November 9, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Friday, February 24th, 2023, 7:53 pm

হৃদরোগের চিকিৎসায় বাংলাদেশ প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, গত ১৪ বছরে বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও দেশের স্বাস্থ্যখাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন কার্ডিয়াক কেয়ারে প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ। বাংলাদেশের ৯৫ থেকে ৯৮ শতাংশ কার্ডিওভাসকুলার রোগের চিকিৎসার ক্ষমতা রয়েছে কারণ দক্ষ জনশক্তি, আধুনিক প্রযুক্তি ও যন্ত্রপাতি দেশে এখানে পাওয়া যায়।’

শুক্রবার রাজধানীর বাংলাদেশ কার্ডিওভাসকুলার রিসার্চ ফাউন্ডেশন (বিসিআরএফ) আয়োজিত তৃতীয় আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে প্রচারিত এক ভিডিও বার্তায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

তিনি প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত দুই দিনব্যাপী এ সম্মেলনের উদ্বোধন করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, স্বাস্থ্যসেবা এখন অনেক বেশি সহজলভ্য এবং সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছেছে।

তিনি বলেন, হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ও চিকিৎসকরা দেশের রোগীদের উন্নত চিকিৎসা সেবা প্রদান করায় দেশের মানুষ উপকৃত হচ্ছে এবং এভাবে (দেশের) বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, দেশে শিশু কার্ডিয়াক রোগীদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় একটি পূর্ণাঙ্গ পেডিয়াট্রিক কার্ডিয়াক ইউনিট স্থাপনের কাজ চলছে।

তিনি আরও বলেন, ‘অন্যান্য সরকারি হাসপাতালেও এই ধরনের সুবিধা সম্প্রসারণের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিশু হৃদরোগের চিকিৎসার পরিধি বাড়াতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ পেডিয়াট্রিক কার্ডিওলজি এবং পেডিয়াট্রিক কার্ডিয়াক সার্জারি ইউনিট স্থাপনের ফলে শিশু হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ তৈরির সুযোগ বাড়ানো হয়েছে।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫০০ শয্যার একটি বিশ্বমানের ‘ইনস্টিটিউট অব কার্ডিওভাসকুলার সায়েন্স অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট’ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

দেশে কার্ডিয়াক রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রধানমন্ত্রী হৃদরোগ সংক্রান্ত প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার ওপর জোর দেয়ার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘খাদ্য, শারীরিক পরিশ্রমের অভাব, ধূমপান এবং অতিরিক্ত ডায়াবেটিসসহ নানা কারণে দেশে দিন দিন হৃদরোগীর সংখ্যা বাড়ছে। কার্ডিওভাসকুলার রোগের যত্নের বিকাশের পাশাপাশি আমাদের প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার দিকেও মনোযোগ দিতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, হৃদরোগ বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) মতে, বিশ্বে প্রতি বছর প্রায় ১৭ দশমিক ৯ মিলিয়ন মানুষ কার্ডিওভাসকুলার রোগের কারণে মারা যায়।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে মোট মৃত্যুর প্রায় ২৭ শতাংশই কার্ডিওভাসকুলার রোগের কারণে। বর্তমানে দেশে প্রতি হাজারে ১০ জন শিশু কার্ডিওভাসকুলার রোগে ভুগছে। বাংলাদেশে প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজন তরুণ হৃদরোগের ঝুঁকিতে রয়েছে।’

স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে তার সরকারের পদক্ষেপের প্রতি দৃষ্টি নিবদ্ধ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি জেলায় একটি মেডিকেল কলেজ নির্মাণের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, মেডিকেল কলেজের সংখ্যা ২০০৯ সালে ৫০টি থেকে এখন ১১৫টিতে উন্নীত হয়েছে, যেখানে এমবিবিএস কোর্সের আসন সংখ্যা ২০০৯ সালে মাত্র ২ হাজার ৫০টি থেকে ১০ হাজার ৭৮৯ এ দাঁড়িয়েছে।

তিনি বলেন, তার সরকার প্রতিটি বিভাগে একটি করে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ করবে এবং ইতোমধ্যে চারটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হয়েছে।

অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, তৃতীয় বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে তাদের অংশগ্রহণ কার্ডিয়াক বিশেষজ্ঞদের মধ্যে জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতা শেয়ার করার একটি অনন্য সুযোগ তৈরি করেছে।

—ইউএনবি