বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী বলেছেন, পলাতক বাংলাদেশি ব্যবসায়ী পিকে হালদারকে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রত্যার্পণের আগে আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।
অর্থ পাচার এবং একাধিক আর্থিক অপরাধের জন্য বাংলাদেশে ওয়ান্টেড হালদারকে রবিবার ভারতের ফেডারেল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) পশ্চিমবঙ্গ থেকে গ্রেপ্তার করেছে।
মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে দোরাইস্বামী বলেন, এটি একটি প্রক্রিয়া এবং এটি ক্রিসমাস কার্ড বিনিময় করার মতো নয়।
তিনি বলেন, ‘এগুলো আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে করা হয়। এটা ধীরে ধীরে হবে।’
তিনি বলেন, তারা (ভারত) বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে কাজ করছে।
তিনি বলেন, তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে এক সময় তাদের (ভারতের) পক্ষ থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হবে।
এর আগে হাইকমিশনার পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং দ্বিপক্ষীয় ও বহুপাক্ষিক ক্ষেত্রে সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করেন।
তার বৈঠকে পররাষ্ট্র সচিব বিষয়টি উত্থাপন করে এবং পিকে হালদারকে দেশে ফেরত পাঠানোর জন্য ভারতের সমর্থন চান।
তিনি বলেন, হাইকমিশনার এ বিষয়ে তাদের সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।
সোমবার, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনও বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গে গ্রেপ্তার হওয়া পলাতক পিকে হালদারের বিষয়ে ‘নির্ধারিত প্রক্রিয়া’ অনুযায়ী সরকার প্রয়োজনীয় সবকিছু করবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা করণীয় নির্ধারণ করেছি। আমরা সে অনুযায়ী কাজ করব। আমরা যা যা প্রয়োজন তা করব’।
তিনি আরও জানান, তার মন্ত্রণালয় এখনও হালদারের গ্রেপ্তারের বিষয়ে ভারত সরকারের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও তথ্য পায়নি।
মোমেন বলেন, ভারত প্রথমে তাদের (বাংলাদেশ) জানাবে যে সে ভারতে গ্রেপ্তার হয়েছে এবং সেখানে তার শাস্তি হতে পারে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, উলফার শীর্ষ নেতা অনুপ চেটিয়াকে বাংলাদেশে বিচার ও শাস্তির পর ভারতের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ‘একই পদ্ধতি অনুসরণ করার সম্ভাবনা আছে। কিন্তু আমি জানি না। সম্ভবত আইন মন্ত্রণালয়ই ভালো জানে।’
২০০৫ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশ চেটিয়াকে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তারের ১৮ বছর পর ভারতের কাছে হস্তান্তর করে।
চেটিয়া ভারতের অন্যতম শীর্ষ বিদ্রোহী গোষ্ঠী ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসাম (উলফা) এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। ১৯৯৭ সালের ২১ ডিসেম্বর রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে তিনি কারাগারে ছিলেন এবং তার কারাবাসের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তিনি মুক্তি পান।
মোমেন বলেন, ‘আমাদের ভাল উদ্দেশ্য (পিকে হালদারকে ফিরিয়ে আনার)’। তাই ভারত অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে বাংলাদেশের অনুরোধ শুনবে বলে আশা করা যায়।
অর্থ পাচারের অভিযোগে ২০১৯ সাল থেকে পিকে হালদার পলাতক ছিলেন। শুক্রবার ভারতীয় এনফোর্সমেন্ট অধিদপ্তর পশ্চিমবঙ্গ থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।
—ইউএনবি
আরও পড়ুন
এলডিসি গ্রাজুয়েশনে বাংলাদেশের সুষ্ঠু উত্তরণে পূর্ণ সহায়তার আশ্বাস জাতিসংঘের
জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা নিয়ে ইউনূস-আইসিসির আলোচনা
দেশ সংস্কারে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই ও পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনতে সহায়তা দেবে যুক্তরাষ্ট্র