ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি মাহবুবুল আলম অবরোধ ও হরতালের রাজনীতি পরিহারের আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, এ ধরনের বিক্ষোভের দিনে অর্থনীতিতে সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকা পর্যন্ত ক্ষতি হয়।
চলতি সপ্তাহে ইউএনবির সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘আমরা সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে সরকারের পরিবর্তন চাই। হরতাল বা অবরোধে প্রতিদিন সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়। তাই আমরা দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা চাই।’
আমরা ধর্মঘট বা অবরোধ চাই না। ধর্মঘট বা অবরোধ অর্থনীতির জন্য খুবই ক্ষতিকর। এ নিয়ে আমরা খুবই উদ্বিগ্ন।
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, এ ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড মহাসড়কে সহিংসতা সৃষ্টি করছে, যা বিদেশি ক্রেতা ও বিনিয়োগকারীদের কাছে ভুল বার্তা দিচ্ছে।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে সরবরাহ প্রক্রিয়া বিঘ্নিত হওয়ায় এবং পরিবহন ভাড়া বৃদ্ধি পাওয়ায় মানুষ বেশি দামে পণ্য কিনছে।
রাজনৈতিক কর্মসূচির কারণে মহাসড়কে যানবাহন চলাচল ব্যাহত হওয়ায় ব্যবসায়ীরা তাদের পূর্বে ক্রয় করা পণ্য সময়মতো পাচ্ছেন না। তিনি বলেন, সরবরাহকারী ও পণ্য উৎপাদনকারীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
হরতাল ও অবরোধের কারণে কাঁচামাল সরবরাহ ব্যাহত হওয়ায়শিল্পখাতে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
তিনি বলেন, আসন্ন রমজানে বাজার স্থিতিশীল রাখতে পর্যাপ্ত ভোগ্যপণ্য আমদানির জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে এলসি খোলার জন্য ডলার সরবরাহের ব্যবস্থা করতে হবে।
তিনি বলেন, ডলার সংকটে ব্যবসায়ীরা এলসি খুলতে অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে বিলাসবহুল ও অপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি বন্ধ এবং রমজান পর্যন্ত শিল্পকারখানার কাঁচামাল ও ভোগ্যপণ্য আমদানিতে অগ্রাধিকার দেয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
তিনি বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির প্রভাবের পর উদ্যোক্তারা রাজনৈতিক সহিংসতার কারণে সৃষ্ট ক্ষতি সহ্য করতে পারছেন না।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোকে অবশ্যই মেনে নিতে হবে যে স্থিতিশীলতা ছাড়া অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অসম্ভব এবং নিম্ন অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দিয়ে জনগণের কল্যাণ আসবে না।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ একটি উদীয়মান অর্থনীতির দেশ এবং বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তারা ব্যাপক প্রচেষ্টায় এখানে বেশ কয়েকটি শিল্পপ্রতিষ্ঠান স্থাপন করেছে।
অভ্যন্তরীণ অঙ্গনে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড বিদেশি ক্রেতাদের নেতিবাচক সংকেত দেবে বলেও উল্লেখ করেন এফবিসিসিআই সভাপতি।
তিনি বলেন, সেক্ষেত্রে রপ্তানি আয় ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, যা শিল্প খাতের টিকে থাকার পাশাপাশি তরুণদের কর্মসংস্থানের জন্য অপরিহার্য।
তাই সরকার ও বিরোধী দলের উচিত রাজনৈতিক ইস্যু নিয়ে আলোচনা করে হরতাল-অবরোধের পরিবর্তে বিকল্প কর্মসূচি নির্ধারণ করার পরামর্শ দেন তিনি।
—-ইউএনবি
আরও পড়ুন
বাংলাদেশে চিংড়ির রফতানি পরিমাণ কমছে ধারাবাহিকভাবে
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি