October 13, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Monday, November 1st, 2021, 9:25 pm

৭০০ একর জমির বরাদ্দের স্থগিতাদেশ আপিলেও বহাল

ফাইল ছবি

অনলাইন ডেস্ক :

সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য প্রশিক্ষণ একাডেমি নির্মাণ করতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সংলগ্ন ঝিলংজা বনভূমির ৭০০ একর জমির বরাদ্দ স্থগিত করে হাইকোর্ট যে আদেশ দিয়েছিলেন, সেটি বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। সোমবার (১লা নভেম্বর) বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের চেম্বার আদালত এ আদেশ দেন। এর আগে এ-সংক্রান্ত রিটের শুনানি নিয়ে ১১ অক্টোবর হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিঞা ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দিয়েছিলেন। এই আদেশের পর আপিল বিভাগে যায় রাষ্ট্রপক্ষ। আদালতে সেদিন রিটের পক্ষে শুনানি করেন সাবেক ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শেখ একেএম মনিরুজ্জামান কবির। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার। আইনজীবী শেখ একেএম মনিরুজ্জামান সেদিন বলেন, এর আগে পত্রিকায় ‘৭০০ একর বনভূমি প্রশাসন একাডেমির জন্য বরাদ্দ’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনটি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে উপস্থাপন করে নজরে এনেছিলাম। কিন্তু আদালত আদেশ না দিয়ে রিট আবেদন করতে বলেন। পরে গত ৩ অক্টোবর রিট আবেদন করি। ওই রিটের শুনানি হয় আজ। শুনানি শেষে হাইকোর্ট সরকারি কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ একাডেমি নির্মাণের লক্ষ্যে কক্সবাজারে মেরিন ড্রাইভের পাশে রক্ষিত বনভূমির ৭০০ একর জায়গা বরাদ্দের আদেশ স্থগিত করেছেন। একইসঙ্গে ওই বরাদ্দের আদেশ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করেছেন আদালত। তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে রিটটি করেছিলাম যে, যার জমি সে দিচ্ছেন না আরেকজন এসে দিচ্ছে, এই অবস্থায় দেখুন কী করা যায়। আর ২১০০ বিঘা জমি কেন নষ্ট হবে। বন ও প্রাণী দুটোই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বন সংরক্ষণ আইনে তো পরিষ্কার বলা আছে বন মন্ত্রণালয়ের যতো সম্পত্তি আছে বনের ভেতরে থাকবে, এখানে বন্যপ্রাণী থাকবে। তাদের চলাচলের পথ পরিষ্কার থাকবে। যাতে তাদের অবাধ বিচরণে কোনোরকম বাধা না আসে। এটা তো আইনে বলা আছে, শুধু তাই না পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সভাপতি হলেন সাবের হোসেন চৌধুরী, তিনি সংসদে বিষয়টি উত্থাপন করেছিলেন। আমাদের উপেক্ষা করে ভূমি মন্ত্রণালয় এই জমি বরাদ্দ দিয়েছে। সেসব বিষয় নিয়ে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছিল, ওইসব নিয়ে করা রিটের শুনানিতে বরাদ্দটি তিন মাসের জন্য স্থগিত হলো। এ ছাড়া চারজন বিবাদীর প্রতি তারা কেন বরাদ্দ দিলেন সেটি কেন বাতিল করা হবে না জানতে চেয়ে শোকজ রুল জারি করেছেন আদালত। পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সংলগ্ন ঝিলংজা বনভূমির ওই এলাকা প্রতিবেশগতভাবে সংকটাপন্ন। বন বিভাগ এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির আপত্তি উপেক্ষা করে গত ৫ সেপ্টেম্বর ভূমি মন্ত্রণালয় এই জমি বরাদ্দ দিয়েছে। তবে বন বিভাগের দাবি, এই জমি তাদের। ১৯৩৫ সালে ব্রিটিশ সরকার একে রক্ষিত বন ঘোষণা করে। বন বিভাগ এত বছর ধরে এটি রক্ষণাবেক্ষণ করছে। বিপন্ন এশীয় বন্য হাতিসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ বন্য প্রাণীর নিরাপদ বসতি এই ঝিলংজা বনভূমি। বন আইন অনুযায়ী, পাহাড় ও ছড়াসমৃদ্ধ এই বনভূমির ইজারা দেওয়া বা না দেওয়ার এখতিয়ার কেবল বন বিভাগের। কিন্তু জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এই জমি বরাদ্দ নিয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে। পরিবেশ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী, প্রতিবেশগতভাবে সংকটাপন্ন এ বনভূমিতে কোনো ধরনের স্থাপনা নির্মাণ করা নিষেধ। এ কারণে বন বিভাগ থেকে ‘এই ভূমি বন্দোবস্তযোগ্য নয়’ উল্লেখ করে বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি দেওয়া হয়।