অতিথি পাখিদের আগমনে মুখরিত এখন রাণীসাগর দিঘি। পাখি দেখতে দর্শনার্থীদের ভিড়ও বেড়েছে। পুরো দিঘির জলাশয় সেজেছে নতুন সাজে। দেশের বাইরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পাখি ও জলাশয়ের প্রাকৃতিক নয়নাভিরাম দৃশ্যে সত্যিই মনোমুগ্ধকর। প্রতি বছর শীত এলেই এসব পাখি এখানে এসে প্রকৃতিকে সাজায় নতুন সাজে।
পাখিদের কলতানে পুরো দিঘি এলাকা পরিণত হয়েছে পাখির স্বর্গরাজ্যে। সন্ধ্যা নামলেই দিঘিপাড়ের লিচু বাগানে আশ্রয় নেয় এসব পাখি। ভোর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুনরায় খাবারের সন্ধানে রামরাই দিঘিতে ভিড় জমায় তারা।
রাণীশংকৈল উপজেলা শহর থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে উত্তরগাঁও গ্রামের নিকটেই বরেন্দ্র অঞ্চলের দ্বিতীয় বৃহত্তর জলাশয় রাণীসাগরের অবস্থান।
ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার একমাত্র সরকারি পর্যটন কেন্দ্র রামরাই দিঘি। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখির সমাগম হয়েছে এখানে। পাখিদের কলকাকলিতে পুরো এলাকা মুখরিত। পাখিপ্রেমি ও সৌন্দর্য পিপাসুরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মন্ডিত পর্যটন কেন্দ্রের পাখিগুলোকে দেখার জন্য ছুটে আসেন।
কিন্তু স্থানীয় ও পর্যটকদের মতে, কিছু লোক লেকে পোল্ট্রি বর্জ্য ফেলে পানি দূষিত করায় অতিথি পাখিরা এখন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
পর্যটকদের প্রায়ই হ্রদে বা এর তীরে ফেলা বর্জ্য থেকে নির্গত দুর্গন্ধ থেকে সুরক্ষার জন্য মুখ ঢেকে রাখতে দেখা যায়। তবে কর্তৃপক্ষের এই বিষয়ে যথেষ্ট কোনো ব্যবস্থা নেই।
প্রচণ্ড শীতের কারণে সাইবার অঞ্চল থেকে আসা পাখিগুলো নোংরা ময়লা আবর্জনা দুর্গন্ধযুক্ত পানিতে থেকে নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। পাখিগুলো সারাদিন রামরাই রাণীসাগরে আহার করে সন্ধ্যা হলে আসে পাশের জলাশয়গুলোতে আশ্রয় নেয়। সকাল হলেই আবার রাণীসাগরে ফিরে এসে খাবার সংগ্রহ করে।
সৈয়দপুরের সেলিনা বেগম জানান, রাণীসাগরে অনেক পাখি আসে শুনে দেখতে এসেছি। এখানে এসে মনটা ভরে গেল। পুকুরের চারিদিকের শত শত লিচু গাছ দেখতে বেশ মনোরম। পুকুরের নীচ থেকে পাড়ের দিকে তাকালে মনে হয় আকাশের সাথে মিশে আছে।
সোলেমান আলী নামে একজন ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, শত শত বছরের প্রাচীন ঐতিহ্য রাণীসাগরে মুরগির বিষ্ঠা ফেলে পানি দূষিত করা হচ্ছে। ফলে পানিতে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।
হোসেনগাঁও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাহবুব আলম বলেন, প্রতি বছর দুর দুরান্ত থেকে লোকজন এখানে অতিথি পাখিদের দেখতে আসে। কাউকে পাখি শিকার করতে দেয়া হয় না। রামরাই দিঘিকে পুরোপুরিভাবে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
রাণীশংকৈল উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইন্দ্রজিৎ সাহা জানান, রামরাই দিঘি বা রাণীসাগরকে আধুনিক পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হবে। ইতোমধ্যে এটি রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
—ইউএনবি
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি