November 25, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Wednesday, September 22nd, 2021, 12:27 pm

‘অন্যের বউকে চুরি’ করে পালানোর উৎসব হয় যে অঞ্চলে

অনলাইন ডেস্ক :

বিশ্বের প্রতিটি দেশেরই আছে নিজস্ব কিছু নিয়ম নীতি। এই যেমন আফ্রিকার বিভিন্ন অঞ্চলের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠিরা উদ্ভট কিছু রীতি অনুশীলন করে। যেগুলো অন্যান্যের কাছে উদ্ভট, হাস্যকর কিংবা অমানবিক বলে মনে হয়।

পশ্চিম আফ্রিকার নাইজারের যাযাবর ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠি ওডাআবে যুগ যুগ ধরে পালন করে আসছে ‘বউ চুরি উৎসব’। খানিকটা অবাক করা হলেও সত্যিই এমনও এক ধরনের উৎসব পালিত হয় পশ্চিম আফ্রিকায়।

উৎসবে ‘অন্যেও বউকে চুরি’ করেন সেখানকার পুরুষরা। এ কারণেই এটি ‘বাউ চুরির উৎসব’ নামেই পরিচিত। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠিরা একে ‘গেরেওল উৎসব’ বলে থাকেন। তবে অন্যেও বউকে চুরি করা হলেও এতে নেই কোন শাস্তি।

প্রতিবছর সেপ্টেম্বর মাসে শুরু হয় ‘বউ চুরির উৎসব’, চলে এক সপ্তাহ ধরে।

অন্যের বউকে চুরি করে পুরুষের ক্ষমতা প্রদর্শন করাই ‘গেরেওল উৎসব’ এর মূল আকর্ষণ। ওডাআবে পুরুষদের ধারণা, তাদের সৌন্দর্য লুকিয়ে থাকে চোখের ধবধবে সাদাভাব, লম্বা নাক ও ঝকঝকে সাদা দাঁতে। এভাবেই পুরুষরা প্রতিযোগিতার জন্য নিজেদের তৈরি করেন।

সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হলো, যেসব পুরুষ অন্যের বউকে নিয়ে পালায়, তাদের স্ত্রীরা এই উৎসবে অংশ নেন। আগের সম্পর্ক ভেঙে নতুন করে জীবন গড়ার স্বপ্ন দেখেন। যা বিভিন্ন ধর্ম ও সামাজিক আইনে অবৈধ।

উৎসবে নাচ-গান ও হৈ-হুল্লোড়র পাশাপাশি চলে খাওয়া-দাওয়া।

এছাড়াও ওডাআবে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠির মেয়েরা বিয়ের আগে যার সঙ্গে ইচ্ছে সম্পর্কে যেতে পারে। এসব বিষয় তাদের কাছে খুবই স্বাভাবিক ও বৈধ। আবার বিয়ের পরও তারা যত খুশি স্বামী রাখতে পারেন। এই ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠির নারী ও পুরুষ তাদের শারীরিক সৌন্দর্য নিয়ে গর্ববোধ করে।

এই প্রতিযোগিতায় বিচারক হন এই ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠির সেরা তিনজন বিবাহিত নারী। তারাই সেরা পুরুষদেরকে বেছে নেন। আর বাছাইয়ের পর সেরা পুরুষরা তাদের পছন্দসই নারীকে বেছে নিতে পারেন। ওডাআবে সমাজে এই অমানবিক কর্মকাণ্ডই বৈধ বলে বিবেচিত।

এই প্রতিযোগিতার পরেই শুরু হয় বউ চুরি উৎসব। নৃত্য প্রতিযোগিতা চলাকালীন পুরুষরা নাচের মাধ্যমে নারীদেরকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করেন। অনেক নারীই তাদেরকে সঙ্গী হিসেবে পেতে চান। তবে নৃত্যরত পুরুষ যাকে চান তাকে তিনি পরে খুঁজে নেন।

প্রতিযোগিতা শেষে ওই নারীকে ভিড়ের মধ্যে খুঁজে সুযোগ নিয়ে তার কাঁধে টোকা দেন। সেই ডাকে সাড়া দেয় নারীও। এরপর পরস্ত্রীকে নিয়ে পালিয়ে যান ওই পুরুষ। বউ চুরি করে ধরা না পড়লে ওই নারীর সমাজ স্বীকৃত দ্বিতীয় স্বামী হয়ে যান পুরুষটি।

এদিকে ওই নারীর সংসারে রেখে যাওয়া সন্তানদের লালন-পালনের দায়িত্ব নেয় তার পরিবার। এই উৎসবটি তাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য প্রতিবছরের সেপ্টেম্বর মাস নিয়ে তাদের জল্পনা কল্পনা থাকে তুঙ্গে।