April 23, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Friday, March 31st, 2023, 9:38 pm

অর্ধেকেরও বেশি আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল ব্যবহার করে না

ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

অর্ধেকেরও বেশি আন্তঃজেলা বাস রাজধানীতে টার্মিনাল ব্যবহার করে না। ফলে ঢাকার যানজট ও পরিবহন খাতে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হচ্ছে। ঢাকায় আন্তঃজেলা বাস থেকে প্রতিদিন প্রায় ১৬ হাজার ট্রিপ তৈরি হয়। তার মধ্যে ৩টি আন্তঃজেলা টার্মিনাল থেকে মাত্র সাড়ে ছয় হাজার ট্রিপ হয় আর বাকি সাড়ে ৯ হাজার ট্রিপ রাজধানীর ভেতরে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা কাউন্টারগুলো থেকে হয়। এমন পরিস্থিতিতে ঢাকা শহর কর্তৃপক্ষ আন্তঃজেলা বাস কাউন্টারগুলো শহরের বাইরে সরিয়ে নিতে চাইলেও বাস মালিকরা এখনই ঢাকা ছাড়তে রাজি নয়। পরিবহণ খাত সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, রাজধানীর সবচেয়ে বড় আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল গাবতলী। ২২ একর জায়গার ওপর গড়ে ওঠা ওই বাস টার্মিনালে একসঙ্গে ৪০০ বাস রাখা যায় এবং প্রতিদিন ৪০ হাজার যাত্রী বিভিন্ন গন্তব্যে যাতায়াত করে। সেখানে বিভিন্ন পরিবহন কোম্পানির টিকিট কাউন্টার রয়েছে ২৪০টি। তারপরই রাজধানীতে বৃহৎ আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল সায়েদাবাদ। ১০ একর জায়গার ওপর নির্মিত ওই টার্মিনালের বাস ধারণক্ষমতা ২০০টি এবং প্রতিদিন প্রায় ৪০ হাজার যাত্রী ওই টার্মিনাল ব্যবহার করে। তাতে মোট ১০৮টি টিকিট কাউন্টার রয়েছে। আর ৯ একর জায়গার ওপর গড়ে ওঠা মহাখালী আন্তঃজেলা টার্মিনালের ২০০ বাসের ধারণক্ষমতা রয়েছে এবং প্রতিদিন গড়ে ২৫ হাজার যাত্রী ওই টার্মিনাল ব্যবহার করে। আর ওই টার্মিনালে ৪০টি বাস কাউন্টার রয়েছে। সূত্র জানায়, রাজধানী শহর থেকে আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালগুলো সরিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা অনুযায়ী কেরানীগঞ্জের বাঘাইর, নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর, তুরাগের ভাটুলিয়া, রূপগঞ্জের ভুলতা ও সাভারের হেমায়েতপুরে নতুন বাস টার্মিনাল তৈরি করা হবে। বর্তমানে ঢাকার রাজারবাগ, আরামবাগ, ফকিরাপুল, গোলাপবাগ, বাড্ডা, মালিবাগ, চট্টগ্রাম রোড, কুড়িল বিশ্ব রোড, পান্থপথ, কলাবাগান, আসাদগেট, শ্যামলী, কল্যাণপুর, টেকনিক্যাল, মিরপুর-১ নম্বর এলাকা রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে আন্তঃজেলা বাস চলাচল করে। সেজন্য শহরের ভেতরে যানজট ও সড়কে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হচ্ছে। অথচ পৃথিবীর উন্নত শহরগুলোর কোথাও আন্তঃজেলা বাস শহরের ভেতরে প্রবেশ করে না। শহরের বাইরে থাকে ওসব বাসের টার্মিনাল। কিন্তু ঢাকার চিত্রটি উল্টো। এখানে শহরের ভেতরেই ৩টি আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল। আবার আন্তঃজেলা বাসের একটা বড় অংশই টার্মিনালের বাইরে বিভিন্ন সড়কের ধার থেকে পরিচালিত হয়। যা নগরীতে যানজট ও পরিবহন খাতে বিশৃঙ্খলা বাড়াচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে সরকার শহরের ভেতরে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা কাউন্টারগুলো পর্যায়ক্রমে রাজধানীর উপকণ্ঠে নির্মাণাধীন ও পরিকল্পনাধীন বাস টার্মিনালগুলোতে সরিয়ে নিতে চাইছে। এ নিয়ে সম্প্রতি পরিবহন মালিকদের সঙ্গে ঢাকার দুই মেয়র একটি সমন্বয় সভা হয়েছে। সূত্র আরো জানায়, ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনই শহরের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা আন্তঃজেলা বাস কাউন্টারগুলো সরাতে বদ্ধপরিকর। সেজন্য শহরের বাইরে কাঁচপুরে একটি আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল তৈরি করা হচ্ছে। একই সাথে সায়েদাবাদ টার্মিনালের আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। শিগগিরই কুমিল্লা ও সিলেট অঞ্চলের বাস কাউন্টারগুলো শহর থেকে সরিয়ে দেয়া হবে। আর আগামী বছরের জানুয়ারির মধ্যে চট্টগ্রাম অঞ্চলের কাউন্টারগুলোও সরিয়ে দেয়া হবে। এভাবে পর্যায়ক্রমে ঢাকার সব কাউন্টারই সরিয়ে নেয়া হবে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েতুল্লাহ জানান, শহরের ভেতরে থাকা কাউন্টারগুলো সরিয়ে নিতে সমিতির কোনো আপত্তি নেই। তবে কাউন্টার সরিয়ে নেয়ার আগে টার্মিনালগুলো প্রস্তুত করা জরুরি। অবকাঠামোগুলো তৈরি হলেই বাসগুলো সেখানে যাবে।