October 3, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Friday, September 24th, 2021, 9:04 pm

২৬ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে ইউজিসির সতর্কতা

অনলাইন ডেস্ক :

দেশের ২৬ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা ধরনের সমস্যা থাকায় সেখানে ভর্তি হয়ে জটিলতায় না পড়তে গত বৃহস্পতিবার রাতে এ সতর্কতা জারি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। পরবর্তীতে এসব প্রোগ্রাম ও শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেট বাতিল হলে তার দায়ভার ইউজিসি নেবে না বলেও গণবিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে। ইউজিসির গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী বর্তমানে সারাদেশে ১০৮টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে নয়টিতে এখনও শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়নি। ৯৯টিতে শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। এছাড়া ছয়টি বিশ্ববিদ্যালয় সরকার অনুমোদন দিলেও এখনো শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমতি দেওয়া হয়নি। এগুলো হলো রূপায়ণ এ কে এম শামসুজ্জোহা বিশ্ববিদ্যালয় (নারায়ণগঞ্জ), রাজশাহীর আহছানিয়া মিশন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, শাহ মখদুম ম্যানেজমেন্ট ইউনিভার্সিটি, খুলনা খান বাহাদুর আহছানউল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকার মাইক্রোল্যান্ড ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি এবং সদ্য অনুমোদন পাওয়া কিশোরগঞ্জের শেখ হাসিনা ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি। দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় আগেই বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের তথ্য অনুযায়ী একেকটি বিশ্ববিদ্যালয় একেক ধরনের সঙ্কটে আছে। এর মাঝে ইবাইস ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্ট্রিজ দুই ভাগে বিভক্ত এবং পরস্পরের বিরুদ্ধে আদালতে একাধিক মামলা চলছে। বর্তমানে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদিত কোনো ঠিকানা নেই। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়টিতে রাষ্ট্রপতির নিয়োগ করা উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ নেই। ইউজিসি জানিয়েছে এ বিশ্ববিদ্যালয়টি অবৈধভাবে ক্যাম্পাস পরিচালনা করছে। আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি সরকার বন্ধ ঘোষণা করেছিল। তবে আদালতের স্থগিতাদেশ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টি পরিচালিত হচ্ছে। কুইন্স ইউনিভার্সিটি সরকার বন্ধ করে দিয়েছিল। এ নিয়ে মামলা-মোকদ্দমা হয়। পরে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ২০১৫ সালে এক বছরের জন্য সাময়িক শর্তসাপেক্ষে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার চিঠি দেয়। কিন্তু ওই নির্ধারিত সময়ে তারা শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি। দি ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লা ১৯৯৫ সালে অনুমোদন পেয়েছিল। কিন্তু আইন না মানায় ২০০৬ সালে সরকার এটি বন্ধ ঘোষণা করে। এ নিয়ে আদালতে যায় বিশ্ববিদ্যালয়টি। পরে আদালত বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে রায় দেন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়টির বোর্ড অব ট্রাস্টিজ দুই ভাগে বিভক্ত এবং একে অপরের বিরুদ্ধে মামলা চলমান। বিশ্ববিদ্যালয়টির বর্তমান অনুমোদিত ঠিকানা রাজধানীর উত্তরায়। ইউজিসি গত বছর সেখানে সরেজমিনে পরিদর্শনে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো অস্তিত্ব পায়নি। এশিয়ান ইউনিভার্সটি বাংলাদেশের বিষয়ে ইউজিসি বলেছে বাংলায় বিএ (অনার্স) সহ কয়েকটি প্রোগ্রাম ২০২১ সালের ‘স্প্রিং সেমিস্টার’ থেকে পরবর্তী নির্দেশ না পর্যন্ত শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ থাকবে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়টিতে রাষ্ট্রপতির নিয়োগ করা উপাচার্য, উপ-উপাচার্য এবং কোষাধ্যক্ষ পদে বৈধ কোনো কর্তৃপক্ষ নেই। টাইমস ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশকে ২০১৫ সালে ১০টি প্রোগ্রামের অনুমোদনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কর্তৃপক্ষ ইউজিসির অনুমোদনের আগেই বিবিএসহ কয়েকটি প্রোগ্রামে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা শুরু করে। সাউদার্ন ইউনিভার্সিটির অনুমোদিত ক্যাম্পাসের ঠিকানা হলো চট্টগ্রামের মেহেদীবাগ এবং শহীদ মির্জা লেনে। আদালতের রায় অনুযায়ী এই দুটি ক্যাম্পাস ছাড়া অন্যান্য সব ক্যাম্পাস অবৈধ। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে আদালতে একাধিক মামলা বিচারাধীন রয়েছে। কয়েকটি শিক্ষা প্রোগ্রামের বিষয়ে আদালতের স্থগিতাদেশ নিয়ে চলা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় আছে গণ বিশ্ববিদ্যালয়। এটিতে রাষ্ট্রপতির নিয়োগ করা উপাচার্য ও উপ-উপাচার্য নেই। প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটিতে রাষ্ট্রপতির নিয়োগ করা উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ নেই। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সাবেক চেয়ারম্যানের অর্থ আত্মসাতের বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দুর্নীতি দমন কমিশনে পাঠানো হয়েছে। অননুমোদিত কিছু ক্যাম্পাস পরিচালনা করেছে চারটি বিশ্ববিদ্যালয়। এগুলো হলো ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অলটারনেটিভ, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ এবং সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটি। কোন কোন ক্যাম্পাসগুলো অননুমোদিত সেটিও বলা আছে গণবিজ্ঞপ্তিতে। বোর্ড অব ট্রাস্টিজ নিয়ে দ্বন্দ্ব থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ইবাইস ছাড়াও আছে সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, কুমিল্লার ব্রিটানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, সাউদার্ন ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ এবং কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি। অননুমোদিত প্রোগ্রাম পরিচালনা করছে চারটি বিশ্ববিদ্যালয়। এর মধ্যে জেড এইচ সিকদার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, পুন্ড্র ইউনিভার্সিটি অফ সাইন্স অ্যা ন্ড টেকনোলজি এবং সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে অননুমোদিত বিভিন্ন বিষয়ে পড়ানো হচ্ছে।