এবার ‘ভুল চিকিৎসা’য় মাহবুবা রহমান আঁখি ও তার নবজাতকের মৃত্যুর জন্য সেন্ট্রাল হাসপাতালকে দায়ী করেছেন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সংযুক্তা সাহা।
আঁখি তার রোগী নয় দাবি করে তিনি বলেন, ‘সেন্ট্রাল হাসপাতাল আমাকে নিয়ে মিথ্যা বিবৃতি দিয়েছে।’
মঙ্গলবার সংযুক্তা সাহা তার বাড়িতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি বলেন, ‘আঁখির ভর্তির সময় তারা আমার কাছ থেকে মৌখিক বা লিখিত সম্মতি নেয়নি।’
তিনি প্রশ্ন করেন যে ‘তার অপারেশনের সময় আমি বাংলাদেশে ছিলাম না… আমি সেখানে না থাকলে আমি কীভাবে দায়ী থাকব?’
আঁখির অপারেশনের সময় তার উপস্থিতি নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মিথ্যা বক্তব্য দিয়েছিল বলে জানিয়েছেন এই চিকিৎসক।
ডা. সাহা বলেন, ঘটনার আগ পর্যন্ত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাকে নিয়ে গর্বিত ছিল। ‘তারা এখন তাদের অবহেলা আড়াল করার জন্য আমার সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছে।’
তিনি আরও নিশ্চিত করেছেন যে মাহবুবা রহমান আঁখি তার নিয়মিত রোগী নন।
আঁখি ও তার শিশুর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে ডা. সাহা তাদের আত্মার চির শান্তি কামনা করেন।
এর আগে, গত ১০ জুন আঁখির স্বামী ইয়াকুব আলী সুমন বাদী হয়ে ছয়জন চিহ্নিত ব্যক্তি এবং আরও বেশ কয়েকজন অজ্ঞাত ব্যক্তির বিরুদ্ধে সেন্ট্রাল হাসপাতালে ‘ভুল চিকিৎসার’ অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেন, যার ফলে তাদের নবজাতকের মৃত্যু হয়েছিল।
মামলার বিবৃতিতে বলা হয়, আঁখি গত তিন মাস ধরে সেন্ট্রাল হাসপাতালের ডা. সংযুক্তা সাহার তত্ত্বাবধানে ছিলেন এবং তার অবস্থা স্বাভাবিক বলে জানা গেছে।
স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সাহা আঁখির পরিবারকে আশ্বস্ত করেছিলেন যে তিনি নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে সন্তান প্রসব করবেন।
গত ১০ জুন রাত ১২টা ৫০ মিনিটের দিকে ওই স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে প্রসব ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন আঁখি।
হাসপাতালে ভর্তির সময় ডা. সাহা উপস্থিত না থাকলেও তার সহকারী জানান, তিনি অপারেশন থিয়েটারে কাজ করছিলেন।
পরে গ্রেপ্তার হওয়া দুই চিকিৎসক ডা. শাহজাদী ও ডা. মুন্না হাসপাতালে ডেলিভারি পরিচালনা করেছিলেন, যা নবজাতকের মৃত্যুর কারণ বলে অভিযোগে বলা হয়।
এদিকে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ১৬ জুন সেন্ট্রাল হাসপাতালকে নিবিড় পরিচর্যা ইউনিট (আইসিইউ) এবং জরুরি বিভাগে অসন্তোষজনক পরিষেবার কারণে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তার অপারেশন থিয়েটারে কার্যক্রম স্থগিত করার নির্দেশ দিয়েছে।
এছাড়া হাসপাতালের স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সংযুক্তা সাহাকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে লিখিত অনুমোদন না দেওয়া পর্যন্ত হাসাপাতালটিতে কোনও বিশেষজ্ঞ পরিষেবা না দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
নবজাতকের মৃত্যুর পর গত ১৮ জুন ঢাকার ধানমন্ডির ল্যাবএইড হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন আঁখি।
—ইউএনবি
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি