November 18, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Thursday, November 9th, 2023, 7:44 pm

আগামী নির্বাচনের পর স্থিতিশীলতা ও বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে: আশা চীনা রাষ্ট্রদূতের

বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন অন্যান্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার দৃষ্টিভঙ্গি পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের জনগণই নির্ধারণ করবেন।

তিনি যৌথ প্রচেষ্টার মাধ্যমে রাজনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমাদের নীতি খুবই পরিষ্কার। আমরা হস্তক্ষেপ করি না। আমরা আশা করি, আগামী নির্বাচনের পর স্থিতিশীলতা আসবে এবং আমাদের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।’

তিনি আশা প্রকাশ করেন, ‘সংবিধান ও আইনের’ ভিত্তিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ডিকাব) আয়োজিত ‘বিআরআই@১০: আশরিং ইন নেক্সট গোল্ডেন ডিকেড’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সিইএবির প্রেসিডেন্ট কে চ্যাংলিয়াং। ডিকাব সভাপতি রেজাউল করিম লোটাস ও সাধারণ সম্পাদক ইমরুল কায়েস অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।

রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমরা স্থিতিশীলতা চাই। আমরা আশা করি, চীনের জনগণ ও সম্পত্তি সুরক্ষিত থাকবে। এখন পর্যন্ত আমরা নিরাপদ বোধ করছি। যে প্রচেষ্টা নেওয়া হয়েছে তার জন্য ধন্যবাদ।’

তিনি বলেন, ‘এটি বাংলাদেশের প্রাক-নির্বাচনের বছর। গণমাধ্যমের অনেক বন্ধু আমাকে জিজ্ঞেস করতে আসেন বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে চীনের পর্যবেক্ষণ কী। আমি জোর দিয়ে বলতে চাই, আসন্ন নির্বাচন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়।’

তিনি বলেন, পররাষ্ট্রনীতির বিষয় হিসেবে চীন অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার নীতি মেনে চলে এবং অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপকারী যে কোনো শক্তির বিরোধিতা করে।

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে বাংলাদেশের জনগণ। চীন বাংলাদেশের উন্নত ভবিষ্যতের পাশাপাশি চীন-বাংলাদেশ সম্পর্কের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী।’

ইয়াও ওয়েন বলেন, ‘বাংলাদেশের বন্ধু হিসেবে এবং বাংলাদেশে বৃহৎ বিনিয়োগ, উদ্যোগ ও কর্মীদের সঙ্গে একটি দেশ হিসেবে চীন আন্তরিকভাবে আশা করে- বাংলাদেশের সকল অংশীজন জনগণের মৌলিক স্বার্থকে পূর্ণ বিবেচনায় নেবেন, তাদের মতপার্থক্যের যথাযথ সমাধান করবেন এবং যৌথভাবে রাজনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখবেন।’

আগামী দুই বছর সময়ে চীন ও বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকী উদযাপন করবে।

রাষ্ট্রদূত বলেন, শান্তি, স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকতে, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে এবং বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতার নতুন যুগের সূচনা করতে চীন সর্বস্তরের বাংলাদেশি বন্ধুদের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তারা দুই দেশের মধ্যে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করছেন।

রাষ্ট্রদূত বলেন, তারা দুই দেশের মধ্যে আরও বাণিজ্য ও বিনিয়োগ চান।

তিনি পণ্য বহুমুখীকরণ এবং আগামী কয়েক বছরের মধ্যে আরও সুষম বাণিজ্যের মাধ্যমে বাংলাদেশের রপ্তানি বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

রাজনৈতিক সংলাপের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই উত্তর রাজনৈতিক নেতাদের কাছ থেকে আসা উচিৎ। তবে তারা দেশে রাজনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতা দেখতে চান।

রাষ্ট্রদূত ইয়াও বলেন, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন একটি অত্যন্ত জটিল প্রক্রিয়া, যার জন্য আন্তর্জাতিক সমর্থন প্রয়োজন।

তিনি বলেন, রোহিঙ্গারা অত্যন্ত দরিদ্র অবস্থায় রয়েছে এবং প্রত্যাবাসন লক্ষ্য অর্জনে সকল অংশীজনকে এগিয়ে আসতে হবে।

স্বাগত বক্তব্যে ডিকাব সভাপতি লোটাস বলেন, ১৯৫০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে তরুণ রাজনীতিবিদ হিসেবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক চীন সফর তাদের মনে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।

তিনি বলেন, ‘আর আজ বাংলাদেশ ও চীন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বন্ধু হিসেবে আরও ঘনিষ্ঠ হচ্ছে।’

—-ইউএনবি