জেলা প্রতিনিধি, রংপুর (গঙ্গাচড়া) :
রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদ তামান্না ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) নয়ন কুমার সাহার উদ্যোগে অক্সিজেন ও মেডিসিন রোডের পরে এবার ব্যানানা স্ট্রিট নামকরণ করে একটি রাস্তায় নানা জাতের কলাগাছ লাগানো হয়েছে। এক সময় বাড়ির আনাচেকানাচে সামান্য জায়গায় পুষ্টি সমৃদ্ধ বিভিন্ন জাতের কলাগাছ লাগিয়ে ছিলো গ্রামের মানুষজন। দু-একটি কলাগাছ চারা লাগিয়েই তা নষ্ট না করলে দীর্ঘ বছর ধরে এর সুফল পেত মানুষজন। কিন্তু আগেরমত এখন আর পুষ্টি সমৃদ্ধ কলাগাছ লাগানোর ঐতিহ্য গ্রামে নেই বললেই চলে । বাড়ির আশপাশে পরিত্যক্ত জায়গা যেগুলো চাষাবাদ অনুপযোগী মূলত সেখানেই কলাগাছ লাগানো হত এবং কোন পরিচর্চা ছাড়াই সুফল পেত। হারিয়ে যাওয়ার পথে সেই ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে প্রত্যেকের বাড়ির আনাচে কানাচে পরিত্যক্ত জায়গায় দু-একটি কলাগাছ চারা লাগানোকে উৎসাহিত করতে রাস্তার ধারে কলাগাছ লাগানোর এই উদ্যোগ নেয় উপজেলা প্রশাসন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদ তামান্নার সার্বিক দিকনির্দেশনা ও পরামর্শ মোতাবেক সহকারী কমিশনার (ভূমি) নয়ন কুমার সাহার উদ্যোগে বিভিন্ন জাতের কলাগাছের চারা রোপন করা হয়েছে । বড়বিল ইউনিয়নের পাকুরিয়া শরিফ পাল্লার বাজার হতে পশ্চিম বড়বিল তন্দুরের মোড় পর্যন্ত রাস্তার ধারে বিভিন্ন জাতের কলাগাছের চারা লাগানো হয়েছে । আড়াই শতাধিক চারা রোপন কাজ চলছে। গত দুদিনে দেড় শতাধিক চারা রোপন করা হয়েছে। এর মধ্যে বিচি কলা (আটিয়া কলা), সবরি কলা (মালভোগ), চিনিচাম্পা, অগ্নিস্বর (লাল কলা), সাগর কলা সহ বিভিন্ন জাতের কলা গাছের চারা রোপন করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদ তামান্না ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) নয়ন কুমার সাহা ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহীদ চৌধুরী দীপসহ স্থানীয়দের সাথে নিয়ে চারা রোপন করেন।
এমন উদ্যোগে স্থানীয় মানুষজন উপজেলা প্রশাসনকে সাধুবাদ জানিয়েছে। এলাকার কালাম, মানিক, রিপন, ছালাম, করিম, আলালসহ অনেকে জানান, আগে গ্রামের প্রতিটি বাড়ির পাশে অকেজো জায়গায় কোন না কোন জাতের কলাগাছ ছিল। এখন আর সেরকম নেই। এ উদ্যোগে অনেকে উৎসাহিত হবে। সহকারী কমিশনার (ভূমি) নয়ন কুমার সাহা বলেন, কলা একটি উচ্চ পুষ্টিসম্পন্ন ফল। নতুন সৃজিত রাস্তা সমূহের পাশে গাছ লাগানোর উদ্যোগের অংশ হিসেবে ব্যানানা স্ট্রিট নামকরণ করে এখানে কলা গাছ রোপন করা হচ্ছে। বিভিন্ন রাস্তায় আমরা বিভিন্ন ধরনের গাছ লাগাচ্ছি। গ্রামের সাধারণ মানুষ স্বত:স্ফূর্তভাবে এ কাজে অংশগ্রহণ করেছে ।
আমরা বিশ্বাস করি এর ফলে মানুষও বৃক্ষ রোপনে উৎসাহিত হবে। বৃক্ষরোপণ উৎকৃষ্ট বিনিয়োগ। মানুষকে আমরা এই বিষয়টি বোঝানোর চেষ্টা করছি। এতে রাস্তার সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাবে, রাস্তার ক্ষয় রোধ হবে পাশাপাশি এলাকাবাসী ফরমালিন মুক্ত ফল পাবে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদ তামান্না বলেন, গ্রাম-গঞ্জে চাষকৃত কলা এখন হারিয়ে যেতে বসেছে। বিভিন্ন এলাকায় বানিজ্যিকভাবে চাষ করা হচ্ছে। কিন্তু প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সে কলা বাজারজাত করা হয়। ফলে সঠিক পুষ্টিগুন থাকেনা। তাই পুষ্টি সমৃদ্ধ কলা গাছ সবাই যেন একটা করে রোপন করে, সে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষে এ উদ্যোগ। উপজেলা প্রশাসন উপজেলার উন্নয়নকল্পে সাম্প্রতিককালে বিভিন্ন ছোট ছোট উদ্যোগ নিয়েছে যা সাধারণ মানুষের কাছে সমাদৃত হয়েছে। এই উদ্যোগ গুলোর ফল অদূর ভবিষ্যতে সাধারণ মানুষ পাবে।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি