November 25, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Sunday, October 30th, 2022, 9:36 pm

অবৈধ কুরিয়ার সার্ভিস কোম্পানির বিরুদ্ধে কঠোর হচ্ছে ডাক বিভাগ

ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

দেশে কার্যক্রম চালানো অবৈধ কুরিয়ার সার্ভিস কোম্পানির বিরুদ্ধে কঠোর হচ্ছে ডাক বিভাগ। সরকারের লাইসেন্সিং অথরিটির হিসাবে বর্তমানে দেশে দেশি এবং বিদেশি মোট ২১৩টি কুরিয়ার সার্ভিস রয়েছে। তার মধ্যে ৯৫টি দেশি এবং ৮৮টি বিদেশি প্রতিষ্ঠান। বাকি ৩০টি প্রতিষ্ঠানকে অন বোর্ড কুরিয়ার সার্ভিস বলা হয়। যারা স্থলবন্দরগুলোতে কাজ করে। কিন্তু তার বাইরে দেশি-বিদেশী এমন কিছু কোম্পানিও কার্যক্রম চালাচ্ছে যাদের নিবন্ধন নেই এবং তাদের ওপর কোনো নিয়ন্ত্রণও নেই। অথচ বাংলাদেশে কুরিয়ার সার্ভিসের ব্যবসা করতে হলে মেইলিং অপারেটর ও কুরিয়ার সার্ভিস প্রতিষ্ঠান লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ থেকে অনুমোদন নেয়া বাধ্যতামূলক। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ডাক বিভাগ অবৈধ প্রতিষ্ঠানগুলোকে খুঁজে বের করার উদ্যোগ নিয়েছে। বাংলাদেশ ডাক বিভাগ সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, অত্যাবশ্যকীয় সেবা কুরিয়ার সার্ভিস খাতে পণ্য আনা-নেয়ার ক্ষেত্রে নানা অরাজকতা চলছে। অথচ কুরিয়ার সার্ভিস কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য সরকারের একটি লাইসেন্সিং অথরিটি রয়েছে। কিন্তু অসাধু কোম্পানিগুলো লাইসেন্সিং অথরিটিকে পাশ কাটিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করছে। ওসব কোম্পানি জরুরি ডকুমেন্টসহ নানা ধরনের অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের সঙ্গে নিষিদ্ধ জিনিস যেমন মাদক ও অন্যান্য পণ্যও পরিবহন করছে। কোনো নিয়ন্ত্রণ না থাকায় ওসব প্রতিষ্ঠান দিন দিন তাদের কাজের পরিধি বাড়িয়ে চলেছে। ডাক বিভাগ এখন অবৈধভাবে ব্যবসা পরিচালনাকারী কুরিয়ার সার্ভিস কোম্পানিগুলো খুঁজে বের করার দায়িত্ব নিয়েছে। ইতোমধ্যে তালিকা প্রণয়নের কাজও শুরু করেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে,
সূত্র জানায়, সেবা খাতে বিনিয়োগের জন্য অন্যান্য উপখাতের সুনির্দিষ্ট নীতিমালা থাকলেও কুরিয়ার সার্ভিসের ক্ষেত্রে তা নেই। বিশেষ করে কুরিয়ার সার্ভিসে বিদেশি এবং দেশি বিনিয়োগের অনুপাত কত হবে তা এখনো ঠিক করা হয়নি। ফ্রেইট ফরোয়ার্ডিং, শিপিং এজেন্সি, বিদেশি এয়ারলাইনস এজেন্সি এবং কাস্টমস এজেন্ট ব্যবসার ক্ষেত্রে কিছু বিধিমালা ইতোমধ্যেই সরকার করেছে। কাস্টমস এজেন্ট লাইসেন্সিং বিধিমালা-২০২০ অনুযায়ী শিপিং ও কাস্টমস এজেন্ট ব্যবসার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৪০ শতাংশ বিদেশি বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ বিদেশি এয়ারলাইনসগুলোতে শতভাগ দেশীয় মালিকানাধীন জেনারেল সেলস এজেন্ট (জিএসএ) নিয়োগ দেয়া বাধ্যতামূলক করেছে। ফ্রেইট ফরোয়ার্ডিং এজেন্টস (লাইসেন্সিং ও কার্য পরিচালনা) বিধিমালা-২০০৮ অনুযায়ী ফ্রেইট ফরোয়ার্ডিং ব্যবসার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৪০ শতাংশ বিদেশি মালিকানার বিধান রেখে দেশীয় মালিকানাকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। কিন্তু কুরিয়ার সার্ভিস ব্যবসাটি একটি সেবা খাত হলেও বিদেশি বিনিয়োগের কোন সীমা-পরিসীমা না থাকায় খাতটি অনিয়ন্ত্রিতভাবে বেড়ে উঠেছে। ফলে বিশ্বখ্যাত কোম্পানি উবার, পাঠাও এবং লালামোভ-এর মতো বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো অনুমোদন না নিয়েই এদেশে কুরিয়ার ব্যবসা পরিচালনা করছে।
সূত্র আরো জানায়, কুরিয়ার সার্ভিস সেবা খাত হওয়ায় সেখানে বিদেশি বিনিয়োগ একেবারে নামমাত্র। ওই খাতে বিদেশিরা নামমাত্র বিনিয়োগে বড় অঙ্কের বৈদেশিক মুদ্রা দেশের বাইরে নিয়ে যাচ্ছে। বিপরীতে দেশীয় উদ্যোক্তারা কুরিয়ার খাতে বড় বিনিয়োগ করেও প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারছে না। দেশীয় উদ্যোক্তাদের মতে, বাংলাদেশের অবকাঠামোগত বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্পে বিদেশি বিনিয়োগের প্রয়োজন হলেও সেবা খাতগুলোতে বিদেশি বিনিয়োগের প্রয়োজন নেই।
এদিকে এ প্রসঙ্গে মেইলিং অপারেটর ও কুরিয়ার সার্ভিস প্রতিষ্ঠান লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ড. মো. মহিউদ্দিন জানান, ডাক বিভাগ অবৈধ কুরিয়ার সার্ভিস প্রতিষ্ঠানের তালিকা তৈরি করছে। ইতোমধ্যে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয়া হয়েছে। অবৈধ কুরিয়ার সার্ভিসের সেবাগ্রহণ যাতে না করে তা সারা দেশের মানুষকে মোবাইল এসএমএসের মাধ্যমে জানানো হয়েছে। মেইলিং আপারেটর ও কুরিয়ার সার্ভিস উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ আইন-২০২২-এর খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে। আইনটির বিষয়ে মতামত দিতে ওয়েবসাইটে এবং গণমাধ্যমে দেয়া হয়েছে। আইন প্রণয়ন হলে ওই আলোকে বিধিমালা প্রণয়ন করা হবে। সেখানে বিদেশি বিনিয়োগসহ অন্যান্য বিষয়াদি উল্লেখ থাকবে। তবে আইন ও বিধিমালা প্রণয়নে সময় লাগবে।