চট্টগ্রাম আদালতে আইনজীবীর সঙ্গে অপ্রীতিকর ঘটনার জেরে প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালতের পেশকারসহ সকল স্টাফদের তাৎক্ষণিক প্রত্যাহার করা হয়েছে। এর আগে আদালতে দায়িত্বরত পেশকার (বেঞ্চ সহকারী) সাইফুদ্দিন পারভেজের অসৌজন্যমূলক আচরণের প্রতিবাদে রবিবার (৬ নভেম্বর) সকালে আদালতের এজলাসে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে বিক্ষোভ করে আইনজীবীরা।
আদালতের সংশিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) বিকালে আইনজীবী মনজুর আলম একটি মামলার নথি দেখার জন্য প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালতে গেলে পেশকার পারভেজ তার কাছে টাকা দাবি করে। আইনজীবী মঞ্জুর টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে পেশকার পারভেজসহ আদালতের কর্মচারীরা আইনজীবীর সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে এবং আইনজীবীদের নিয়ে বিভিন্ন কটুক্তিমূলক কথা বলে, এতে আইনজীবী মনজুর প্রতিবাদ করলে উভয় পক্ষ কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে পেশকার-পিয়নরা আইনজীবী মঞ্জুর ওপর হামলা করলে তিনি আহত হয়।
এ ঘটনা জানাজানি হলে সাধারণ আইনজীবীরা ক্ষোভে ফুঁসে ওঠে।
শুক্রবার ও শনিবার আদালত বন্ধ থাকার পর রবিবার সকাল ১০টায় বিক্ষুব্ধ আইনজীবীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে ঘটনার প্রতিবাদে প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালতের সামনে অবস্থান নেন এবং আদালতের এজলাসে তালা ঝুলিয়ে দেন।
খবর পেয়ে ছুটে আসেন জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আবু মোহাম্মদ হাশেম ও সাধারণ সম্পাদক এ এইচ এম জিয়া উদ্দীন, জেলা পাবলিক প্রসিকিউটর শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরীসহ আইনজীবী নেতারা।
উদ্ভূত পরিস্থিতি সম্পর্কে চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আজিজ আহমেদ ভূঞার নজরে আনেন।
চট্টগ্রাম বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ বিষয়টি আমলে নিয়ে তাৎক্ষণিক পেশকার (বেঞ্চ সহকারী) সাইফুদ্দিন পারভেজসহ ওই আদালতে দায়িত্বে থাকা সংশিষ্ট সবাইকে তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাহার করার নির্দেশ দেন।
জানতে চাইলে জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট আবু মোহাম্মদ হাশেম বলেন, প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালতে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ আইনজীবীরা আদালতের এজলাসে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে, পরে সমিতির নেতারা মধ্যস্থতায় চট্টগ্রাম বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ আজিজ আহমেদ ভূঞার তাৎক্ষণিক নির্দেশে বেঞ্চ সহকারীসহ সংশ্লিষ্ট সকল স্টাফের প্রত্যাহার ও বিভাগীয় মামলার ঘোষণায় পরিস্থিতি শান্ত হয়।
জাগ্রত আইনজীবী পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট টি. আর খান বলেন, চট্টগ্রাম আদালতের পেশকার (বেঞ্চ সহকারী) সেরেস্তাদার, উমেদারসহ সংশ্লিষ্ট কর্মচারীদের হাতে আইনজীবীরা প্রতিনিয়ত হয়রানি হচ্ছে, কোন নথি দেখতে গেলে হাজিরা, সময়ের দরখাস্ত দিলে, বেইল বন্ড জমা দিলে, মহামান্য হাইকোর্ট এর বেইল কনফার্ম করতে গেলে আইনজীবীদের কাছ থেকে টাকা দাবি করা হয়।
টাকা না দিলে করা হয় হয়রানি, শুনতে হয় কটুক্তি সহ নানা অপমানজনক কথা, এসব আর চলতে দেয়া যায় না।
—-ইউএনবি
আরও পড়ুন
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে আগ্রহী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার: নাহিদ ইসলাম