অনলাইন ডেস্ক :
নেপালের ক্রিকেটের জন্য সত্যিকার অর্থেই যেন সোনালি সময়! অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তনের গল্প রচনা করে বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করার পর এবার এশিয়া শ্রেষ্ঠত্বের মঞ্চেও পা রাখল তারা। হিমালয়কন্যা বলে পরিচিত দেশটি প্রথমবারের মতো জায়গা করে নিল এশিয়া কাপে। ১০ দলের এসিসি মেন’স প্রিমিয়ার কাপে চ্যাম্পিয়ন হয়ে এশিয়া কাপের লড়াইয়ে পৌঁছে গেল নেপাল।
তিনবার এশিয়া কাপে খেলা সংযুক্ত আরব আমিরাতকে মঙ্গলবার ফাইনালে ৭ উইকেটে হারাল এশিয়ান ক্রিকেটের উঠতি শক্তি এই দেশ। নেপালের কির্তিপুরে ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট মাঠে বৃষ্টির কারণে ফাইনাল ম্যাচটি শেষ হয় দুই দিনে। সোমবার প্রথম দিনেই কাজ এগিয়ে রাখে নেপাল। বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হওয়ার আগে ১০৬ রানে ৯ উইকেট নিয়ে নেয় তারা। মঙ্গলবার আমিরাতকে ১১৭ রানে গুটিয়ে দিয়ে রান তাড়ায় তারা জিতে যায় ৩০.৩ ওভারে।
ক্রিকেটপ্রেমী জনতার উন্মাদনায় আগেই বিশ্ব ক্রিকেটে বেশ নজর কেড়েছে নেপাল। এই টুর্নামেন্টে এবং এই ফাইনালেও দেখা গেছে সেটির প্রমাণ। প্রথম দিন বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হওয়ার পরও হাজার হাজার দর্শক ছাতা মাথায় মাঠে অপেক্ষায় থাকে খেলা শুরু হওয়ার। সেদিন আর খেলা হতে পারেনি। মঙ্গলবারও গ্যালারি ছিল ঠাসা। সেই দর্শকদের উল্লাসে ভাসিয়ে শিরোপা জিতে নেয় স্বাগতিক দল। এশিয়া কাপে ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে ‘এ’ গ্রুপে খেলবে নেপাল। ‘বি’ গ্রুপে আছে আফগানিস্তান, বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা। টস জিতে সোমবার বোলিংয়ে নামা নেপালের সেরা বোলার ছিলেন লালিত রাজবানসি।
১৪ রানে ৪ উইকেট নেন বাঁহাতি এই স্পিনার। ২৬ রানে ২ উইকেট নেন অভিজ্ঞ পেসার কারান খাত্রি ছেত্রি, তারকা লেগ স্পিনার সন্দিপ লামিছানে ৩৪ রানে নেন ২ উইকেট। আমিরাতের হয়ে সর্বোচ্চ ৪৬ রান করেন আসিফ খান। আর কোনো ব্যাটসম্যান ১৫ রানও করতে পারেননি। রান তাড়ায় নেপাল ২২ রানের মধ্যে হারিয়ে বসে ৩ উইকেট। বড় ভরসা কুশল ভুর্তেলের সঙ্গে বিদায় নেন আরেক ওপেনার আসিফ শেখ ও অধিনায়ক রোহিত পাউড়েল। তবে এরপর আর কোনো বিপদ হতে দেননি গুলশান ঝা ও ভিম শার্কি। দুজনের ৯৬ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে ১১৭ বল বাকি রেখে জিতে যায় নেপাল।
৬ ছক্কায় ৬৭ রানে অপরাজিত থাকেন গুলশান, ৩৬ রান নিয়ে মাঠ ছাড়েন শার্কি। এবারের এশিয়া কাপ হবে ওয়ানডে সংস্করণে। নেপাল এখনও পর্যন্ত ৫১টি ওয়ানডে খেলেছে। তবে এশিয়া কাপে যেমন তারা আগে খেলতে পারেনি, তেমনি আইসিসির পূর্ণ সদস্য কোনো দেশের বিপক্ষেও এখনও পর্যন্ত ওয়ানডে খেলার অভিজ্ঞতা তাদের নেই। অথচ কিছুদিন আগেই বেশ ধুঁকছিল এই দলটি। গত ফেব্রুয়ারিতে যখন কোচের দায়িত্ব নেন মন্টি দেশাই, আইসিসি ওয়ার্ল্ড সুপার লিগ ডিভিশন ২-এ তারা পয়েন্ট তালিকায় ছিল তলানি থেকে দুই নম্বরে। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে তখন তাদের সম্ভাব্য ১২ ম্যাচের ১১টিই জিততে হতো। রূপকথার মতো পথচলায় সেই চ্যালেঞ্জ জয় করেই বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে জায়গা করে নেয় তারা। সেই সাফল্যের রেশ থাকতে থাকতেই এবার ধরা দিল এসিসি প্রিমিয়ার কাপের অপরাজিত শিরোপা।
আরও পড়ুন
কানপুর টেস্টে মুমিনুলের সেঞ্চুরি, বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৩৩ রান
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার বিয়য়ে যা বললেন তামিম
অক্টোবরে বাংলাদেশে সফরে আসছে দক্ষিণ আফ্রিকা