ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালটি চলতি বছরের অক্টোবরের মধ্যে আংশিকভাবে চালু করা হবে।
রবিবার (৬ আগস্ট) বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মুহাম্মদ মফিদুর রহমান ইউএনবিকে এসব জানান।
তিনি বলেন, টার্মিনালের নির্মাণ কাজ বর্তমানে চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে এবং এখন পর্যন্ত ৮৫ শতাংশেরও বেশি কাজ শেষ হয়েছে।
ঢাকা বিমানবন্দরের নতুন টার্মিনালটির আয়োতন ৫ লাখ ৪২ হাজার বর্গমিটার। এটি পুরোপুরি চালু হলে বছরে ১ কোটিরও বেশি যাত্রীসেবাসহ অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধাও দিতে সক্ষম হবে।
তিনি বলেন, নির্মাণ কাজ শেষ পর্যায়ে থাকায় তৃতীয় টার্মিনাল ভবনের দৃষ্টিনন্দন স্থাপত্য এখন দৃশ্যমান। বর্তমানে অভ্যন্তরীণ সাজসজ্জা এবং বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি স্থাপনের কাজ চলছে।
বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, বর্তমানে ৩০টিরও বেশি এয়ারলাইনসের ১২০ থেকে ১৩০টি উড়োজাহাজ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের টার্মিনাল-১ ও টার্মিনাল-২ থেকে উড্ডয়ন ও অবতরণ করে।
প্রতিদিন প্রায় ২০ হাজার যাত্রী বিমানবন্দরের দু’টি টার্মিনাল ব্যবহার করেন। সে হিসেবে ঢাকা বিমানবন্দর বছরে প্রায় ৮০ লাখ যাত্রীকে সেবা দেয়। তৃতীয় টার্মিনাল চালু হলে অতিরিক্ত ১ কোটি ২০ লাখ যাত্রীকে সেবা দেওয়া সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নতুন টার্মিনালে একটি পার্কিং অ্যাপ্রোন থাকবে যা ৩৭টি উড়োজাহাজ ধারণ করতে সক্ষম হবে। এতে ২৬টি বোর্ডিং ব্রিজের ব্যবস্থাও থাকবে। এর মধ্যে আগামী অক্টোবরে ১২টি বোর্ডিং ব্রিজ চালু করা হবে।
দ্রুত, আরও ভালো সেবা
যাত্রীদের দ্রুত ও উন্নত সেবা প্রদানের জন্য পাঁচটি স্বয়ংক্রিয় কাউন্টারসহ মোট ৫৯টি কাউন্টার থাকবে। এ ছাড়া তৃতীয় টার্মিনালে ১৬টি ব্যাগেজ বেল্ট এবং অতিরিক্ত ওজনের ব্যাগেজের জন্য চারটি আলাদা বেল্ট স্থাপন করা হবে।
টার্মিনালে ১৫টি সেলফ-সার্ভিস কাউন্টারসহ ১১৫টি চেক-ইন কাউন্টার এবং ১০টি স্বয়ংক্রিয় পাসপোর্ট কন্ট্রোল কাউন্টারসহ ৬৬টি প্রস্থান ইমিগ্রেশন কাউন্টার থাকবে।
সিএএবি সূত্র জানায়, বিশ্বমানের টার্মিনালে ১ হাজার ৪৪টি গাড়ি ধারণক্ষমতাসম্পন্ন বহুতল গাড়ির পার্কিংও নির্মাণ করা হচ্ছে।
গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের কাজ পাচ্ছে জাপান
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং প্রসঙ্গে বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, সরকার তাদের দক্ষতার জন্য জাপানকে এই দায়িত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
নতুন টার্মিনালের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং ও রক্ষণাবেক্ষণ পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) মডেলের মাধ্যমে পরিচালিত হবে।
আঞ্চলিক বিমান চলাচল কেন্দ্রে পরিণত হতে আরও একধাপ এগিয়ে ঢাকা
বিমান প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী ইউএনবিকে বলেন, তৃতীয় টার্মিনাল ভবন নান্দনিক নকশায় সাজানো হয়েছে।
এ ছাড়া ৬৩ হাজার বর্গফুট জায়গায় আমদানি-রপ্তানি কার্গো কমপ্লেক্সের কাজ চলছে।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ২৮ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা বিমানবন্দরের যাত্রী ও কার্গো হ্যান্ডলিং সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২১ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকার এই প্রকল্পের নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করেন।
এতে মোট ব্যয়ের মধ্যে সরকার ৫ হাজার ২৫৭ কোটি টাকা দেবে এবং বাকি অর্থ দেবে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)।
ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণের কাজ করছে জাপানের মিতসুবিশি, ফুজিটা ও দক্ষিণ কোরিয়ার স্যামসাং।
—-ইউএনবি
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি