুর্থ বর্ষের।

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী নাহিদুল ইসলাম জানান, গতকাল আমাদের চতুর্থ বর্ষ সমাপনী পরীক্ষা ছিল। ১টা ৩০-এ পরীক্ষা শুরু হয়েছিল। বাসা থেকে বের হয়ে হলে যেতে যেতে ভিজে গেছি।

পরীক্ষা শুরুর আগের সামান্য বৃষ্টিতে পুরো কলেজ ক্যাম্পাস পানিতে ভরে যায়।

আমরা হাঁটুপানির মধ্যেই পরীক্ষা দিই। আমার সামনের বন্ধুর প্রবেশপত্র পানিতে পড়ে নষ্ট হয়েছে। সবাই ভিজে গেছে। হাঁটু সমান পানিতে শিক্ষকদের অবস্থাও খারাপ হয়ে যায়।

অনেক শিক্ষার্থীর কাগজপত্র ভিজে গেছে। অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। কলেজের নিচতলা পুরোপুরি ডুবে যাওয়ার অবস্থা হয়ে গেছে।

এর মধ্যে বিদ্যুৎ চলে গেলে পুরো হলে চার্জার লাইট ও মোমবাতির ব্যবস্থা করা হয়। যে কারণে অনেকে পরীক্ষা শেষ না করেই বেরিয়ে পড়েছে।

শিক্ষার্থীরা আরও জানান, পানি প্রবেশের ফলে কলেজ ক্যাম্পাস জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে পোকামাকড়, সাপ ও ময়লা। যা অনেক শিক্ষার্থীর অসুস্থতার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

কুমিল্লা সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর হাসনাত আনোয়ার উদ্দীন আহমেদ বলেন, সামান্য বৃষ্টিতে পুরো কুমিল্লাই ডুবে যায়। মহিলা কলেজ তো একটি অংশ মাত্র।

তিনি বলেন, কলেজটি বেশ পুরনো। ভবনগুলোও পুরনো। শহরের সমতলভূমি থেকে কালক্রমে কলেজ ক্যাম্পাস নিচু হয়ে পড়েছে। তাই পানি বেশি প্রবেশ করে আমাদের ক্যাম্পাসের অবস্থা খারাপ হয়ে যায়।

এই সমস্যার বিষয়ে তিনি আরও বলেন, টমছম ব্রিজ থেকে যে খালটি পদুয়ার বাজার বিশ্বরোডের দিকে গেছে সেটি ভরাট করে রাস্তা করা হয়েছে। তাই এখন খালটি ড্রেনের মতো। পানি যেতে পারে না। সেই পানি আমাদের ক্যাম্পাসের দিকে চাপ দেয়। যার ফলে আমাদের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা নিরুপায় হয়ে ভিজে ভিজেই শিক্ষা কার্যক্রমে অংশ নেন।

যদি নতুন ভবন করা হয় তবেই উঁচু করে তৈরি সম্ভব। আমরা প্রস্তাবনা রাখছি, যেন আমাদের নতুন ভবন করে দেওয়া হয়। এ ছাড়াও সিটি কর্পোরেশনকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। তারা ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছে।

—-ইউএনবি